Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

ঈশানী বসাকের  কবিতা

Reading Time: 2 minutes

আজ ১৪ নভেম্বর কবি ঈশানী বসাকের  শুভ জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার কবিকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।


 

শুদ্ধতা

এক

ঠিক করে কাঁটাচামচে বিঁধে ফেলা মাংসের টুকরো টা একটা যুদ্ধক্ষেত্র হতে পারে। প্লেটটা এসব বহুদিন দেখে কিন্তু রোজকার এই খাদ্যাভ্যাসের দৃশ্য সতত তার ক্ষুধার জ্বালা কে এড়াতে শিখিয়েছে। যতটা সম্ভব রাসায়6নিক সারযুক্ত তারিখ লিখে যে খাবার সুসজ্জিত সুস্থতা নিয়ে বসে তাকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয় রক্তচাপের মাপ কত ? থ্রিলারের মত খাবার সরে যেতে যেতে মন্ডপে পড়ে থাকে পায়ের ছাপ , বসে থাকা মানুষের চাপে কুঁচকে যাওয়া চেয়ারের কাপড়। এসব একটু ঠিক করে নিলেই বুঝবে যে আর কেউ জানতে পারবে না এখানে পুজো হয়েছিল। একটা খুনের মত নিঁখুত উধাও হয়ে যাওয়াটা কার্যপ্রসাধনী। 

দুই

যারা ঘরময় টেলিফোনকে অপেক্ষা করিয়ে বসিয়ে রেখেছে তাদের পুজোর সময় নেই। রাতদিন মনে রাখতেই হিমসিম হতে হতে একটা ফোন আসে এবং শেষটা ঠিক বিরক্ত কোরোনা মা ভারতে আসছি না এটা বলেই চুপ। আবার অপেক্ষা করতে করতে যে বেড়ালটাকে খাবার দিচ্ছেন ওনারা তারা জানেন যে পাশের বাড়িতে খাবার বলতে টকে যাওয়া ভাত। যেদিন আত্মহত্যার গল্প ঘরের মেঝেতে ভেসে আসলো সেদিন চেঁচিয়ে পাশের বাড়িতে বিড়ালটা চলে গেলেই ওরা খাবার দিলো ভালোই। ওদের সেদিন অনুষ্ঠান। চুপ করে খেতে খেতে বিড়ালটা তাকালো। মৃত্যুটা ও সাথে করে নিয়ে বসেছিলো। 

তিন

পা থেকে প্রণাম চলে যাচ্ছে ছোটো ছোটো ছোঁয়ায়। আর না করতে করতে কোথায় না বলার আশাতেই বিজয়া করতে চলেছে কতজন। একটা ছোটো কবর থেকে যে নমাজ পাঠ হচ্ছে তাকে দেখতে দেখতে মনে হয় কেউ চলে যেতে চায় বলেই চিৎকার ফেরায়।শুদ্ধতা লুকিয়ে থাকছে বিষাদেই।

 

 

শুভ লাল
         

ফেরার পথে দেখি একটা মৃতদেহ। খাটে শোয়ানো। দুটো পা লাল টুকটুকে আলতা রঙে রঙিন। মুখ ঢাকা। দাঁড়িয়ে রয়েছি যদি মুখ থেকে ঢাকা সরে। স্ট্রেচার থেকে নামাবার সময় সরলো চাদর। বয়স হবে আমাদের মতো কিংবা সামান্য বছর তিনেক বড়। এক পাশে একটি ছেলে বসে আছে। হাতে কাগজ। মাথা নীচু করে সে ছাপ নিচ্ছে পায়ের। ধরে রাখার বড়ো চেষ্টা মানুষের জীবনকে। তবু সাড়া দিতে পারে না শরীর। ফুল , তেল, ধূপ জুড়ে মৃতেরা ঈশ্বর হয়ে যায়। মেয়েটার ঠোঁটের কাছে সামান্য হাসি। এমন ছোঁয়াচে রোগের কাছে ফিরতে চাই আমি। মনে হয় গিয়ে পাশে বসি। তবুও তো চলে যেতে পারবে না কেউ। বলতে তো পারবে না যে আমার যাবার কারণ ছিল কিছু। আলতার ছাপ কাগজে। বহুবছর বাদে সেই পায়ের ছাপ দেখে অক্ষমতার কাছে গিয়ে চোখ বুজবো আমরা। চিরকাল আলতা দেখলে চোখ ফেরাই। আলতা বড়ো মনে করায় …

 

 

 

ঐতিহাসিক 

প্রতিবার তোমার ঈশ্বর ইতিহাস হয়ে যায়
দুটি নৌকার বিচ্ছেদ তাঁর বিদায়ের কারণ।
প্রতিবার কাশঝোপে নীল দেয়ালের শ্বাস
ঈশ্বরের আগমন তোমার চাওয়ার অভ্যেস।
পূর্বে থমথমে রাগ আকাশের খুনী তবে
চোখের শেষটান,চিন্ময়ী সংসার
দেখো জন্মদিনে তুমি মৃত্যুর বন্ধু হবে।

 

 

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>