Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত পাতে রাখুন এইগুলো

Reading Time: 4 minutes

হয় গুমোট গরম নয়তো ঝড়-বৃষ্টি। গ্রীষ্ম জুড়ে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা তো আছেই, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে কোভিড-১৯-এর আতঙ্ক। তাই এই সময় নিজেদের বাঁচতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এই মারণ ভাইরাস চরিত্রবদলের দায়ে প্রতিষেধক ও ওষুধ দুই-ই অধরা। বিশেষ করে বাড়ির শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে সে তার মরণকামড় বসাচ্ছে এই ভাইরাস। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়ানো ও মাস্ক-সাবান-স্যানিটাইজার ব্যবহার করে অসুখের সঙ্গে লড়াই করা ছাড়া এই মুহূর্তে কোনও বিকল্প পথও খোলা নেই। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিনের কোনও অসুস্থতা, অনিদ্রা, মানসিক চাপ, অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধূমপান সব কিছুই রোগ প্রতিরোধ কমিয়ে দেয়। এই সময় শক্তপোক্ত না হলে, পুষ্টি না পেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর তা বিশেষভাবে প্রভাব ফেলে। সুতরাং শরীরচর্চার পাশাপাশি খাবার পাতেও রাখতে হবে এমন কিছু খাবার, যা শরীরকে মজবুত করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধও করবে। এই সাত খাবার আমাদের শরীরকে ভিতর থেকে মজবুত আর রোগ প্রতিরোধী করে তোলে।

কমলা

ei samay

কমলালেবু তে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি৷ প্রতি ১০০ গ্রামের মধ্যে ৫০ মিলিগ্রামই ভিটামিন সি থাকে৷ স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্য এই ফল শুধু খেতেই মজা নয়, এতে রয়েছে খুবই কম ক্যালোরি৷ এক গ্লাস কমলার রস প্রতিদিন সকালে পান করলেই দিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-র অভাব পূরণ হয়ে যাবে৷ তবে শুধু কমলার রস নয়, ভেতরের সাদা অংশে থাকে যথেষ্ট আঁশ, তাই পুরো কমলা খেলে আরো বেশি উপকার পাবেন৷

লেবু

ei samay

আমরা প্রাত্যহিক জীবনে লেবু, সকলেই কম বেশি খেয়ে থাকি। সাধারণত খাবারের স্বাদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হয় । আবার অনেকে এটির আচার তৈরি করেও খেয়ে থাকেন। লেবু আকারে ছোট ফল হলেও এর উপকারিতা প্রচুর আর পুষ্টিগুণেও ভরপুর। লেবুর উচ্চ ভিটামিন যা শরীরের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বৃদ্ধি করে যে কোন ভাইরাস জনিত ইনফেকশন যেমন ঠান্ডা, সর্দি, জ্বর দমনে লেবু খুব কার্যকারী, মুত্রনালীর ক্ষত সারাতেও লেবুর গুরুত্ব রয়েছে। যারা খাবারে যথেষ্ট পটাশিয়াম গ্রহণ করে না, তারা সহজেই নান রকম হৃদরোগে আক্রন্ত হয়ে পড়ে। লেবুর রসে যথেষ্ট পরিমান পটাশিয়ামরয়েছে যা হাইপার টেনশন কমাতে সাহয্য করে। যাদের হালকা শ্বাসকষ্ট আছে, তারা নিয়ম করে খাবারের আগে এক চামচ লেবুর রস খেতে পারেন। যারা মাইল্ড অ্যাজমায় ভুগছেন, লেবুর রস তাদের জন্য ওষুধের বিকল্প হিসেবেই কাজ করবে।

তরমুজ

ei samay

গ্রীষ্মকালে যেসব ফল আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে তার মধ্যে তরমুজ একটি উল্লেখযোগ্য ফল। চৈত্র ও বৈশাখ মাসে খুব বেশী পাওয়া যায়। তরমুজের মন কাড়া রং আর রসাল মিষ্টি স্বাদের জন্য সবার কাছে এ ফলটি অত্যান্ত প্রিয়। গরমের সময় তরমুজ আহারে দেহমনে প্রশান্তি আনে। শুধু তাই নয় পুষ্টি গুনে ভরা তরমুজ দেহের পুষ্টি চাহিদা দ্রুত পূরণ করে। তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। যাঁরা গরমে কাজ করে বা যাদের বেশি ঘাম হয়, তাঁদের নিয়মিত তরমুজ খাওয়া দরকার। এতে শরীর তাড়াতাড়ি দুর্বল হয় না। তরমুজে যে পটাশিয়াম থাকে তা মানব দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। পুষ্টিবিদদের মতে তরমুজহৃদরোগ, হাঁপানী, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) রোগ প্রতিরোধেও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে।

শশা

ei samay

শশায় রয়েছে প্রাকৃতিক ব্রেথ ফ্রেশনারের গুণ। পোকামাকড়ের হাত থেকে যে পলিকেমিক্যাল শশাকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে সেই পলিকেমিক্যালগুলিই দুর্গন্ধ উত্‍পাদনকারী ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়তে সাহায্য করবে । মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য শশার একটা টুকরো নিয়ে মুখের মধ্যে ৩০ সেকেন্ড রেখে দিন । শশায় ভিটামিন সি, বিটা-ক্যারোটিন, ম্যাঙ্গানিজ, ফ্ল্যাভেনয়েডস, ট্রিটারপেনেস, লিগনান নামের পলিফেনল অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে, শরীরের ব্যাড কোলেস্টেরল কমাতে এবং রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে |

টক দই

ei samay

এতে আছে প্রচুর পরিমান ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি, যা হাড় ও দাঁতের গঠনে সহায়ক। টক দইয়ের ব্যাকটেরিয়া অত্যন্ত উপকারী। এটা শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়িয়ে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। এতে আছে ল্যাকটিক অ্যাসিড, যা কোষ্টকাঠিন্য দূর করে ও ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে। যারা দুধ খেতে পারেন না বা দুধ যাদের হজম হয় না, তারা অনায়াসেই টক দই খেতে পারেন। কারণ টক দইয়ের আমিষ দুধের চেয়ে সহজপাচ্য। ফলে স্বল্প সময়ে হজম হয়।

আম

ei samay

গ্রীষ্মের অন্যতম রসালো এই ফল পুষ্টিগুণে ভরপুর। যা শরীরের ভিটামিনের অভাব পূরণের পাশাপাশি কর্মশক্তি যোগায়। এছাড়া রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, যা শরীরে শক্তি তৈরি করে। আমের আয়রন, আঁশ, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও খনিজ উপাদান শরীর সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে। ক্যারোটিন চোখ সুস্থ রাখে, সর্দি-কাশি দূর করে। কাঁচাআমে ৯০ মাইক্রোগ্রাম এবং পাকাআমে ৮,৩০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন থাকে। আম থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। দাঁত, মাড়ি, ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন সি।

পুদিনা

ei samay

পৃথিবীতে এমন অনেক ধরনের উদ্ভিদ আছে যেগুলোতে প্রচুর ঔষধি গুণ রয়েছে। পুদিনা পাতা তার মধ্যে অন্যতম। সাধারণ আগাছা ধরনের এই গাছটির কাণ্ড ও পাতা উপকারি। পুদিনায় রোজমেরিক অ্যাসিড নামের এক ধরনের উপাদান থাকে। এটি প্রাকপ্রদাহী পদার্থ তৈরিতে বাধা দেয়। ফলে অ্যাজমা হয় না। যাদের শরীরে বেশি ঘাম হয় তারা পুদিনা পাতা ও গোলাপের পাপড়ি একসঙ্গে মিশিয়ে পানিতে ফুটিয়ে নিন। ঠাণ্ডা হলে সেই পানির সঙ্গে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে ছেঁকে নিয়ে বোতলে করে ফ্রিজে রেখে দিন।

 

 

 

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>