আজ ১৮ আগষ্ট কবি ও অধ্যাপক কৌষিকী দাশগুপ্তের জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার কবিকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।
মাঝে চৌকাঠ
ধুধুল সেদ্ধ পোড়া কলমির ডাঁটা
গুগলি শামুক ঝোল বড়জোর নুন
হাইলি ডায়েট ফুড মেন্যু সাদামাটা
জানে না তোমার পেট খাবারের গুণ!
এরও পরে খিদে পেলে ভাত পচা জল
নিমেষে পালাবে ছুটে বালাই আপদ
দুঃখ বিষাদ কেউ পাবে না আমল
রক্ত দিয়েছো তুমি, আমি দেবো মদ!
সিন্ধু নদের তীরে বিজয় উৎসবে
বাইরে দাঁড়িয়ে তুমি, বেড়াল যেমন
চাল পাবে, ডাল পাবে, মহাভোজ হবে
আমার ভাঁড়ার ঘরে দু’খাবলা কম।
কি যায় আসবে তাতে আমিও খাদক
লুকিয়ে রেখেছি ভাগ, লুকিয়েছি মাটি
আমি তো আসলে সেই স’বির জাতক
মৃদু হাসি মুখে যার বুকে কান্নাকাটি।
পাশাপাশি আছি তবু কাছাকাছি নয়
সত্যি কি খাও তুমি কতটা গুজব
জানি না তোমার ঘরে কবে ভোর হয়
স্বাধীনতা একচোখা বাকি মিথ্যে সব।
সামনে ঝুঁকেছে যদি দুই শূন্য হাত
দরজা খোলাই আছে মাঝে চৌকাঠ।
ক্যাসিনো
প্রতিশোধ নেব বলে খাই।
খাই প্রেম করব বলে।
খেতে হয় তাই খেয়ে চলি।
এত খাই তবু সেইসব রিফিউজি রাতে
যখন খাবার থাকে অথচ
খিদে ফুরিয়ে যায়…
ভাবি,
ক্যাসিনোর ভিতরে আমি আর বাইরে সেই মেয়ে
আজও খাদ্য নয়, মাংসের প্রত্যাশী।
আমরা দুজনেই তো সেই তোবড়ানো থালা,
যেখানে ক্ষুধা, মৃত্যু, কাম সব জড়াজড়ি করে থাকে।
বারুদে ভেজা সায়ানাইড যেন…
ভুলিয়ে দেবে রিফিউজি রাত।
এসো, অরুন্ধতি পাশাপাশি বসি তবে।
খিলখিল হেসে ওঠো
অন্ধকারে, অন্ধকারে…
নারীকে, পুরুষকে
সেইসব রাতে তুমি জমি কেড়ে নিলে
সেইসব রাতে আমি পুরুষ হলাম
শিল্পের সেনা কিছু কেটে নিল স্তন
সেই রাতে নারী দেহে ফুল পাঠালাম।
নাভিতে উড়ুতে রাখি রজনীর ঘোর
পাশাপাশি আছি তবু কাছাকাছি নই
আমরা দুজনে আজও দিল্লি-লাহোর।
সেইসব রাতে তুমি তীব্র ফিনিক্স।
জমির বদলে যোনি আলো দিতে চাও
আমার পুরুষ জানে পুরুষাঙ্গের নাম
হো চি মিন, মাও।
কে কাকে মড়ক দেবে কারা মহামারি
কে কার ছদ্মবেশে কারখানা গড়ে
পুরুষ জন্ম নিলে ক্ষয় হয় আয়ু
কিশোরীর ভালবাসা বিষপান করে।
বিষ এত বিষ তবু মিলনের আগে
রাখি লোভ, রাখি প্রেম ভোরের আজান
নারীর হৃদয় নেই, আছে শুধু ক্ষমা
পৃথিবীতে আজও আমি গোলা ভরা ধান।