মধ্য আগস্টের লাল চাঁদে কালো রক্ত জমাট বেঁধেছে টুপটুপ রক্তের ম্লান ফোঁটা কখনও সখনও ঝরে পড়ে অসাম্প্রদায়িকতা এবং বাঙালির দীপ্র জাতীয়তা কখনও ঝরেছে পড়ে ন্যায়- বিচারের কিছু ছিটেফোঁটা।
মধ্য আগস্টের লাল চাঁদে জমাটি রক্তের বুকে হিম সুগভীর ষড় নৃশংসতা মানবিকতার মৃতআত্মা। আজ আমি রক্তাক্ত সে চাঁদ বুকের ভেতরে বেঁধে রাখি, আমাদের সামনে কেবল কী ভয়াল রক্তাক্ত প্রান্তর।
আমাদের গায়ে লেগে থাকে পিতার বুকের তাজা খুন টুপটাপ ঝরছে সাহস বিশ্বাস এবং ভালোবাসা। তোমাকে এবার দেবো বন্ধু রক্তের ফোঁটায় রাঙা লাল নাকফুল কানের দোদুল অস্ফূট দু:খের ম্লান ক্ষোভ।
প্রতিদিন ধুকে ধুকে ঝরে বাঙালির চিরায়ত গান; শুধু আগস্টের লাল চাঁদে কালো রক্ত পিতার, জাতির।
শ্রাবণের রক্তস্রোত
শ্রাবণের জলধারা বঙ্গীয় বদ্বীপ বুকে সহস্র বছর বয়ে যাবে পিতা শেখ মুজিবের রক্তস্রোত একাকার বুড়িগঙ্গা তুরাগের জলে যখন অঝোরে ঝরে কালস্রোত কামালের জামালের রাসেলের এমনকি আবাল বৃদ্ধ বনিতার বুলেটবিদ্ধ বুক থেকে
এ-আকাশ কতো মেঘ ধরে রাখে কতো বজ্র বিজুলি চমক বাংলার মাটি ঘাস বাড়ীর উঠোন আর শাড়ীর আঁচল তারচেয়ে কালো মেঘে ঢেকে থাকে পাথরের বুকচাপা কান্নার দমকে এখানে ট্যাঙ্কের মুখ আর রাইফেলের নল থেকে কতো বজ্রপাত
নিরুদ্দিষ্ট পিতার প্রতীক্ষা আমাদেরও টেলেমেকাসের মতো আমাদেরও পেনিলোপি বঙ্গজননীর কাঁথা নকশী করার ছল করে ঘরে ফেরে কতো পাখি কতো বীর সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গ ঠেলে শ্রাবণ আমাকে শুধু কানে কানে প্রতি বর্ষে জলক্ষোভে বলে যায় পিতা আর ফিরিবে না অর্বাচীন টেলেমেকাসের ঘরে বিষণ্ন জংলায় বাংলার পথঘাট পিতার রক্তের শ্রোতে ভেসে যায় অনন্ত শ্রাবণ জলে
পথ চেয়ে থাকি
রক্তজবার মতোন টকটকে লাল বৃষ্টি নামে লতাপাহাড়ের ধারে বেদনারা মুচড়ে নিংড়ে সমুদ্রের ধবল নিস্তেজ ফেনারাশি হতাশায় ম্লান আজ ভেসে যাবে কৃষ্ণচূড়ার খয়েরি ডানা ধুমল ধূসর পাণ্ডুলিপি হালদা নদীর পাড়ে মৃত লাল ইলিশেরা আত্মহননের গান গায়
তুমি উড়ে এসো রাঙা প্রজাপতি বেশে দুঃখগুলো ডানা থেকে ঝেড়ে আমাদের উঠোনের ঘাসে দুর্বাদের সোঁদা ঘ্রাণে কচি প্রাণে তোমার প্রগাঢ় ছায়া লেগে আছে, হঠাৎ বকুল ফোটে লাল লাল শ্রাবণ ফুরিয়ে যায় এ-বাংলায় রোদেও বৃষ্টির লাল ফোঁটা শুকিয়ে পাথর কর্দম পিচ্ছিল পথে কেবলই হোঁচট আকাশের সন্ধ্যাতারা তবু তোমারই হাসির চেনা মুখ