মুহূর্ত
১
সব তোলপাড় পাড়ের কাছে
ভেতরে শিরশিরে নির্জনতায়
আকুল সাঁতার কাটছে ডানাভাঙা একা হাঁস
কুকুরের ত্বকের মত ঢিলেভাবে
লেগে আছি
এগোব কি
আমার ঘুম এসে যাচ্ছে!
তুমি যত উঁচুতে তত বেশী খণ্ড হয়ে
ঝরে পড়ছ বিস্ফারিত শিখার ছটায়
এত রঙ এত রঙ
ভেতরে কি শান্ত নয়
এত জল কে ছড়াচ্ছে?
২
তুমি যে দরজা রাখো
তার ওপর হাওয়া চলাচল
বন্ধ করেছ
আমি ফেঁসে গেছি জল খেতে এসে
সাদা কালো এপ্রদেশে হাসি রাগ নক্সা মৃদুস্বর
পরিমাণমতো
বৃষ্টি কাদা বর্মাঘাস কেঁচোর মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছি
এখানে তোমার কোনও গান বাকি নেই
৩
মুহূর্ত দেবতা নয়
মুহূর্ত ঘাতক
সময়ের সঙ্গে তার গভীর শত্রুতা
যেমন অপরাহ্নে আমি জল থেকে গাছকে বাঁচাই
সেসময় ভাবো তুমি কত অল্প তোমার গ্রন্থনা
কতদিন পর কেউ ইতিহাস হয়
কতদিনে ইতিহাস মোছে
তুমি নেই কোত্থাও
কেউ নেই যেখানে যে ছিল
আমিই নিয়েছি জিতে
বরফ আর বালির পাহাড়
পাদদেশে নেমে আসা রক্তের নিপুণ কারুকাজ!
৪
ছোট হতে হতে
কোথায় নেমেছি?
কীভাবে সহ্য করছি
এত মহামানুষের পায়ের চাপ
মহামানুষেরাই বা আমার মাথা কেন লক্ষ্য করছেন?
ভয় নয়
অনুসন্ধিৎসা
কাঁটায় গাঁথার আগে পিছলে গেছি
আমার ওজন তাই বুঝতে না পেরে হাতড়াচ্ছে সবাই
ছোট হতে হতে নেমেছি এখানে
নাকি বাড়তে বাড়তে?
সব্জিওয়ালার চটের নিচে চুপচাপ ঘুমানো অগোছালো নোট
ময়লা নিস্পৃহ
সঞ্চিত হতে হতে
নাকি অপচয়?
৫
ভগ্নসেতু
সূর্যোদয়
লালমেঘ
স্নান
এখানে জলের দেশে
রেখেছি যে প্রতিবিম্ব
আমার প্রকৃতি
সেও ম্লান
৬
বোকাবোকা যে লাইনগুলো শুনলে তুমি খুব মাথা নাড়ো
শেষমেশ ওদের জড়ো করে জ্বালিয়ে দিয়েছি
এবার লিখতে শুরু করব ‘জরো’রজ আর ‘জ্বালিয়ে’র জয়বয় নিয়ে।
বুঝতে না পেরে তুমি ভয়ে সেঁদিয়ে যাবে জয়ের নিচে উঁকি দেওয়া ওই নটি-বয়ের আস্তিনে
সুতোর ফাঁক দিয়ে গোটা পৃথিবীটাই তোমার জালজাল খাঁচার মত লাগবে!
তুমি খুশী হয়ে ভাববে
বেশ তো সবাই-ই আমরা
লুকিয়ে লুকিয়ে ভাগাড়ের গন্ধ নিই
৭
পাগলের সঙ্গে মানুষ পাগলই হয়
কত আশা কর তুমি?
কত ভাল হবে একজন?
কত সহ্য করবে বোকামি?
তোমার করুণা শুধু অসুস্থের প্রতি
সুস্থতা অতি সাধারণ তুচ্ছ ব্যাপার; না?
তাই তুমি অসুখ ভালবাস?
আর যে উত্তেজিত হচ্ছে
আর যে তিতিবিরক্ত হচ্ছে
আর যে ক্ষুব্ধ হচ্ছে
সে দুর্বল নয়?
দুর্বলতা রোগ নয়?
তাকে ভগবানের মত নির্বাক
সব বিষ গিলেও স্থির থাকতে হবে?
তবে তুমি এসো
ভালবাসা যেদিকে খুশী যাক
তুমি করুণা দাও
স্তন্যপায়ী তৃষ্ণার্ত কাতরাচ্ছে কতযুগ