তুমি না থাকলে সন্ধেটা এত মিষ্টি হত না
ছেলেবেলায় প্রথম যে শহরটা স্বপ্নে এসেছিলো সেটা ছিলো দার্জিলিং আর স্বপ্নের গহীনে যে মানুষটার সামনে দাঁড়িয়ে বিস্ময় আঁকছি সেটা ছিলো অঞ্জন দত্ত।
স্বপ্নে ভাবতাম রেলগাড়িতে করে পাহাড় কেটে-কেটে মেঘ ছুয়ে-ছুয়ে সব্বাই মিলে হইহুল্লোড় করে যাচ্ছি স্বপ্নের শৈল শহরে।কিন্তু সে স্বপ্নটা শুধু স্বপ্নই থাকতো। কোচবিহারে থাকা সেইসব দিনগুলোতে দূরে বেড়াতে যাবার ভাবনাটার কোন রুপ দেয়া তখন সম্ভব ছিলো না। ঠিক একই ভাবে অঞ্জন দা’র সামনে দাঁড়াবার সুযোগ ছিলো না।
আমার কাছে অঞ্জন দত্ত এসেছিলো, চৈতন্য মিষ্টান্ন ভাণ্ডার থেকে। রোজ বিকেলে সন্দেশ কিনতে গেলে শুনতে পেতাম অঞ্জনদার গান বাজছে। আমার প্রথম বেলাকার গান শোনা দিনগুলোতে যদিও অঞ্জন দা’র গান ছিলো তৃতীয় সারিতে তবুও সেটা অম্লান।
আমাদের বাড়িতে তখন পর্যন্ত গান শুনবার কোন মানুষ ছিলো না কিন্তু একটা রেডিও ছিলো, সেখান থেকে প্রায়ই অঞ্জনদার প্রথম দিককার করা গানগুলো মাঝে মাঝে শুনতে পাওয়া যেত, তখনকার দিন অব্দি আমার কাছে সেটাই ছিলো অনেক কিছু।
এরপর সীমানা পেরিয়ে দেশান্তর হলাম অঞ্জনদা’র মেরিয়ান গানটাকে সম্বল করে। অসম্ভব ভালো লাগতো বলে একটা মোটা মেমকেও জুটিয়ে নিয়েছিলাম, মালা’র কথা আজ নাই বা বললাম। এভাবেই গানের সূত্র ধরে পেলাম ববডিলানকে, আর অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথও চলে এসেছিলো সুমন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে।
আমাদের অবসর দিনের বিকেল তখন এইসব গানময় থাকত। প্রেম আসার আগেই প্রেমের ঠাকুর ও সেই সাথে বিরহের রাজা দুটোই হয়ে গিয়েছিলাম অঞ্জনদা’র গান ধরে।
আর শেষ প্রণয় ভুলেছিলাম তা’রই করা সম্পর্কের গানটি শুনে।
জীবন নগরের সুপার ফ্লপ একজন…
দহন সম সরলবৃক্ষ। ছন্দপতন পছন্দনীয়। অনুভূতির জানান দিতেই শব্দকল্পনার জন্ম দেই। প্রথাগত সাহিত্য বা শিল্পের জন্য কখনো সৃষ্টি করার প্রয়াস সঞ্চারিত হয় না বলেই নিরন্ন নিকোলাস হয়ে বছরের পর বছর কেটে যাচ্ছে। জন্মের পর থেকেই পড়তে ভালোবাসি সেই সাথে প্রতিষ্ঠিত বা জনপ্রিয় মানুষের সঙ্গ থেকে অরণ্যে থাকতে পছন্দ করি।একদিন বিরাট কিছু হবার বাসনা নেই বলে লোভ ছুঁতে পারেনি, যে কারণে এখনো মানুষ হয়ে আছি, কবি কিংবা লেখক হয়ে নয়।
____________________________________
যা বললাম, এর’চে অধিক জানতে চেয়ো না।
না জেনেই মসৃণ পথ সৃষ্টি হয় আর জানলেই বিরক্তি বাড়ে।