আজ ১২ জানুয়ারী কবি ও কথাসাহিত্যিক শিশির রাজনের শুভ জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।
পৃথিবীর শেষ পাঠশালা
পৃথিবীর শেষ পাঠশালায় মানব দেবতা
সূর্য ঘণ্টায় বাজে আদিম খাতা
আমাদের পিতা চাষের দহনে শরীর পোড়ায়
মাতা সবুজ নদী, ভোরের পাহাড় চূঁড়ায় মোরগ ঝুঁটি
নাচে প্রাণ
দূর অরণ্য লতায় মনে পড়ে শৈশব
বন্ধু, মাটি আমার চোখের ভূগোল
পৃথিবীর শেষ পাঠশালায় শিখি মানুষের হৃদয়
নদী আর সবুজের শ্লোক
পিতার শক্ত পেশির আদর।
অথবা তুমি
সমুদ্র গভীরে সমুদ্র দেখি না!
ফেলে আসা খাম; ডাক বাক্স
বুকের উনুন
আমাকে জড়িয়ে রাখে রমনার ঘাস
হলদে হাসির শব্দ
সুন্দর চক্রান্তে নিষিদ্ধ সিঁদুর
তোমাতে ডুবে টিএসসির
হেঁটে চলা মেঘের সন্ধ্যা
সমান্তরাল স্রোত; চলেছি রেখার বৃত্তে।
মুখ বাজির ঘোড়া
নিঃসঙ্গ রাতের সিম্ফনি
তোমার গভীরে তোমাকে দেখি
সমুদ্র লবণে; জলের মহীয়ান বৃক্ষে!
জলভূগোল
সমুদ্র জলের ডাহুক; অতল
গোধূলির ধূলোতে শীতল বাতাস
কে উড়ায় মন, কার কাছে নতজানু বিশ্বাসী উচ্চারণ
কেইবা যাবে বৈরাগের বিকল্প সন্ন্যাসে!
রাত মন্দির, ঘন ছায়া
নীল দৃশ্যে পাতার শব্দ
জীবন জেলেদের গান; নৌকার একতারা
পথ ফুরায় নিথর নৈঃশব্দের গিটার
চোখ মায়াময় জলের ভূগোল।
ঠোঁট
আষাঢ়ের বৃষ্টি রঙ; নির্ঘুম চোখের খোলস
এ শহর মেঘের ঘুড়ি মৃত মহড়া
দূরে বিষণ্ন নাবিক
ঝড়ের দ্যোতনায় বিগত পারফিউম
আমাদের ভেজা গানে পাখি উড়েছিলো
আদুরে ঠোঁট শুধুই নদীর কথা বলে…
মৃত্যু
নীল জ্যোৎস্নায় ভেজা নদী; কুহক জল
মৌন ক্যানভাস গাছের নিবিড়!
রাত পাজরে মৃত্যু আসে
অথচ প্যাগোডায় ধ্যানের শব্দ
মাতাল প্রেমিক
প্রতিবিম্বে জোড়া ঠোঁট কেঁপে ওঠে
আবার জাগবো কোনো মহুয়ার জলে; মানুষের উৎসবে!
চড়ুই
ভেজা নেশার মরফিন
রাত চুম্বনে আকাশ রঙিন বসন্ত বন্দনায়
মৃত মলাটে কাব্য সুন্দরীরা চড়ুই পাখি
পিপাসা ভৈরবী!
মন্দিরের ঘণ্টায় কেউ খুঁজে নেয় গত জন্মের পুরুষ বৃত্তান্ত।
প্রতীক্ষা
জানালা খোলা রেখো-
নির্জন শীতে অথবা ঝুম বৃষ্টিতে
আমাকে পাবে হৃদপিণ্ডের অগাধ দরিয়ায়
শূন্য বাবুই ঘরে।
অনুভব
শহর জেগে ছিল
ধ্রুপদী তন্দ্রায়
হয়তো তুমিও শুনেছো ভোরের সরগম।

কবি