| 6 অক্টোবর 2024
Categories
অনুবাদ অনুবাদিত কবিতা

পঙ্কজ গোবিন্দ মেধি’র তিনটি অসমিয়া কবিতার বাংলা অনুবাদ

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট

 

Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,pankaj mehdi

১৯৬৮ সনে কবি পঙ্কজ গোবিন্দ মেধির জন্ম হয়।পাঁচটি কাব্য গ্ৰন্থ এবং পাঁচটি উপন্যাস ছাড়া ও পত পত্রিকার নিয়মিত স্তম্ভলেখক।২০১৯ সনে আকাশবাণী চেন্নাইর দ্বারা অনুষ্ঠিত ৬৪ তম সর্বভাষা কবি সম্মেলনে শ্রীমেধির ‘রিক্সা’কবিতাটি নির্বাচিত হয়।শ্রী মেধির কবিতা ভারতের অন্যান্য ভাষায় অনূদিত হয়েছে।


 

ভগবান

 

বেদের আগে ভগবান ছিল না

খ্রিস্টের আগে গড ছিল না

মহম্মদের আগে আল্লা ছিল না

 

মানুষ ছিল

 

বেদের জন্ম হয় ছয় হাজার বছর আগে তাই

ভগবানের বয়স ছয় হাজার বছর

 

খ্রিস্টের জন্মের দুই হাজার ষোলো বছর আগে বলে

গডের বয়স দুই হাজার ষোল বছর

মহম্মদের জন্ম চৌদ্দ শো চুয়াল্লিশ বছর আগে বলে

আল্লার বয়স চৌদ্দ শো চুয়াল্লিশ বছর

 

তারও কয়েক নিযুত বছর আগে জন্ম লাভ করার জন্য

মানুষের বয়স কয়েক নিযুত বছর

 

মানুষের বয়স অনুসারে ঈশ্বরেরা যুবক বলে

ঈশ্বরদের সঙ্গে মানুষ যুবকের মতো ব্যবহার করে

 

চুমু খায় কোলে নেয়

রাস্তার পাশে বসিয়ে রাখে জলে ছুঁড়ে ফেলে দেয়

পাপের মাথায় টুপি পরিয়ে দিয়ে শ্ত্রু ছেড়ে ফরিস্তাকে পাথর ছোঁড়ে

সোনা দিয়ে বাড়ি তৈরি করে মূল্যাবন পাথরে ঘর তৈরি করে

মানুষ বন্দি করে রাখে অদৃশ্য ঈশ্বরদের

জ্ঞান কম বলে সামনে জ্বালিয়ে দেয় প্রদীপ অথবা মোমবাতি

ক্ষুধায় কাতর বলে খেতে দেওয়া হয় প্রসাদ বা সে

অন্ধকূপে থাকে বলে গলায়ে গেঁথে দেওয়া হয় মালা অথবা মাথায় মুকুট

 

যুবক ঈশ্বরদের এই দুর্দশার জন্য বয়স্ক মানুষরাই দায়ী

মানুষের মগজের পরিপক্কতার জন্য এই অনুশীলন অতীব প্রয়োজন

 


আরো পড়ুন: নীলকান্ত শইকীয়ার’র একগুচ্ছ অসমিয়া কবিতার বাংলা অনুবাদ

 

রিক্সা

 

তিনটি চাকা

আমি

পত্নী

কন্যা

প্রথম চাকাটা আমি

ডানদিকের চাকাটা পত্নী

বাঁদিকের চাকাটা কন্যা

 

সংসার টেনে নিয়ে চলা রিক্সাটিতে

আরোহী হল সময়

 

সময় সদয় হলে

সংসারে দুটো পয়সা আসে পথে চাকা ফাটে না

 

সংসার ঠিকই টেনে নিতে চাওয়া এই রিক্সা

প্রায়ই দুঃখের গর্তে পড়ে

 

তিন চাকার এই রিক্সায় নেশাশক্ত উঠলে নেশায় রিক্সা কাঁপে

যানজটে আটকে গেলে বামদিকের চাকার আবার নতুন নতুন আবদার বাড়ে

পুলিশ এসে ডান চাকায় পিন ফুঁটিয়ে হাওয়া বের করে দেয়

কী রিক্সা এই জঞ্জাল সংসার

পত্নী কাঁদতে শুরু করে

 

সময় টেনে নিয়ে চলা রিক্সার আমি সামনের চাকা

 

প্রচণ্ড গরম এবং অসহ্য শীতের দিনেও আমি বেরিয়ে আসি

পেছনের চাকা দুটো আসতে না চাইলে ছেঁচড়ে নিয়ে আসি

অশান্তিতে বিড় বিড় করতে থাকলে সুবিধা বুঝে ব্রেক টেনে ধরি

ভয়ে ভীত রিক্সা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে

 

আমি সামনের চাকা মদের আড্ডায় যাই সুখের খোঁজে

জুয়ার আড্ডায় যাই সঙ্গীর খোঁজে

পর-নারীর বাসরে যাই পত্নী-কন্যার খোঁজে

কোথাও কেউ নেই কোথাও কেউ থাকে না

 

জীবন পথের রোদ বৃষ্টিতে

তিন চাকার রিক্সাটাই চলতে থাকে

 

 

 

 

জামা

 

আমার শরীরের গন্ধ লেগে থাকা জামাটা আমার

 

আপনার শরীরের গন্ধ লেগে থাকা জামাটা আপনার

 

দোকানে থাকা জামাটার নিজস্ব একটা গন্ধ আছে

 

জামাটাতে দোকানির শরীরের গন্ধ নেই বলে

জামাটার মালিক দোকানি নয়

 

নিজের শরীরের গন্ধ নিয়ে জামাটার মালিক জামাটা নিজেই

 

সেই জামাটাকে কিছুক্ষণ আগে

একটা দোকানে দেখে এসেছি

 

জামাটা নিজের শরীরের গন্ধ বিক্রি করার জন্য অপেক্ষা করছে

 

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত