| 26 এপ্রিল 2024
Categories
ঈদ সংখ্যা ২০২১

গুচ্ছকবিতা: এভাবেই মহাজাগতিক । শতানীক রায়

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট

আমি একটি অন্তিম কবিতা। পৃথিবীর বুকে বল হয়ে গড়াতে থাকি। দেখেছি বালির ফুল আর রং-তীব্র জ্যোৎস্না। যত কিছু আর এ-ভুবনের অতীত। ধানক্ষেত থেকে উঠে আসে যে-শরীর তার রং-উহ্য এক মহাজাগতিক। গরিমাবোধও তখন কী যেন। আমি পথ ভুল করে এসেছি। আমি বল। গড়াতে থাকি। সময় অ-সময় নেই। গঙ্গা নেই। ভয়ংকর নেই। যেখানে পা ফেলেছি অক্ষর পুড়েছে যেন পুরাতন জট খুলেছে। বা খুলতে গিয়ে চাঁদ হয়েছে। এই পৃথিবীর ভেতর কোনো বই ঠিক তারই ভেতর পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠায় অথবা শেষ কোনো ত্বকের স্বাভাবিক নিয়ে শুষ্কতা নিয়ে মানুষের জড় অ-জড় নিয়ে কী যে কথা কোথায় ভেসে আসে কার শরীর ছিল এখানে কারই-বা ময়ূর ছিল পুরাতন বালির সেই শরীর তারই ভেতর দৃশ্যের শরীরে শরীর। একই বিশেষণ তুমি তাকে বালি দিয়ে ঢেকে দাও। ঢেকে রাখো। শূন্য হও। এভাবে আমি তোমারই ভেতর দূত হয়ে জন্মাব।

শেষাবধি নদীই হয়ে যাব— এর মধ্যে দিয়ে আমি আমারই শরীর লক্ষ করি। তীর্যক দংশনের ভেতর দিয়ে লক্ষ করি বালি অথবা পদার্থের কী কী লক্ষণগুণ থাকতে পারে… যা কিছু কবিতার ভেতর বহতা জল কীভাবে যেন পরিশুদ্ধ হয়ে নামি… জলঝরনার দিকে তাকিয়ে অনুভব করি পুরাতন সব ফিরে আসে। মানুষের মাথার আওয়াজ। নরম এখন এভাবে কত দীর্ঘ হলে মূল। বাউলবিশেষ। যখন মুহূর্ত শেষেই সব কিছুর বিনাশ ঘটে যায়। অক্ষয়বট। আমি তারই রিন রিন শুনি। মাটি-বালির অন্দর থেকে খুলে বেরিয়ে দেখি ছল-চামড়া জুড়ে ঘাসের জমি কিছুক্ষণের বিশ্রাম ছিল। তারপর এক নাগাড়ে বৃষ্টি… ভুলবশত আমি বীজ হয়ে জন্মেছি। মূলের জন্য তৃষ্ণার ভোগ এত বেশি!
শূন্য সব কথা বলে শূন্যই বালিসম্ভব। বালিবাস্তবও এ-ই। বারোটা জীবন অতিক্রম করে এখানে এসেছি ভ্রম নক্ষত্র পৃথিবীর দিকে দাগ আঁকি এই পৃথিবীর বুকে আমিই বেঁচে থাকি। আমিই আছি একাগ্র বিশ্ব। এরকম দিনও কখনো উত্থাপিত হয়নি। জলের জন্য জল অ-পবিত্র। এক ধাপ এগিয়ে এক ধাপ পিছিয়ে জীবন দেখে নেওয়া। ক্রম অতিক্রম বিনয় আর জল হিসেবে আমিই একদিন সবই অনুভব করেছি আবার এখনও অনুভব করছি। 
আগুনই শেষ বাক্ বহন করে আনে। যেন এত কালী জেগেছে। তুমি আমি আর সব কিছু নিয়ে এত পূর্ণ পবিত্র করে আনে নদীচর। কেউ জেগেছে আজকের রাতে। তুমি মুখ এনে রাখ। সুস্নাত নিয়ে রাখ যেন-বা অক্ষর যোনির এ কেমন সংলাপে আমাকে লুকোতে হয় সন্তাপ। আর যা কিছু দ্বিপ্রহর রজনী পেরিয়ে একই তীব্র শরীর শিথিলে যায় যে-জন আরও এক ঘটি জল আনে। পরিমাপমতো জীবনের দৈর্ঘ্য… সরু… বাষ্পের মতো উবে যেতে শিখি। তুমি এ-সব কীভাবে দেখ— যোগফল হয় সব… ধুলায় সব… আগুনই শেষ বাক্ ও অন্তিম পুরুষ। 

2 thoughts on “গুচ্ছকবিতা: এভাবেই মহাজাগতিক । শতানীক রায়

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত