| 29 নভেম্বর 2024
Categories
ধারাবাহিক সাহিত্য

ইরাবতীর কথা (পর্ব-১৩)

আনুমানিক পঠনকাল: 6 মিনিট

নারীর নিজের মুক্তির জন্য, নিজের স্বাধীনতার জন্য নিজের উপর নিজেকে আস্থা রাখতে হবে, লড়াইটা নিজেকেই করতে হবে। নারীবাদ বলি কী নারী স্বাধীনতা বা নারী মুক্তি- অর্জন না করলে পাওয়া যাবে না। নরওয়ে নারী-পুরুষের সমতার জন্য একটি পারফেক্ট দেশ বলা চলে। তারপরও এই দেশেও তেমন নারীর সাক্ষাৎ মেলে যে নিজে ডাক্তার হয়েও ডাক্তার স্বামীর ভয়ে তটস্ত থাকে।স্বামী শুধু স্যান্ডউইচ দিয়ে লাঞ্চ করতে চায় না বলে স্ত্রীকে সাথে স্যুপও বানাতে হয়। আর এই স্যুপ বানানোটা ভালোবেসে বানানো না রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে বানানো। এর জন্য নিজের অফিসিয়াল কাজ শেষ কোথাও বসে দু’দণ্ড জিরায় না, পাছে বাসার কাজে দেরী হয়ে যায়। অথচ নরওয়ের সমাজে স্বামী-স্ত্রী সপ্তাহের দিনগুলো ভাগাভাগি করে রান্নাসহ ঘরের যাবতীয় কাজ করার নিয়ম। দেখা যাচ্ছে, আইন থাকলেও সব নারী তা যথাযথ নিতে পারছে না। এমন শিক্ষিত নারীকে কে নারী-স্বাধীনতা এনে দেবে বা তার কাছে নারী স্বাধীনতা বা নারীমুক্তির সংজ্ঞা কী কে জানে! ’ইরাবতীর কথা’ ধারাবাহিকে ইরাবতীকে নারীর অনেক না বলতে পারা কথায় ও রূপে সাজিয়েছেন বিতস্তা ঘোষাল আজ থাকছে ইরাবতীর কথা ধারাবাহিকটির ১৩তম পর্ব।


Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

ঐহিক চুপ করে শুয়ে রয়েছে বিছানায়। একটু আগেই প্রান্তি কলেজ থেকে ফিরে চা বানিয়ে দিয়ে গেছে। ইরাবতী এখনো ফেরেনি। দেওয়ালে টানানো ঘড়িটা দেখল সে। সবে সাড়ে পাঁচটা বাজে। এই কদিনে সে দেখেছে ইরাবতীর ফিরতে ফিরতে সাতটা হয়ে যায়।

এসেই স্নান পুজো সেরে চা মুড়ি নিয়ে মেয়ের সঙ্গে বসে খানিকক্ষণ। মেয়ের পড়া, সারাদিনের কাজের খতিয়ান, কলেজের বন্ধু, খাওয়াদাওয়া সম্পর্কে গল্পের ছলে সব জেনে নেয়। তারপর রান্না করতে উঠে যায়। এতদিনেও রান্নার লোক রাখেনি ইরাবতী, দেখে অবাকই হয় ঐহিক। অথচ বিয়ের পর এতটুকুও রাঁধতে পারত না সে। প্রথম ছ’মাস টানা বাড়ির কাছের একটা হোটেলে খেয়েছে তারা। এমনকি চা পর্যন্ত আনা হতো পাড়ার গলির মুখের একটা চায়ের দোকান থেকে।

শেষে একদিন হোটেলের মালিকই ইরাবতীকে বলেছিল, বৌদি এবার রান্না করা শিখে নিন। রোজ এখানে খেলে শরীর বিগড়ে যাবে।তখন আমাদের দোষ দেবেন না।

নিরুপায় হয়েই সে ইরাবতীকে অল্প তেলে ভাপে দিয়ে আলু ভাজা, আলু সেদ্ধ, ডাল বানানো শিখিয়েছিল। ভাত পর্যন্ত করতে পারত না সে। কখনো আধ সেদ্ধ, কখনো গলা ভাত থেকে যখন ঠিকমতো ভাত রান্না করা গেল, তখনও রোজ অফিস যাবার আগে ভাতের ফ্যান গালার কাজটা তাকেই করতে হত।

সেই ইরাবতীই যখন মাসখানেকের মধ্যেই সব রান্না শিখে ফেলল তখন সে বেশ বিস্মিত হয়েছিল। ইরাবতী বলেছিল, আরে বাবা! রান্না না করলে কী হবে, প্রতিটা পদের স্বাদ তো জানি। কী এমন আহামরি কাজ এটা!

যদিও সে বারবারই বলত, শোনো রাঁধতে আমি মোটেই ভালবাসি না। আমি কিন্তু চাকরি পেলেই একটা রান্নার লোক রেখে দেব। রান্না ঘরে সময় নষ্ট করতে আমার বিন্দুমাত্র ভালো লাগে না।

অথচ… শুয়ে শুইয়ে এসব কথাই ভাবছিল ঐহিক। সে নিজেও জানে না তার ঠিক কী হয়েছে! অফিস থেকে বার বার ফোন আসছে জয়েন করার জন্য। অথচ সে বারবার শরীর খারাপের অজুহাত দিয়ে মেডিক্যাল লিভ নিয়ে নিচ্ছে।বাড়ি থেকে বেরতে ইচ্ছেই করে না তার। এমনকি কারোর সঙ্গে কথা বলতেও বিরক্ত লাগে।

মাঝে মাঝে প্রান্তির সঙ্গে গল্প করার চেষ্টা করে।কলেজ কেমন লাগছে, বন্ধুদের বিষয়ে জানতে চায়। প্রথম প্রথম মেয়েটা তাকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করত। দু-একটা উত্তরের বেশি কথা বলত না। ঐহিক এর জন্য নিজের মনে রেগে গেলেও ক্রমশ তাকে বুঝতে শুরু করেছে। একা একা যে মেয়ে বড় হয়, বাবা থেকেও যে দিন রাত নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে, সেই মেয়ে কখন যে নিজেকেও আলাদা করে নিয়েছে বাবার থেকে সেটা তার গোচরে আসে।

প্রান্তির মধ্যে এই অল্প বয়সেই একটা স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব তৈরি হয়েছে। ইরাবতীর মতো নরম মনের হলেও ভেতরে একটা দৃঢ় জেদ আর আত্মপ্রত্যয়বোধ প্রবল প্রান্তির। এই কদিন বাড়িতে থেকে সে দেখেছে কোনো অন্যায় দেখে চুপচাপ মেনে নেবার বা বসে থাকার মেয়ে প্রান্তি নয়। আর একটা জিনিস তাকে অবাক করেছে, মায়ের প্রতি মেয়ের দায়িত্ববোধ।কলেজে বেরবার আগে নিজের টিফিন ব্যাগে ঢুকিয়েই সে ইরাবতীকে মনে করিয়ে দেয় মা, টিফিন নিতে ভুল না, আর দশটায় প্রেসারের ওষুধ মনে করে খেয়ে নিও।

ঐহিক অবাক হয়েছে। ইরাবতীর কবে থেকে প্রেসার? বিয়ের আগে বা পরে সবসময়ই প্রেসার লো থাকত ইরাবতীর। রাস্তায় বেশ কয়েকবার মাথা ঘুরে পড়েও গেছিল এই কারনে। একটা ছোটো শিশিতে লবণ নিয়ে ঘোরার পরামর্শ দিয়েছিল ডাক্তার। প্রান্তি হবার সময় তো নিয়মিত গ্লুকোন ডি খাওয়াতে হত, যাতে বাচ্চা হতে সমস্যা না হয়। আর এখন এত প্রেসার যে রোজ দুটো করে প্রেসার নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খেতে হচ্ছে!

ঐহিক আরো লক্ষ করেছে ইরাবতী মাঝে মধ্যেই পেটের যন্ত্রণায় ছটপট করে। প্রান্তি তখন হট ব্যাগ দেয়, মাকে বকে। তুমি কী ভেবেছ? এভাবেই ওষুধ না খেয়ে, অপারেশন না করে মরে যেতে চাইছ? তাহলে বলো আমাকে, আমি এখনি গলা টিপে মেরে দিচ্ছি। দিয়ে নিজেও ঝুলে পড়ছি।

তারপরেই প্রান্তির কান্নার আওয়াজ ভেসে এসেছে ভিতরের ঘর থেকে।তুমি আমাকে এভাবে কষ্ট দিতে পারো না মা। আমাকে যখন এই পৃথিবীতে এনেছ, ভালো রাখতে তুমি বাধ্য। তুমি এবার ভরতি না হলে আমি দাদানকে বোলে দেব।

ইরাবতী ফিসফিস করে কিছু বলেছে। তার গলার স্বর পরিস্কারভাবে কানে এসে পৌঁছায়নি। কিন্তু বুঝতে পেরেছে, গুরুত্বপূর্ণ কোনো সমস্যা হয়েছে ইরাবতীর।

বেশ কয়েকবার ইরাবতীকে জানতে চেয়েছে সে। কি হয়েছে তোমার? কিসের অপারেশন?

ইরাবতী সে প্রশ্নের কোনো জবার দেয়নি।

প্রান্তিকেও জিজ্ঞেস করেছে সে। প্রান্তি ঝাঁঝিয়ে উত্তর দিয়েছে, তোমার জানার কী আছে? কবে কোন দায়িত্ব করেছ তুমি? আমার মাকে আমিই সামলে নিতে পারব।

ঐহিক ম্লান কন্ঠে বলেছে, ফিজিক্যালি থাকিনি বলে কী কিছুই করিনি তোমার মায়ের জন্য? প্রতিমাসে ড্রাইভারের…

কথা শেষ হবার আগেই প্রান্তি তীক্ষ্ণ স্বরে বলেছে, বিয়ের সময় শাস্ত্রে বৌয়ের সব দায়দায়িত্ব নেবার উল্লেখ রয়েছে। সিডিতে তো দেখি ঘটা করে মায়ের হাতে শাড়ি, ব্লাউজ, থালা ভরতি ভাত, তরকারি, মাছ দিয়েছিলে। সেগুলোর কোন দায়িত্ব পালন করেছ এতগুলো বছরে? আমার তো ছোটোবেলা থেকে কোনদিন মনে পড়ে না তুমি এগুলোর কোনোটাই করেছ বলে…

চুপ করে গেছে ঐহিক।এক ঘর থেকে বেরিয়ে আরেক ঘরে গিয়ে বসেছে।

তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে। প্রান্তি এখন কলেজ যাবার সময় তাকে বলে যায়, যেদিন দুপুরে বাড়িতে থাকে খাবার গুছিয়ে ভাত বেড়ে দেয়। খেতে খেতে কলেজের গল্প করে। বেশিরভাগ বন্ধুই অবাঙালি। মাছ মাংস খায় না। তারও এখন নিরামিষ খেতে ভালো লাগে এইসব… কথা বলে সে।

 সব কিছুর মধ্যে ইরাবতীর একটা প্রচ্ছন্ন উপস্থিতি টের পায় ঐহিক। ক্রমশ ইরাবতী আর প্রান্তির প্রতি নতুন করে একটা টান অনুভব করে।

তারই মধ্যে দুদিন অন্তর শাপলা ফোন করে দেখা করতে চাইছে।সেদিন রেগে গিয়ে থ্রেট দিয়েছে এবার দেখা না করলে প্রান্তিকে আর হেডঅফিসে সব জানিয়ে দেবে। ইরাবতীকে সে এতটুকু ভয় পায় না, তাই তাকে নিয়ে কোনো মাথাব্যথাও নেই তার।

আগে হলে ঐহিক হয়তো শাপলার কথায় দেখা করত, বা মাথা ঠান্ডা করার চেষ্টা করত, কিন্তু এখন আর এই ধরণের হুমকিতে তার প্রতিক্রিয়া হয় না। সে খুব শান্ত মাথায় বলল, তোমার যা ইচ্ছে করতে পারো। আমি এখন ঘর থেকে বেরচ্ছি না, আপাতত বাড়িতেই থাকব মনোস্থির করেছি।

শাপলা বলেছে, তাহলে আমার চলবে কী করে?।অন্তত টাকা ট্রানফার করো।

আমি এখন উইদাউট পে’তে ছুটি নিয়ে আছি শাপলা। তোমার একাউন্টে এর আগে সব টাকাই প্রায় ভরেছি। এখন থেকে আর পারব না।

বুঝেছি, ইরাবতী তোমাকে তুকতাক করেছে। এই জন্যই আমি চাই না তুমি বাড়ি ফেরো। দেখে নেব আমি ওই মেয়েছেলেকে।শাপলা হিংস্র গলায় বলেছে।

ঐহিক হা হা করে হেসে বলেছে, শাপলা তুমি ইরাবতীকে এতদিনেও চেন নি? আমি থাকি বা না থাকি কোনোটাই এখন ওকে আর প্রভাবিত করে না।কাজেই অযথা ইরাবতীকে অপমান কোরো না।

সাপের মতো হিসহিস করে উঠেছে শাপলা। খুব পিড়িত হয়েছে বৌয়ের প্রতি।দেখি কতদিন এক সঙ্গে থাকতে পারো? তারপর সামলে নিয়ে বলেছে, এই ঢ্যামনামি ছেড়ে বলতো অন্য কোনো কচি মেয়ের প্রেমে মাখোমাখো হয়েছ কিনা?

ছিঃ শাপলা।

এখন ছিঃ! আমি বুঝি জানি না দু’দিন অন্তর তোমার মেয়েদের প্রতি ছুকছুকানি।

জানোই যদি তাহলে আর বিরক্ত কোরো না। আমি খুব ক্লান্ত শাপলা। আমাকে এবার ছেড়ে দাও। ঐহিক বলে ফোন রেখে দিয়েছে।

তার পরেও শাপলা ক্রমাগত ফোন করেছে, ঐহিক ধরে নি। সত্যিই তার ভালো লাগছে না এই সম্পর্কটা। শাপলার চাহিদা দিনদিন বাড়ছে, পাশাপাশি তাকে সামনে রেখে অন্য একাধিক সম্পর্কেও সে জড়িয়ে গেছে। দেরি হলেও এটা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না ঐহিকের যে সে ক্রমাগত শাপলার ফাঁদে পা দিয়ে চক্রবুহ্যে পড়ে যাচ্ছে। এখান থেকে তাকে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র ইরাবতীই।কিন্তু ইরাবতী এতটাই নির্লিপ্ত হয়ে গেছে, তাকে কিছু বলাও যাচ্ছে না।

ঐহিক শুয়ে শুয়ে এসব কথাই ভাবছিল। প্রান্তির ডাকে উঠে বসল।

ডিস্ট্রাব করলাম বাবা?

না মা। আমি তো শুয়েই আছি সারাদিন। মা ফেরেনি এখনো?

মায়ের বিষয়েই কথা বলার ছিল।

বল।

মায়ের পেটে একটা টিউমার হয়েছে। সেটা ক্রমাগত বাড়ছে। ডাক্তার বলেছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেট করতে হবে।কিন্তু মা কোনো গুরুত্বই দিচ্ছে না। তুমি একবার কথা বলবে? প্রান্তি গা ঘেঁষে বলল বাবার।

সেই ছোটো বেলার মতো প্রান্তি আবার কাছে এল ভেবে মন খুশিতে ভরে উঠল ঐহিকের। কিন্তু প্রান্তির গা দিয়ে আর জনসনের গন্ধ আসছে না তো! মেয়েটার গায়ে কেমন যেন ইরাবতীর গায়ের গন্ধ। মেয়েরা কী তবে যত বড় হয় মায়ের মতো হয়ে যায়! সে মেয়ের মাথাটা সন্তর্পনে কাছে টেনে নিয়ে চুলে বিলি কাটতে লাগল।

প্রান্তি যখন ছোটো ছিল শোবার সময় বলত, বাবা মাথায় বিলি কেটে দাও তো! পায়ে খুব ব্যথা, পা টিপে দাও। উফঃ হাতটায় ব্যথা।

কেন মা এত ব্যথা? বাবার প্রশ্নের জবাবে চোখ ঘুরিয়ে সে বলত, হবে না? দিন রাত কত কাজ করতে হয় বলতো আমাকে? তুমি, আর মা বেরিয়ে যাবার পর সোনামনিকে স্নান করানো, খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো, তার উপর আবার হোম ওয়ার্ক, সব একা হাতে করতে হয় আমাকে।

সোনামনিটা কে সোনা?

এমা! এটাও জানো না? বলে শাড়ি জড়ানো একটা বার্বি পুতুল নিয়ে দেখাত প্রান্তি। এটা আমার মেয়ে বুঝলে?

বুঝলাম। বলে সেদিকে চেয়ে ঐহিক বলত, আহারে! আমার ছোট্ট মা কী পারে এত কাজ করতে? দাও দেখি হাত- পা টিপে দিই। বলে মেয়ের পা’টা নিজের কোলের উপর তুলে নিত সে।

কী করে সেই দিনগুলো শেষ হয়ে গেল এত তাড়াতাড়ি? মাঝখানে এতগুলো বছর সে টেরও পায়নি প্রান্তি এত বড় হয়ে গেল কিভাবে। না, সে কিছুতেই আর মেয়েকে ছেড়ে কোথাও যাবেনা। ইরাবতী যদি তাকে ক্ষমা নাও করে না তবুও সে আর এ বাড়ি ছেড়ে যাবে না। বাকি জীবন প্রান্তি আর ইরাবতীকে নিয়েই সে কাটিয়ে দেবে। নিজের মনেই ভাবছিল ঐহিক।    

বাবা তুমি কথা বলবে তো মায়ের সঙ্গে ? প্রান্তির প্রশ্নে চমক ভাঙল। সে বলল, মাকে তুমি খুব ভালোবাসো তাই না?

মা ছাড়া তো আমার কেউ নেই বাবা।

আর আমি?

তুমি তো এতদিন ছিলে না বাবা। তবে আমি তোমাকেও মিস করি বাবা।

মেয়ের মাথাটা নিজের বুকে টেনে নিয়ে ঐহিক বলল, কোনো চিন্তা করিস না মা। আমি আর কোথাও যাব না। এখানেই থাকব তোদের সঙ্গে। মায়ের কিচ্ছু হবে না। সব ঠিক হয়ে যাবে।

মেয়েকে বলল বটে, কিন্তু বুকের মধ্যে ভয়ের আর দুঃশ্চিন্তার একটা চোরা স্রোত বয়ে গেল তার বুকে। বড় দেরি হয়ে গেল না তো ফিরতে!

ঐহিক ঠিক করল, আজ রাতে বেদভ্যাসের বাড়ি যাবে।বহু দিন ওই বাড়িতেও যাওয়া হয়নি তার।তার স্থির বিশ্বাস পৃথিবীতে কেউ তাকে ক্ষমা না করলেও এই মানুষটি তাকে দূরে ফেলে দেবে না।

সে প্রান্তিকে বলল, মা এলে আমি কথা বলব। তারপর একটু আবদারের সুরে বলল, আমাকে আর একবার চা খাওয়াবি সোনা?

দিচ্ছি। বলে প্রান্তি উঠে গেল।

ঐহিকও উঠে পড়ল বিছানা সেরে। চা খেয়েই বেরতে হবে।

 

 

বিতস্তা ঘোষালের এই ধারাবাহিকটির আগের পর্বগুলো ও অন্যান্য লেখা পড়তে ক্লিক করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত