নিস্পত্র ফাগুন
একদিন তুমুল ভাইরাসেরা
ছুটে এলো আমাদের গল্পের দিকে
বরফের দেশ থেকে এলো, গবেষণাগারের
ঘষা কাঁচ ফুঁড়ে এলো
ছুটে এসে তাঁরা পাখিদের হয়ে
শীষ দিয়ে গেলো, ফুটিয়ে তুললো
পুড়ে যাওয়া আমাজন, মরা ডাল
খাতা খুঁটে লিখে গেলো দানার বকেয়া
আর বেঁধে বেঁধে নয়
আমাদের গল্পের দিকে এসে তাঁরা
রেখে গেলো পুরোনো করোটি
নিজেদের প্রত্যেকের ছায়ার তফাৎ
কার কাছে যাবো
একে একে সবাই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে
ঘন ঘন ধুয়ে নিচ্ছে হাতের স্পর্শ,
আকাশের বর্ণহীনতা নাকি মাটির জাহান
বলো আমি কার কাছে যাবো?বলো ক্যারোলের সুর,
আমি আর কার কাছে যাবো?একে একে সবাই ফিরিয়ে নিয়েছে মুখ
আটকে থাকা মাস্ক, জীবন্ত পরিজন
এমনকী কবরের হা, নির্বিরোধ
মৃতদের ঘর, নিঃশুল্ক পচনের অধিকারবলো আমি আর কার কাছে যাবো!
স্তব্ধতা
শবের আচ্ছাদন পরে শুয়ে আছে
তাঁর নীরবতা যেরকম নিজের নদীর
পাশে শুয়ে আছে চর, ছুঁয়ে আসা
জলের স্মৃতির মতো স্তব্ধতা
আমাকে আকাশ শেখানো একটি পাখি
এ থেকেই দিয়ে গেলো শীষ
এসো ঝাঁপ দাও সুমিষ্ট ফলের ভেতর
সেও আছে জেনে নিভৃত পোকার বিষ…
ঝরা পাতাদের থেকে
চৈত্র সেলের খাতায় এবছরও
তোমার নাম রয়ে যাবে , স্বস্তিচিহ্ন আঁকা-
আগামীতে আবার ঝরাতে আসবে পাতা
শিব ঠাকুরের মেজেন্টের
গা থেকে হাড় জিরজিরে আলো
মাথার ওপর চক্কর খেতে খেতে
পুনর্বার নেমে আসবে গাছের গোড়ায়
হিসেবের মগডালে টিকে আছে
বিকেলের রোদ
বিদায়ের ভান করে এসে গান করে
সেও লেখা হবে বকেয়া খাতায়
সমাপনী
এই বছরও তুমি ইস্পাতের মতো নির্মোহ
সমান্তরাল থেকে যাবে দুটি ইস্টিশানের মাঝখানে,
নিজেদের বিনষ্ট করবে শ্বেত ও লোহিত কনিকাদলধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে আরেকটি বছর
বকেয়া খাতায় লেখা হবে চামড়ার
গান, ছড় টানবে গ্রামের ধূসর সমাপনী, তবু এতো রিক্ত ভেবো না
কহ্তে কবীরা… আটকে থাকা বুননের
ফাঁসে সুতো দেবে মাকুর অক্সিজেন
প্রতি বছরের মতো এবছরও গ্রাম ছেড়ে
দেশ ছেড়ে চলে যাবে আরেকটি বছর…
২৭ অক্টোবর,১৯৬৫
জন্মস্থান-
মনুভ্যালি চা বাগান, কৈলাসহর, ত্রিপুরা।
শিক্ষা-
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এমএ।
পেশা-
তথ্য আধিকারিক (ত্রিপুরা সরকার)।
প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ –
উনকথন , খন্ড পাড়ায় জলবার্ষিকী , ধর্মগোধূলী, নিরিবিলি সেন্ট আইটেমস, শ্রেষ্ঠ কবিতা, বিকেলের হার্টক্রেন
অসাধারণ লিখেছো। শুভেচ্ছা রইলো অন্তহীন।
ধন্যবাদ