| 27 এপ্রিল 2024
Categories
ইতিহাস

ফিদেল কাস্ত্রোর প্রেমিকা মার্কিন সাংবাদিক

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট

বিপ্লবে জয়ী হয়ে ষাটের দশকের গোড়ার দিকে কিউবা শাসন করছেন ফিদেল কাস্ত্রো। তখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কিউবার রাজধানী হাভানায় আসেন এক সুন্দরী মার্কিন সাংবাদিক। হাভানার হোটেল রিভিয়েরার এক সুইটে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছিলেন লিজা হাওয়ার্ড নামের ওই সাংবাদিক।

রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ মেকআপ মুছে পোশাক পাল্টে শুতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, হোটেলের ঘরের দরজায় টোকা। লিজা দেখলেন, যার সাক্ষাৎকার নিতে সুদূর আমেরিকা থেকে তিনি হাভানা এসেছেন, সেই ভদ্রলোক তার সামনে। ৩৭ বছরের ফিদেল কাস্ত্রো।

এ সময় ফিদেলকে লিজা সটান বলে বসেছিলেন, ‘আপনি দেশের শাসক হতে পারেন, আমিও গুরুত্বপূর্ণ সাংবাদিক। আপনার সাহস হয় কী করে আমায় এত ক্ষণ অপেক্ষা করানোর?’

দুজনের আলাপ পর্বের শুরুটা এমনই ছিল। সে রাতে কয়েক ঘণ্টা ধরে কথা হয়েছিল ফিদেল আর লিজার। মার্ক্সবাদ থেকে শুরু করে  কিউবায় রাজনৈতিক বন্দিদের অবস্থা, সব নিয়েই। আমেরিকা যতই শত্রু হোক, সুন্দরী ছিপছিপে মার্কিন সাংবাদিকের প্রেমে পড়তে কিন্তু বেশি সময় লাগেনি ফিদেলের। আরও কয়েক বার কিউবা গিয়েছিলেন লিজা। স্বীকার করেছিলেন, তিনিও বিপ্লবী নেতার প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছেন। এক বিছানায় কাটিয়েছেন অনেক রাতও।

জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংগ্রহশালা থেকে সম্প্রতি লিজার হাতে লেখা কিছু ডায়েরি ও নোট প্রকাশিত হয়েছে। সেখান থেকেই সামনে এসেছে ফিদেলের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা। তবে এই দুজনের রসায়ন নিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যমে আগেও কম চর্চা হয়নি।

ক্যারিয়ারের শুরুতে টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করতেন লিজা। পরে সংবাদ জগতে আসেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দুই প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ও লিন্ডন বি. জনসন সরকারের বার্তা ফিদেলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল লিজার ওপর। আবার ফিদেলের বার্তাও হোয়াইট হাউসের কান পর্যন্ত পৌঁছে দিতেন তিনি। আর এটি করা হতো পুরোটাই গোপনে।

লিজা তার ডায়েরিতে লিখেছেন, ‘শরীরী খেলায় উনি খুবই পটু ছিলেন। সেগুলো আমার জীবনের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর মূহূর্ত।’ কখনও বা লিখেছেন, ‘উনি আমায় গভীরভাবে জড়িয়ে ধরেছিলেন একদিন। কিন্তু একটা অদ্ভুত বিষণ্ণতা আমায় প্রায়ই গ্রাস করত। নেতা কাস্ত্রো আর মানুষ কাস্ত্রো সম্পূর্ণ আলাদা বলে মনে হতো আমার।’

লিজার কথায়, ”আমার কাছে উনিই ছিলেন জর্জ বার্নার্ড শ-এর ‘স্পার্ক অব ডিভাইন ফায়ার’। গোটা দুনিয়া যে একনায়কের রূপ ওকে দিয়েছিল, উনি মোটেও তেমন ছিলেন না।’ হাভানার হোটেলেই লিজার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন ফিদেল। একবার লিজাকে নিজের কোলে বসিয়ে বলেছিলেন, ‘তুমি আমার জন্য খুব বিপজ্জনক। তোমার মতো একটা মেয়েকে আমি খুব গভীরভাবে ভালোবাসতে পারি।’

শেষ পর্যন্ত কিউবা সরকারের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন লেখার অভিযোগে চাকরি যায় লিজার। বেশি দিন বাঁচেননি তিনি। ১৯৬৫-তে অতিরিক্ত মাদক সেবনে মৃত্যু হয় তার।

সূত্র: আনন্দবাজার

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত