| 26 এপ্রিল 2024
Categories
এই দিনে কবিতা সাহিত্য

কবিতা ভাবনা ও কবিতা

আনুমানিক পঠনকাল: 8 মিনিট

আজ ০৩ মে কবি হিজল জোবায়ের শুভ জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।


 

 
 
 
 
কবিতা ভাবনাঃ
 
সমস্ত শিল্পমাধ্যম চূড়ান্ত উৎকর্ষতার ভেতর দিয়ে শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠতে চায় কবিতা। আর কবিতাই তা, যা হয়ে উঠতে চায় সুর। সুরই পরিণতি;– যার কাছে পৌঁছাতে হলে কবিতার কাছে এসে দাঁড়াতে হয়। সুর সম্পৃক্ত নীরবতায়। সবকিছুর পূর্ণরূপ ঐ নীরবতার ভেতর জায়গা খুঁজে নেয়। নীরবতা বয়ে আনে অনুধাবন, অনুধাবনকে জারিত করে স্মৃতি। জ্ঞান কিংবা অভিজ্ঞতা যাকে বলি। কল্পনাও অনায়াসে এই স্মৃতি-পুঞ্জীভূত। স্মৃতিই আমার কাছে তাৎপর্যবাহী, যেখানে প্রত্যাঘাতের ভেতর দিয়ে, তা আমাকে ধারাক্রমে পৌঁছে দেয় নৈঃশব্দমথিত সুরের বিস্ফার ও নীরবতা, আঁধার শীতলতা এবং অনুধাবনের দিকে। সে এক অভাবিত রিয়ালিটি। “SILENCE IS ACCURATE.” আহা! ধরা যায় না তাকে, আপাত অনুভবে পাওয়া। দেখি নাই, তবু জানি সে আছে, পাবো না তবু তারই অন্বেষণ, আনন্দ কি ক্লেদের ভেতর দিয়ে! এই কি সেই ঈপ্সিত পরম! পাবো না পূর্ণরূপ; সামান্য আলোকছটা ছাড়া, সামান্য উদ্ভাস! এই সামান্যেই খুঁজে পেতে হবে সমগ্রের প্রকাশ! অমীমাংসিত রই- শতখণ্ড শিলায়, বিদ্যুতে, আমিই তবে অমীমাংসিত পথ! আমিই ধাঁধাঁ!
 
কাছাকাছি কোথাও উচ্চারণ শুনি, বন্ধুর ব্যাটা কবিপুত্র তারকাভস্কি বলতে থাকে-
কবি তাই, যে ছেঁড়া মোজার একাংশ দিয়ে পায়ের গোড়ালি দেখেই পেয়ে যেতে পারে সমস্ত পায়ের ধারণা। কবির পুরোটুকু দেখবার প্রয়োজন পড়ে না। কবি তাই, যে খণ্ডাংশ থেকেই পেয়ে যায় সমগ্রের ধারণা।
আশ্বস্ত হই…
 
আদিম পুস্তকে এইরুপে লেখা হয়েছিল…
 
০১.
কবিবর মান্য হলা যবে
আপন পিতার করোটিতে মদ্যপান করি
খাড়া ঢাল বেয়ে নামি আসো
এই মর্ত্যপুরে
দৈবাৎ অপরাহ্নের নিদ্রার মত বিস্মৃত হবার দিন চলে আসে
গতিময় যদিচ ক্লান্ত ঘোড়ার নুয়ে পড়া মাথা
ক্রমাগতঃ আরো নুয়ে পড়ে
বাতাসে শরীর ঘষে কেঁদে ওঠে বিভ্রান্ত নেকড়ের দল
পায়ুপথে জন্মকুষ্ঠি লুকোনো ইহুদী বালুনির্মিত তোমাদের চিত্ত
ধ্বসে পড়ে আধানোনা সমুদ্রের ঢেউয়ে
এই সংবেদনশীল আত্মা পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচারের শেষে পায়ুপথে ফিরে যাও
দ্যাখো বিষ্ঠায় ভরে গেছে আকাশ সাগর
রে এমন মত্ত হবো মদ দিয়ে কুলকুচা করি চল্
মদের দোহাই ভিজে গ্যালো ঠোঁট
বন্যহাতি মাড়িয়ে গ্যালো কাঁচা লঙ্কার ক্ষেত
কদাচিৎ মস্তিস্কে অনুভূতি হয়
রে এমন দিনে আপন পিতার করোটিতে মদ্যপান করি…
 
