অনুবাদ কবিতা: ধূমিল’র তিনটি কবিতা

Reading Time: 3 minutes

 কবি পরিচিতি

Dhoomil
ধূমিল। আধুনিক হিন্দি কবিতার জগতে উজ্জ্বল একটি নাম। মানুষের দৈন্যদীর্ণ জীবন, জীবনের সংঘর্ষ-প্রতিরোধ ধূমিলের কবিতার বিষয় হয়ে উঠেছে বারবার। তাঁর কবিতায় ব্যবহৃত শব্দ এবং বক্তব্য সাধারণ মানুষ পরম আত্মীয়তায় গ্রহণ করেছেন। তাই মাত্র উনচল্লিশ বছরের আয়ুষ্কালে রচিত তাঁর কবিতা পাঠকপ্রিয়তার নিরিখে অত্যন্ত সমাদৃত হতে পেরেছিল।

প্রকৃত নাম সুদামা পাণ্ডে। বেনারসের খেওলী গ্রামে ১৯৩৬ সালের ৯ নভেম্বর নিম্নমধ্যবিত্ত এক কৃষক পরিবারে তাঁর জন্ম। মাত্র তেরো বছর বয়সে পিতার মৃত্যুর পর প্রবল দারিদ্র্যে শুরু হয় তাঁর জীবন সংগ্রাম। একটা সময় কোলকাতার এক কারখানায় শ্রমিকের কাজও করতে হয়েছে তাঁকে। ১৯৭২ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সংসদ সে সড়ক তক’ প্রকাশিত হবার সঙ্গে সঙ্গেই হিন্দি কবিতা-পাঠক প্রতিরোধী এক কন্ঠস্বরের সঙ্গে একাত্ম হয়ে ওঠে। তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবদ্দশায় এটিই ছিল একমাত্র প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ। তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছিল আরও দুটি কাব্যগ্রন্থ। ১৯৭৭ সালে ‘কল সুননা মুঝে’ এবং ১৯৮৪ সালে ‘সুদামা পাণ্ডে কা প্রজাতন্ত্র’। ধূমিলের ‘কল সুননা মুঝে’ কাব্যগ্রন্থকে ১৯৭৯ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।

বিশিষ্ট কবি ধূমিল ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৭৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি লখনৌয়ে প্রয়াত হন।

 

মূল হিন্দি থেকে অনুবাদ : স্বপন নাগ


 

রুটি আর সংসদ

একটা লোক রুটি বেলে।

একটা লোক রুটি খায়।

তৃতীয় একটা লোকও আছে
সে রুটি বেলে না, খায়ও না।

রুটি নিয়ে শুধু খেলা করে সে।

আমি জানতে চাই –
‘এই তৃতীয় লোকটা কে ?’

আমার দেশের সংসদ চুপ করে থাকে !

 

 

সর্বজনীন জীবন

হোটেলের তোয়ালের মত
আমি সর্বজনীন হয়ে গেছি।

কী মজা ! খাও আর মোছো !
একটু ভেবে দেখো তো
এ কোনো জীবন যে
সবসময় অন্যের উচ্ছিষ্টে ভিজে থাকবে ?

কাটা হাতের মত ঘুরতে থাকে অর্ধনগ্ন বাচ্চারা
গলি গলি গুলি খেলে বেড়ায়।
অথচ মজার ব্যাপার প্রথমত এই যে
এদের নিয়েই নির্ভর করে দেশের মানচিত্র,
দ্বিতীয়ত, যথার্থ মানুষ হবার আশা না-ই থাক
স্বাধীনতা তো আমাকে শিখিয়েছে –
কোথায় সাঁটতে হবে ইস্তাহার,
আর কোথায় করতে হবে পেচ্ছাপ।

এইভাবেই এই শূন্য হাতে
সময় অসময়ে মতদান করতে করতে,
হেরোদের দিকে চিৎকার করতে করতে,
আর জিতে গেল যারা –
তাদের জয়ধ্বনি করতে করতে
আমাকেও মরতে হবে এক জনতান্ত্রিক মৃত্যু।

ধূমিল-এর অন্তিম কবিতা

শব্দ কীভাবে
কবিতা হয়ে ওঠে
তাকে দেখো,
অক্ষরের মধ্যে পড়ে-থাকা
মানুষকে পড়ো।

কখনো শুনেছো কি
লৌহশব্দ
অথবা মাটিতে লেগে-থাকা
রক্তের রঙ
কামারের কাছে জানতে চেও না
লোহার স্বাদ
জিজ্ঞেস করো বরং ঘোড়াকে
যাদের মুখ বাঁধা আছে লাগামে।

रोटी और संसद / धूमिल

एक आदमी
रोटी बेलता है
एक आदमी रोटी खाता है
एक तीसरा आदमी भी है
जो न रोटी बेलता है, न रोटी खाता है
वह सिर्फ़ रोटी से खेलता है
मैं पूछता हूँ–
‘यह तीसरा आदमी कौन है ?’
मेरे देश की संसद मौन है।

•••

सार्वजनिक ज़िन्दगी / धूमिल

मैं होटल के तौलिया की तरह
सार्वजनिक हो गया हूँ
क्या ख़ूब, खाओ और पोंछो,
ज़रा सोचो,
यह भी क्या ज़िन्दगी है
जो हमेशा दूसरों के जूठ से गीली रहती है।
कटे हुए पंजे की तरह घूमते हैं अधनंगे बच्चे
गलियों में गोलियाँ खेलते हैं
मगर अव्वल यह कि
देश के नक़्शे की लकीरें इन पर निर्भर हैं
और दोयम यह कि
न सही मुझसे सही आदमी होने की उम्मीद
मगर आज़ादी ने मुझे यह तो सिखलाया है
कि इश्तहार कहाँ चिपकाना है
और पेशाब कहाँ करना है
और इसी तरह ख़ाली हाथ
वक़्त-बेवक़्त मतदान करते हुए
हारे हुओं को हींकते हुए
सफलों का सम्मान करते हुए
मुझे एक जनतान्त्रिक मौत मरना है।

•••

धूमिल की अन्तिम कविता / धूमिल

शब्द किस तरह
कविता बनते हैं
इसे देखो
अक्षरों के बीच गिरे हुए
आदमी को पढ़ो
क्या तुमने सुना कि यह
लोहे की आवाज़ है या
मिट्टी में गिरे हुए ख़ून
का रंग।

लोहे का स्वाद
लोहार से मत पूछो
घोड़े से पूछो
जिसके मुंह में लगाम है।