আজ ০৬ নভেম্বর কবি নির্মলেন্দু কুন্ডুর শুভ জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।
শুধুই তোমার জন্য
জীবনের শেষ রক্তবিন্দুটুকুও
করেছি অপব্যয়।
ঘর্মাক্ত
মননেও করে গেছি
পরিশ্রমী চিন্তন।
দীপশলাকার ক্ষণস্থায়িত্বকে সঙ্গী
করেও
আলোকিত করতে চেয়েছি বিশ্বভুবন।
নগ্ন পদযুগল রক্তাক্ত হলেও
পেরোতে
চেয়েছি দুর্লঙ্ঘ্য গিরিবর্ত্ম।
আর আজ-
জীবনের অন্তিম লগ্নে
দাঁড়িয়েও
পুনরাবর্তিত করতে চাইছি জীবনচক্রকে।
ফিরে যেতে চাইছি
শুরুর সেই
শোভন মুহূর্তে।
করতে চাইছি শূন্য থেকে শুরু।
শুধুই তোমার জন্য……..
ভবিতব্য
আবার এসেছে সেই ক্ষণ,
ক্ষণ এক রাজা বদলের।
বদলাবে রাজা-মন্ত্রী
সব
আসবে বদল কলা আর কৌশলের।
বদলাবে না তোমার-আমার নসিব,
যেমন চলছে,চলবে
ঠিকই তা।
উপশমের আশায় থেকে থেকে
খুঁচিয়ে আরো বিষিয়ে তুলব ঘা।
নতুন রঙের
পড়বে প্রলেপ দেহে,
অন্তরের কালিমা থাকবে অটুট,
আগের মতোই খনার বচন
হবে,
তফাত শুধুই হবে সে সব ঝুট!
নিত্যনতুন ফিরিস্তি যে পাবে
ঘটমান কালের দীর্ঘশ্বাস,
কথার কথাই রয়ে যাবে কেবল
কারোর কোন মিটবে না তো
আশ।
স্বপ্নগুলো পাবে পঞ্চত্ব,
না পেয়ে আর বাস্তবতার পরশ,
নীতি-বিবেক জলাঞ্জলি দিয়ে
দুর্নীতি পাবে নেতাদের ঔরস।
বৈধতা আর অবৈধতার মাঝে
দুলবে
শুধুই দাঁড়িপাল্লার কাঁটা,
বরাভয়ের ইঙ্গিত দিয়ে দিলেও
ভয় দেখাবে ডান-বাম
আর ঝাঁটা।
আবার আমরা মাতবো যে উৎসবে
অর্থহীন উল্লাসের শরিক হবো,
তবু
থাকবো ধৃতরাষ্ট্র হয়ে
অন্ধ হয়েই ‘অমূল্য’ মত দেবো।
অভিসার
নতুন ঠিকানা খুঁজে
চলে যাব একদিন
নিরুদ্দেশ কোন অভিসারে,
পরিযায়ী পাখিদের মতো
উড়ে যাব—
উষ্ণতার খোঁজে৷
খুঁজে নেব পলাশের ঘ্রাণ,
সুরেলা ওমের ছায়া,
ছুঁয়ে যাব কথকতা যত,
আছে যত খেয়ালী দেয়ালা৷
তারপর মিশে যাব
অস্তগামী সূর্যের ছায়ায়,
হয়তো কাটাবে আঁধার
কোন এক অনামী সাঁঝবাতি৷
রোমন্থন
মুখোশ সরিয়ে নিলে
আলো পায় রক্ত-মাংস-হাড়
নিজের নিয়মে৷
পথ পায় কানাগলি সব
গিয়ে মেশে প্রশস্ত রাজপথে৷
তারপরে মন বলে
অহেতুক উচাটন
ছিল তবে এতদিন,
ছিল শুধু মোহময়
আমাদের সেই ভালোবাসা!
দেখেছিল চোখ দুটো
মুখোশের যত কারিকুরি,
অথচ সে মুখ ছিল
অবিরাম গোপনে—
এমনই নিপুণ কারিগরি৷