০২.
শুনেছি তথাগত,
লুটের মাল ভরা তোমার ধনাগার
স্বর্ণসম্ভার, তুমি তো গরুখোর
হিন্দু নও তবে, মদের পিপা থেকে
যে মদ ঢেলে খাও সে মদ দানবীর
গোপন পায়ুপথে গন্ধ-পুঁজময়
লোহিত ঋতুস্রাব, তবু তা লেবুফুল
কোমল কুৎসিত প্লীহায় যকৃতে
মদের ফেনা মেখে কেবলি নীলায়ন
যে পাখি উড়ে ফেরে সে পাখি জলচর
সারাটা রাতব্যাপী তুমি কি ভাঙ্গাচোরা
কাঠের সিন্দুকে নিজেকে কাটাফাঁড়া
দেখেছ তথাগত…
 
০৩.
ওই বনে মাঠে তোমার ছায়ারা সব মরে পড়ে আছে- দূরে হলুদ চাদরে মোড়া হিব্রু অবতার- সূর্য ডুবে যায়- তুমি মুছে ফ্যালো রেকাবির ধূলো- আর আমি রোগ থেকে নিরাময়ে যাই- ঘুমের ভেতর শুনি অশ্রুত গান- মৌসুমী বাগানে মরে আছে গন্ধগোকুল- পড়ে আছে বাঘে খাওয়া হরিণের দাঁত- মরণমৃত্যু মিশে আছে মৎস্যভূক সাপে সরীসৃপে- অন্ধকারে হতচকিতের মতো কবন্ধ খুঁজে ফেরে মাথা- মৌসুমী বাগানে ছিন্নশরীর খুঁজে ফেরে নিহত গোকুল…
 
০৪.
ঈশ্বর তুমি প্রতিপালন করো মাংসখন্ডলোভী সকল কুকুর- তাদের আহত উরু আজও থাবাচিহ্ন বয়- মনে করি সূর্যের পেছনে আকাশ নেই তবে সূর্যের পশ্চাৎপট কি- উত্তর পাবার অপেক্ষায় এমন প্রশ্ন আজও করি- সমস্ত শরীরে সাপের বিষ মেখে তুমি আসো- নিরন্ন সকালে বালু বোঝাই কার্গো এসে ভেড়ে- কারা যেন ছাইয়ের ভেতর থেকে তুলে আনে ফসলের দানা- সবাই বলে নিরন্ন সকালে হলুদ চাদর গায়ে নামবেন অবতার…
 
০৫.
দোযখের সাপ
তোমার লোলুপ জিহ্বা পোড়ে
তপ্ত তেলে তারপিনে,
তোমার দ্বিধাখণ্ডিত ফল
হে দেবতা
হে পিশাচ
ভোজ্য তেলে সেদ্ধ হয়ে ওঠে
 
আলোহীন প্রভাহীন আগুনের আঁচে
 
টেবিলে শোয়ানো পাখি
ছিঁড়ে দু’টুকরো করি
সে তোমার ভোজ
 
পাখির পালক, অন্ত্র, কোষ
তারপর
সোমরস ক্রমেঃ নদী
ভুল ক্রমেঃ জ্ঞান
তোমার লালায় মেশানো
বিষাক্ত ফুলের সুবাস
 
বিষাক্ত পরাগ, পাপড়ি ও মধু
তুমি আমাকেই দাও
আমিই সে সাপ
সেই ভ্রষ্ট সরীসৃপ
 
হে সাপ, বিদেহী ইবলিশ
আত্মা চিরে বের হয়ে আসা
সে কোন ময়ূর
তোমাকেই বিষথলি ভেবে
ঠোঁটে তুলে নেয়
 
কেবলি ময়ূর
কেবলি পেখম
বিষথলি পোড়ে
 
এই ধুলা-পবনের দেশ
কমলালেবুর বনে
 
কুসুমে-কণ্টকে বিষথলি সারাটা শরীর
সরীসৃপ, তবু তোমার অসম কুণ্ডয়ন
তবু নাগ, তবু হে পানোখ
তোমার সকল ছোবল গন্ধমে লীন
 
কুমারী-ময়ূর আসে
ঘননীল ময়ূরী-কুমার
মেঘ ডাকে
মেঘে মেঘে বিষ-লালা
কুসুমে পরাগ
বিশালিনী দুয়ারে দুয়ারে ময়ূরের পাখা
কবন্ধ বিগ্রহে ফণা তোলা সাপ;
আর কবে ফুরাবে এ-গান
 
বিষ বলে সাপ
সাপ বলে ময়ূর ময়ূর
ময়ূর সে সাপ
 
আমি সে ময়ূর…!!!
 
 
Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com
 
ডার্টি পিকচার (রিমিক্স)
 
০১. 
 
বিশ্বামিত্রঃ আজকে তোমায় অন্ধকারে
পাঠ করিব রানী
লীলায় মেতে শুনবো তোমার
অসহ্য গোঙানি
 
মেনোকাঃ তাই যদি হয় ধাঁধার দুয়ার
খোল তো দেখি রাজা
বাদ্য উতল দুই হাতে তোর
যত্ত পারিস বাজা
 
বিশ্বামিত্রঃ আজকে আমি বল্গাহরিণ,
বখতিয়ারের ঘোড়া
গোলকধাঁধায় আটকে থেকেই
বাজাবো অন্তরা
 
মেনোকাঃ হোক তবে তাই, বেড় দিয়ে ধর
বিস্ফোরণের আগে;
বারুদ বোমায় বিস্ফোরিত
হবার নেশা জাগে
 
বিশ্বামিত্রঃ নেশায় মরণ, আর কিছুক্ষণ
সবুর করো সোনা
দোহের মাঝে করবো বিলীন
দোহের উত্তেজনা…
 
 
 
 
০২.
 
বৃষ্টি পড়ছে, বৃষ্টি।অব্যাহত বৃষ্টিপতনের নীচে ভিজে যাচ্ছে
মিলিটারিদের মাঠ ও জঙ্গল। আমি এক জলপাইরঙ্গা
কামান তার ভেতরে বসে ভাবছি বিস্ফোরকের নন্দন –
ভাবছি, বিস্ফোরিত একটি গ্রেনেড সময়ের বিরুদ্ধে
নিজের ভেতরে পুনরায় কেন্দ্রীভূত করছে গতি আর
বিস্ফোরক, ফেটে পড়ার আগমুহূর্তের মতন ঘন, সন্নিবদ্ধ।
ব্যারাকের ওপাশে বৃষ্টিতে যেন সন্ত্রস্ত, ফলে ঘন আর
নিজেদের ভেতর গুটিসুটি হয়ে আছে লতা-গুল্মের ঝাড়
-পূর্বেকার যে কোন সময়ের চেয়ে অন্ধকার ওগুলো –
ভেসে আসছে সুর, এই বৃষ্টিতে ভেজা বারুদের স্তুপের
ওপর বসে মাতৃভূমির গান গাইছে এক সৈনিক – মাঠের
ঘাসগুলো ছেঁটে ফেলা হয়েছে পরিমাপ মতো, শৃঙ্খলার
বাইরে ওদের বাড়তে দেয়া হবে না – সেই মাঠে
প্যারাট্রুপারের মতন সারিবদ্ধ নেমে আসছে বৃষ্টি – ভেসে
আসছে গান – অন্তর্বাসের ভেতর গোপনীয়তার মতন
আমি এক জলপাইরঙ্গা কামান তার ভেতরে বসে আছি
-সার সার সৈন্যের মতন মাঝে মাঝে আমার সারা
শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে, যেন বা প্যারেডের শব্দে…
 
 
 
০৩.
 
আর তারা নাকের মধ্যে তর্জনী আর বুড়া আঙুল ঢুকিয়ে
নাকের লোম ছিঁড়ে সমুদয় নাক লোমহীন করে, যাতে
বাতাস সবেগে ধায় নাসিকাপথে – আর জোছনা রাতে
ভাঁড়ারঘরের পাশে হস্তমৈথুন করে বেহেশতী দেবদূতের
দল, যেহেতু তার পেচ্ছাবে জ্বালাপোড়া – আর হলুদ
মিনারে বসে পিরিতির নামে বনের পাখিরা যৌনচর্চা করে
– আর শয়তান নিশ্চয়ই লঘু এসিডে শৌচকার্য করে,
নাকি তার তেনার কোনও লিঙ্গ নাই পায়ুপথ নাই
আমাকে ভাবিত করে এম্ববিধ বিবিধ ঘটনা – সেহেতু
জগভর্তি ব্লিচিং পাউডার মেশানো পানি ঢকঢক করে
খাই – দেখি সকালের কালে মুরগী পালক ঝাড়ে আর
থরে থরে পড়তে থাকে উকুনপোকা – আর বিদ্যুতায়িত
ছেঁড়া তার পড়ে আছে মাঠে মাঠে পথে ঘাটে রাস্তায় –
দূরে উঁচু উঁচু বৃক্ষের ডাল থেকে বনের পাখিরা আত্মহত্যা
করে তাহাদের পাখা আছে ডানা আছে সেই বেদনায় –
আনুভূমিক তীব্রতায় ঘূর্ণি ছড়ায়ে গেলো – তবে
মাসিকপূর্ব গর্ভিণী সেই শিশুকন্যা তার যোনীতে
জরায়ুতে গবেষণা এষণা হোক – কোন বীর্যে পেটে তার
হেন সন্তান – তার উরুতে আঠা আঠা বীর্য কার, নাকি
কাঁঠালের আঠা গবেষণা হোক – আর এই যে তোমাকে
নিয়ে ফায়সা কথা বলতে গিয়েও বলতে পারি না
পরিণামে এও এক ব্যথার আকর বিবেচনায় মিথ্যে নয়
– আর দুয়ের অধিক অণ্ডকোষ লয়ে প্রভূত পুরুষ
পৃথিবীতে বাঁচে, আস্বাদ লয় হাওয়া এবং মাই তথা স্তন
কিনা স্তনের – এবং ইহুদীদের গোয়ালে গোয়ালে
আরাধ্য শুয়োর এবং পুরুষের বদলে হিজড়েরা হেরেমে
যৌনতৃপ্তি দিচ্ছে তাদের স্ত্রীগণকে – অতঃপর তারা
গর্ভবতী কিংবা এমন অজস্র বাক্যবন্ধে রচিত রচনায়
কিবা আসে যায় সেহেতু শয়তান আর দেবদূত দোস্তি
করে হাত মারে এইসব লেখনীর ‘পরে – আমি তাদের
পাড়াতো ভাই মহিলা মরণব্যাধিআক্রান্ত কি না ভয়ে ভয়ে
তবুও প্রস্তুতিহীন তার কাছে যাই – মহিলার দুধে দাগ,
তবু তার যোনী কেমন বিটকেল গন্ধে ভরা বলে আমি ও
আমার বন্ধু কক্সবাজার যাই সমুদ্রসৈকতে – সিলেট
যাবার পথে সিলেটের বাস আনারস বনে থামে, সকল
যাত্রীগণকে তারা বলে- নামেন, পেট ভরে আনারস
খান…
 
 
 
০৪.
 
