| 27 এপ্রিল 2024
Categories
জীবন যাপন ট্রেন্ড

স্যানিটাইজারের অত্যধিক ব্যবহারের ফল শরীরের ৬টি ক্ষতি

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
 
রাস্তাঘাটে বেরলে, এটিএম-এ টাকা তুলতে গেলে সবসময় তো সাবান-জল দিয়ে হাত ধোওয়া সম্ভব হয় না। হাত পরিষ্কার রাখতে আমরা তাই ব্যবহার করতাম অ্যালকোহল-বেসড স্যানিটাইজার। যারা নিয়মিত ও-জিনিস নিজেদের সঙ্গে রাখতাম না, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে সম্প্রতি তারাও হুড়মুড় করে কিনে ফেলেছি বস্তা-বস্তা হ্যান্ড স্যানিটাইজার। যুদ্ধকালীন এই পরিস্থিতিতে সরকারি তরফেও নির্দেশ, সম্ভব হলে প্রতি ঘণ্টায় স্যানিটাইজার কিংবা নিদেনপক্ষে সাবান দিয়ে দুই হাত পরিষ্কার রাখুন। কিন্তু অ্যালকোহল-বেসড স্যানিটাইজারের অত্যধিক ব্যবহারের ফল যে ক্ষতিকারকও হতে পারে, তা কি জানতেন? কিন্তু কেন? আসুন জেনে নিই এক-এক করে।
 
উপকারী অণুজীবদের মৃত্যু
আমাদের সারা শরীরের মতো হাতের ত্বকেও এমন বহু অণুজীব থাকে, যারা আমাদের ক্ষতি করে না, উলটে আমাদের সুস্থ জীবনে তাদের ভূমিকাও অপরিসীম। অ্যালকোহল-বেসড স্যানিটাইজার বারবার ব্যবহার করলে তারাও মারা পড়ে। যা মোটেই কাম্য নয়।
 
ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়ার শক্তিবৃদ্ধি
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের মত অনুযায়ী, যে স্যানিটাইজারে ব্যাক্টেরিয়ারোধী উপাদান থাকে, তার নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ত্বকে বাসা বাঁধতে পারে অ্যান্টিবায়োটিককে বুড়ো আঙুল দেখানো ব্যাক্টেরিয়ার দল। ফলে ঘন-ঘন স্যানিটাইজার ব্যবহার না করে মাঝে-মাঝে সাবান-জল দিয়ে হাত ধোওয়াই শ্রেয়।
 
নোংরা কিন্তু যায় না
কখনও লক্ষ করেছ কিনা জানি না, খালি চোখে দেখা যায়, এমন নোংরা হাতে লেগে থাকলে তা কিন্তু স্যানিটাইজার দিয়ে ওঠে না। ফলে হাতে কাদা-মাটি বা অন্য যে কোনওরকম নোংরা লেগে থাকলে স্যানিটাইজারের পরিবর্তে সাবান-জলের শরণাপন্ন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
 
ত্বকের শুষ্কতা বাড়ে
এতদিনে নিশ্চয়ই সবাই লক্ষ করেছ, বারবার স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুলে হাতের ত্বক ক্রমশ শুষ্ক হয়ে যায়, যা থেকে চুলকুনিও শুরু হতে পারে। এর জন্য দায়ী স্যানিটাইজারের অ্যালকোহল। এ থেকে বাঁচার উপায়? সম্ভব হলে হাতে ময়শ্চারাইজার মাখা, বেশি করে জল পান করা এবং অবশ্যই, যে কথাটা বারবার বলতে-বলতে এই এত্ত লম্বা জিভ বেরিয়ে যাচ্ছে, শুধু পরিষ্কার জল বা সাবান-জলে হাত ধোওয়া।
 
পেটে গেলে বিপদ
অ্যালকোহল-বেসড স্যানিটাইজারের অত্যধিক ব্যবহারের ফলে হাত থেকে তা মুখেও যেতে পারে খুব সহজেই। একবার-দু’বার তেমনটা হলে চিন্তা নেই, কিন্তু দিনের পর-দিন, বারবার ব্যাপারটা হলে দুশ্চিন্তার কারণ তৈরি হবে বই কী!
 
ওষুধ বা গাছপালা নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের আরও বিপদ
যাঁরা কাজের প্রয়োজনে সারাদিন নানা রাসায়নিক নাড়াচাড়া করছেন, যাঁরা ওষুধ ঘাঁটছেন, কিংবা ঘরে বসে গাছপালার পরিচর্যার জন্য সার তৈরি করছেন বা ছেটাচ্ছেন, তাঁদের হাতে আগে থেকেই নানা রাসায়নিক লেগে থাকছে। সেগুলোর সঙ্গে অ্যালকোহলের বিক্রিয়ায় নানা অবাঞ্ছিত উপদ্রব হাতের ত্বকে দেখা দিতে পারে। সেগুলো এড়াতে চাইলে ওই… মাঝে-মাঝে সাবান-জল।
 
তার মানে কি আজই স্যানিটাইজারের ছোট-বড় বোতলগুলোকে দূর-দূর করে তাড়িয়ে দেবেন বাড়ি থেকে? তা নিশ্চয়ই নয়। যে জল ছাড়া আমাদের বেঁচে থাকাই দায়, সেটাও অত্যধিক পান করলে আমরা মারা যেতে পারি, জানেন তো? এক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তাই। অ্যালকোহল-বেসড স্যানিটাইজার হাতের কাছে পেলে আমরা নিশ্চয়ই ব্যবহার করব, কিন্তু লাগামছাড়া হয়ে নয়। করোনাভাইরাসকে বোকা বানানোর এই লড়াইয়ে মনে থাকবে তো এই স্ট্র্যাটেজি? 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত