আজ ১৬ সেপ্টেম্বর কবি মীনাক্ষী মুখার্জীর জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার কবিকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।
শিশিরবেলা…
বুকের উপর প্রগতির ছায়া
ছাইদানি ভরে উঠছে অস্থিতে
রক্ত মাংসের জীবাশ্ম শুষে
আমার চোখের নিত্য শিশিরবেলা
মেদুর রোদে মিথ্যানবীর তৃষ্ণা
স্মৃতির ব্যালকনিতে ভিড় করা
সময় এখন ক্লোরফর্ম মিশিয়ে
একাকী করে ক্লান্তমনকে
নিদাগ কাঁচে মনের ছায়ায় মন ঝাপসা
কোনোদিন ফিরবে না জানি
তবু যে জোনাকির পাখায় লিখেছি –
‘আমি তুমি, তুমি আমি'(এক অন্তর)
নিরুদ্দেশ আজ সে প্রণয়ীআলেয়ায়
তবু প্রতিশ্রুতির পিছুডাক সাজানো
আমার আকরের পেয়ালায় পেয়ালায়
গ্রীণ
ব্ল্যাক
রেড
সাদা পেয়ালা
চিরকুট
মৃত্যুর আ………. ডাকছে মেঘ
অবশেষ চিরকুট আজ পাখি
হারানো খেলনাটা প ‘ড়ে –
জাহাজের পুরোনো মাস্তুলের সাথে
আমি দেখছি না ।
বরং দেখব সমুদ্রের আদিবাসীরূপ
আমার মুদ্রা মাদলভরা ঢেউ
ঝ ‘ ড়ে পড়বে অসুখ ,
হাঁড়িয়া খাবে
সাদা পালকের যৌনতা , গা বেয়ে
ঝড়ন্ত নীল গরল
সমর্পিত জীবনে তড়িৎ ছটায়
পার করবে জন্ম
আমি দূরে ……………..
দেয়ালে পড়ি ধূলোর বালক লেখা ।
কোষবিভাজন
গর্ভের দৃশ্য আহত পশম
প্রদীপ্ত তিমিরতা – দৌড়ে শৈশবনাবিক
মাংসল কান্না – সমীকরণে স্ফুটনাঙ্ক
অনন্ত নিদ্রা স্নান করছে আক্ষেপজল
কোষবিভাজন গল্প বিলায়, লালিত জিহ্বাগ্র
আর্তনাদ শুশ্রূষাবিষ মর্ম মানবীর
চুমুকে জ্বলন্ত লাভা সুপ্ত আগ্নেয়
তথাকথিত…
পুতুল বউ
কতবার লিখেছি চোখের জমা জলে
আমার রিক্ততা ‘ওহ………….! ‘(নিশব্দ)
স্তব্ধ! প্রেমহীন পোশাকের বোতাম
অমলিন ছোঁয়ায় পরতে পরতে মরচে ধরা
শরীরে মিশে যায় ঝাঁঝাল নোনতা
আর্শিতে আমি অগ্নিদগ্ধা
আবার জোনাকির আলো – ছায়ায়
পুতুলবউ – তিতিক্ষা গোপন নারী ।
তাইতো! কতবার লিখেছি চোখের কাজলে
আমার নীরব পুতুলখেলা!
হয়তো কোন এক দুপুর…..
আলো আঁধারির খেলায়
যে ছেলেটা খাতা পেনন্সিল হাতে
ব্যক্তিগত বানানে ইরেজার ঘষে
অথবা কাটাকুটি খেলে কড়াইয়ে
প্যারিস তোলপাড় হয় তারই বুকের
আধখোলা পাঞ্জাবী পুরুষত্বের রোমে
হয়তো দেখা হয় দূরের ছায়ায় ঋজুমন
কোন মাধ্যন্দিন নারী নিজের সন্ধানে
স্নান সেরে বেরিয়ে আসে সান্ধ্যপ্রদীপ হাতে
উজ্জ্বল দ্যুতিময়ী যেন পূর্ণচন্দ্রিমা রূপে
তখন তোমার নিরিখ পারদ বিন্দুতে
জমা ঘাম থার্মোমিটারের চূড়ান্ত ডিগ্রীতে
স্বপ্নভঙ্গ থার্মোমিটার জ্বর শূন্য………….
অমসৃণ ক্ষতের বৃষ্টিরেণু লেগে থাক মরুকান্নায়
মহিম
নি:সঙ্গ দুপুর – মহিম
নিশ্চুপ রোদ্দুর তরল হয়ে
আমার শরীর পাড়ি দেয়।
মৃতস্বপ্নবাহক ছায়া জেগে থাকে নেশায়
এঁকে দিই বৃত্তে – চোখ, নাক, ঠোঁট…
ক্লান্তির বলিরেখা দিয়ে বয়
ক্ষয়াটে চুম্বনে আমার দাহ –
জন্ম নেয় আবার : রূপকথার ভালোবাসা।
ল্যাবরেটরি জানালায় বয়স
ফেরারি হয় নি কোনদিন ল্যাবরেটরির জানালা পেরিয়ে বয়স। টেস্ট টিউবে ধোঁয়া হয়ে যাচ্ছিল আমাদের নক্ষত্র সময়। গ্লেসিয়ারের মতো চোখের জল খুঁটে খেয়েছে জ্যোৎস্নাভুক রাত। ঘাসের ডগায় শিশিরের কম্পন ছিল না তবু। শুধু ছিল এক চিলতে জায়গা! ভয়ঙ্কর খেয়ালীপনায় আনাঘ্রাত সাওয়ার তোর সাথে তোর পায়ের ফাঁকে…… জন্ম দেব ! আর সেদিন থেকেই আমার মৃত্যু বিয়োগী সেকেন্ডের জন্ম দিচ্ছে বলে বলে….
কৌণিক ছায়া
তিন পুকুরের সহবাসে জেগে থাকা তালগাছ….
তার তলে ছায়া পাখি ছায়া ফেলে যায়। তোমার দ্বীখন্ডিত জিভ কাল কেউটের মতো লকলক করত তবু ছুঁতে পারে নি আমার ক্লিভেজ। ডটপেনের শিসে ভরা রক্ত ভুল বানানের চিঠি লিখে গেছে বিষ পিপাসায়। আমার ইতিহাস বইয়ে কনিষ্কের মুণ্ডহীন ছবিতে বহুবার দেখে নিয়েছি তোমার মুখের গোপন ইতিহাস। সেদিন থেকে তোমার নগ্নতা তাম্রপত্রে খোদাই করি অন্ধকারে …….
তবু কৌণিক ছায়ায় আমি অনাবৃত । তোমার বিমষর্তায় লেখা হবে “ নির্বাণ “!
