বাবার জীবনে কঠিন বাঁক ষাটের দশকের শেষে।  ‘অভিনেতৃ সংঘ’-য় ফাটল। উত্তমকাকু, অনিলকাকুদের (চট্টোপাধ্যায়) বেরিয়ে যাওয়া। পাল্টা সমিতি ‘শিল্পী সংসদ’ তৈরি। খুব কষ্ট পেয়েছিল বাবা। বাবার প্রথম হার্ট অ্যাটাকটা তখনই।  তবু মাথা নোয়ায়নি। ফলে ব্ল্যাক লিস্টেড। যে জন্য বহু দিন কাজ পেত না। এ দিকে সংসার চালাতে হবে যে! তখন যাত্রা একমাত্র সম্বল। কোথায় না কোথায় গেছে তখন যাত্রার জন্য! যে লোকটা নরম বিছানা ছা়ড়া ঘুমোতে পারত না, সে কিনা মাটিতে চাটাই পেতে রাত কাটিয়েছে। ভাঙা বাড়িতে রাতে আশ্রয় নিয়েছে। বুকের ওপর পাখা ভেঙে পড়েছে। তবু শক্ত চোয়াল আলগা হতে দেয়নি। ’৭৯ থেকে বাবার শরীরটা খুব ভাঙছিল। বড্ড রোগা হয়ে যাচ্ছিল। সেই অবস্থাতেই ‘অমৃতকুম্ভের সন্ধানে’ করল।

’৮৩-র ফেব্রুয়ারি। এত অসুস্থ হল যে, সিএমআরআই-এ ভর্তি করতে হল। সে বার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরল। মার্চের ৪। আবার অসুস্থ। বুকে অসহ্য ব্যথা। এ বারও ভর্তি না করে উপায় নেই। তবে বাইরে থেকে দেখে বোঝে কার সাধ্যি! সোজা হেঁটে হেঁটে গাড়িতে উঠল।

উডল্যান্ডস। রাতও পেরোল না। চলে গেল বাবা। একটা মাত্র দিনও কেউই কিছু করার সুযোগটুকুও পেল না!

 

অনুলিখন: দেবশঙ্কর মুখোপাধ্যায়