পরিধি ঘিরে অজস্র টুনি পাখির ভিড়, তারা চায় পরিধির
বাইরে উড়ে যেতে কেন্দ্র টানিয়া ধরে; সকল বিন্দুর দৌড়
কেন্দ্রের সাথে সুতা দিয়া বাঁধা তারা উড়িতে পারে না।
হায় বিন্দু, হায় টুনি পাখি তোমাদের স্মৃতির আম্মা
ভিনগ্রহে থাকে- এই মাত্র তাহার পিরিচসদৃশ যান
দারুচিনি বনের উপর দিয়ে বিশাল নভোমণ্ডলে উড়িয়া
গেলো…
 
 
 
 
০৫.
 
আরে আমার উপরে কেউ আছে নি, আমি আজাদ
পাগল ফ্রম খুলনা মাই ডিসট্রিক্ট, ২৪ ঘণ্টা কথা বলি, নো
নিড নো নিড অফ মানি; মুসলমানের শরীর এতো মোটা
কেন? হুজুরে পাক ছিলেন চিকন। ছিঃ ছিঃ আর যদি
একটা গুলি চলে শেখ মুজিব ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো
আমার মা বোনেরা, পারবে নাকি কোনও চুতিয়া
একঘণ্টা টানা কেতাব পড়তে? পারত শুধু আসাদ, হে
ইঞ্জিনিয়ার সামাদ, কাজল চাকরি ছেড়ে দাও, ফেরাউন
দিতো কবর পাহারা। কেউ আছেন নাকি ১০ টাকা
দিবেন? আমার বাড়িত চইলে আইসেন টিকেট কাইটা
খাওয়াবো। তারপর তুমি চলে গেছো চেয়ে চেয়ে
দেখলাম। ধুর! উর্দু শিখতে আবার হুজুর লাগে নাকি?
উর্দু পারি, এই স্টুপিড! নাচতে নাইমা ঘোমটা সরাও,
দেশটা কি ইজারা দিছিনি কারো কাছে? শালার গরু
খাওয়ার মুসলমান, রাজনীতি করবেন অথচ কথা
বলবেন না, আমগোরে কি বাংকানা মনে হয়? ওইসব
পাতা অনেক আগেই শ্যাষ, বুইঝা শুইনা কথা কইয়েন,
মেসওয়াক সুন্নত জানেন তো! ওই ওই ব্যাটা ফকিন্নির
পুত বেচি না হয় তাই বইলা তোর কাছে, জানোস আমার
কাছে কারা গাজা কিনতে আসে! তারা কবি সাহিত্যিক,
তুই সামান্য পানআলা খানকীর পোলা আমার কাছে
গাজা চাস, ফোট, ত্যারিব্যারি করবি না কিন্তু এক্কেরে
বোতলে ভইরা রাখুম, ওই র্যাব কিরে! র্যাব কি! র্যাব কি
বুশের চাইতে বড়! ওই অর মায়েরে বাপ ওই ফায়ার ফায়ার
ওই আমার উপরে কেউ আছে নি, আই আম
আজাদ পাগল ফ্রম খুলনা মাই ডিসট্রিক্ট, ২৪ ঘণ্টা কথা
বলি…
 
 
 
০৬.
 
উপায় না পেলেই ও বালিশের নিচে যেটুকু অন্ধকার
ওখানে মাথা ঢুকিয়ে দেয়, ওই অন্ধকারটা ধীরে ধীরে
সয়ে গেলে কুয়াশা, কুয়াশা সরিয়ে নদী, একেবারে বুক
মেলে দেয়া, তাতে আলো, আলোর প্রতিসরণ, দূরে
একটা ফার্ম হাউজ, কাউবয় টুপি পরা একটা লোক
ট্রাক্টর চালিয়ে বাড়ি ফিরছে, তার পেছনে সূর্যমুখীর ক্ষেত,
আগুন জ্বলা, চারপাশে তেল নিষ্কাশনের মেশিন, ওগুলা
ভ্যানগগের কিনা ও জানে না, লোকটা ফিরছে, উঁচু করে
বাঁধা কাঠের বাড়ি ওইখানে, মাথায় স্কার্ফ পরা এক রমণী,
লোকটি তারই পুরুষ মনে হয়, একটু পরেই ওরা বাড়ির
সামনে সবুজ ঘাসের চত্বরে ঘরে বানানো মদ খাবে দুজন
মিলে, ছোটো একটা টেবিলে সাদা চাদর, একটা কাঠের
ফুলদানীতে তাজা ফুল গুঁজে রাখা, ঐটা ঘিরে দুজনে
বসবে, এই দম্পতি, এরা দূর দেশ থেকে আসা, এশিয়ার
কোনও দেশ; ঘরে বানানো মদ খেতে খেতে ওদের দুজন
কে ঘিরে পোষা বেড়ালটা ঘুর ঘুর করতে থাকবে, অনেক
দূর সূর্যের আলো ওদের চোখে লেগে থাকবে, দুজনের
চোখ দুজনের কাছে বাতিঘর, উজ্জ্বল বাতিঘর, তার
দেখানো রেখায় রেখায় ওরা পথ করে নেবে কুয়াশা
সরিয়ে সরিয়ে বয়ে চলা নদী যেভাবে পথ করে নেয়!!!
 
 
 
০৭.
 
ধোয়ায় লেপটানো একটা ভেজা কাপড় সেই কতক্ষণ
ঝুলছে একটা টানা দড়ির ওপর; পাশে, বাড়ীর ছাদে
একটা ছোটো তালগাছ তার ছায়া মেলে ধরে আছে,
শুকাচ্ছে আর পুড়ে যাচ্ছে। একটা বখাটে কিশোর চুল না
আঁচড়ে খাড়া খাড়া চুলে এলোমেলো মাথা নিয়ে দাঁড়ানো,
পাতাসহ গাছটাকে তেমন দেখাচ্ছে। আমার জানালায়
একদলা হলুদ রোদ কেমন আব্দারের ভঙ্গিতে বসে আছে,
মনে হয় নখ খুঁটছে। কিছু আবার ছোটো শিশুর মতন
ঘরে ঢুকে হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এই জ্যৈষ্ঠের
রোদে এসব সঙ্গে করে আমি, আর ওরা সব অনুপ্রবিষ্ট
এই জ্যৈষ্ঠের দুপুরে…
 
 
 
০৮.
 
পীযূষ ভাবছিল সেইসব দিনগুলোর কথা, যখন অচেনা
অভিভাবকের মতন সমুদ্রে সে ভেসে বেড়াতো আর
সমুদ্র গর্জাত, অতিকায় ইঞ্জিন। সেইসব দিনে কি এক
আনন্দে প্রায়ই তার বুকের ছাতিটা এতো বিশাল হয়ে
ফুলে উঠত যে, চাইলেই সেটা দিয়ে একটা মাঝারি
জাহাজের পাল খাটানো যেতো। সমুদ্রে যেতে যেতে
রুপকথার মতন কত না গল্প, অথচ সেগুলোতে মানুষের
বিশ্বাস কেমন অটুট! সেই যে একটা গল্প, সমুদ্রে নেমে
কোন মহিলা সাবানের ফেনায় তার যৌনাঙ্গ পরিষ্কার
করছিলো, তখন হুট করে তা খসে পড়ল আর একটা
তারা মাছ হয়ে ভেসে চলে গেলো সমুদ্রের গভীরে,
একেবারে নাভির দিকে। আজ কোথায় সেইসব! স্বপ্নের
আয়তন দিন দিন কেমন ছোটো হয়ে আসছে, এতো
অন্ধকার যে আর স্বপ্নই দেখা যাচ্ছে না, আলোই তো
পড়ে না, পড়ার মতো যথেষ্ট আলো আজ আর অবশিষ্ট
নেই…
 
 
 
 
০৯.
 
তুতানখামেন, এ বছরই সম্ভাব্যদের তালিকা প্রকাশিত
হবে প্রয়োজনীয় সকল গবেষণা শেষে, আপাত বার্তা
এই- আর এখনো রমজানে জাহাজে জাহাজে আরব
দেশের খেজুর আসে, ভগবানের প্রসাদ ব্রাহ্মণে খায়-
শুনলাম গত পরশুই একটা মেয়ে রেপ হয় দিনে দুপুরে,
কিন্তু পুলিশ থানায় কেস লয় নাই -ওদিকে আবার
কোন্ এক শিকারি জঙ্গলে হ্যাভারস্যাক ফেলে গেছে
তাতে বন্দুক নাকি রিপ ভ্যান উইঙ্কল – মরা হাঁস
সাঁতরে সাঁতরে তিন দিন মোহনায় ছিলো, অবশেষে
সাপের ফসিল কাঁধে করে তারা নাকি মদের দোকান
ভাঙ্গিবার পর আয়ুর্বেদ আয়ুর্বেদ বলিতে বলিতে
অনশনের ডাক দিয়াছে – এরূপে চলিলে ধুতুরা বনে
শালপাতার বিড়ি তো নাজায়েজ হইতে পারে না…
 
 
 
১০.
 
হামিদ তোমার পানের দোকান আজ বন্ধ – ক’দিন
আগেই তোমার বাবা মারা গ্যাছে – তোমার পানের
দোকান আজ বন্ধ – এইটুকু ব্যাথা বুকে বড় হয়ে ওঠে-
এইটুকু ব্যাথা নিয়ে আমি আজ মরে যেতে পারি…
 
 
 
১১.
 
বেহেশ্তের নকশাকারী লোকটা এ পাড়াতেই কোথায়
 
যেন থাকে – ও নাকি দোজখে যাবে – পূর্ণিমা আজ,
জোছনায় বসে ত্রিকোণ, চতুর্কোণ, ষড়ভুজাকার
জ্যামিতি আঁকছে সে – জোছনায় ছড়াচ্ছে দূরবর্তী
বাঘেদের গন্ধ – সত্য-মিথ্যা মিলিয়ে এরা যে কি সব
রটায়, সেনা আইনেরও পরোয়া করে না – বিধান করো
পিতা – আমার ফুলের খামার অনুমতি ছাড়াই ঢুকে
পড়ে, একটা একটা করে ফুলের গায়ে রং মাখায়, যেন
ধ্যানী – সীমার যত্তসব মালীটাকে অন্তত বলতে
পারতো! মালী গান – ও সে কে এসেছে ফুল বাগানে কে
রে কে চোরাব্যাটা। ও সে ফুলের গায়ে রং মাখাবে মালীর
খবর রাখে না। উঁচু উঁচু স্তম্ভের নিচে আমি একা, ক্ষুদ্র;
দূর থেকে এইসব দেখি – শীতে না জানি ভয়ে আমার
ছায়াটা কাঁপছে, পারলে এক্ষুণি লুকিয়ে পড়ে ঝরে পড়া
কোনও পাতার আড়ালে…
 
 
 
১২.
 
আপনাকে ভালবাসি রাই, এই দুঃখে হরি বোল হরি –
হরির মা মরলো আগামীকাল – হরি আমি একই পাড়া
থাকি -হরিরা চার বোন, ভাই নাই -এখন এতো এতো
প্রাণীকূল নিয়ে হরি কোথায় যায়! হরি বলে- বনের
মহিষ বনে ফিরে যাও বাঘ – হরি যায় চিতায় – হরি
এখন বহুভঙ্গ সাপ – হরি এখন উভপ্রাণ পাখি…
 
 
 
Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত