উৎসব সংখ্যা: কস্তুরী সেন’র কবিতা
মেঘদূত
বিশ্বাস করিনি আজও
এত বর্ষা মেনে নেওয়া ভুল
পরে কী কী হতে পারে না ভেবেই
এভাবে কি ঝাঁপ দেয় লোকে?
কেন দিলে, কেন সুর হংসধ্বনি অবিকল নিচু হয়ে
ছেঁড়া চটি ঠিক করলে থেমে
তখনও এ ব্রিজ হয়নি, রাত বাড়লে জেগে থেকো
ডাক, মাঠপাড়া
বিশ্বাস করিনি আজও, এত বর্ষা অথচ সেবার
চীনের আকাশে জাগে লাল তারা টিনবাক্সে
রাত্রি জেগে কারা দ্রুত দেয়াললিখন…
যাও উত্তরদিশি মেঘ, সন্ধ্যাবেলার ট্রেনে
আমার লাজুক পিতার হয়ে বলো সেই মেয়েটিকে
আপনার পাশে বসতে পারি?
বিশ্বাস করিনি
তবু পুরনো ছবির কাচে প্রত্যেক শ্রাবণদিনে
মেঘে মেঘে ঘটে যাচ্ছে মা আমার
আজও সেই অবিশ্বাস্য বৃষ্টিবাড়াবাড়ি!
সুখ
বিদায় মধ্যাহ্নকাল, স্থির সূর্য বাড়িভর্তি খুব হাঁকডাক
সময়, প্রস্তুত থাকা, সঙ্গে সঙ্গে যাওয়া চোখ যতদূর যায়
বিদায় সর্বতোসিদ্ধ, বিদায় বাজনবাদ্যি,
কোনওখানে লুকোচুরি নেই…
বিদায়ের অন্যপাশ দিয়ে কে গেল হেমন্তরাত্রে ভরা সরোবরে?
সারাদিনমান তার লোকচক্ষে ধরা পড়া ভয়!
তার নাম জলস্পর্শ? ফিরে আসা সে-ই?
কে তাকে নিলাজ বলত,
সংসার দেখে রাখতে আনা তবু জলে নামা দেখে কারা দিত ছিছিক্কার!
বিদায় সমাজমান্য।
তারপরে ফেরাটুকু
সে কবে ফরিদপুর,
তামাদি হলুদ ছবি জুড়ে আজও চেয়ে থাকা
হাসিচাপা ভিতু ছোটবউ
সংকল্প
এসবই সহজ করে বলা –
একান্ত সহজ করে বহুবার জানাও আগেই
বহুবার তাম্রপুট বহুবার এইমতো তুলসির জলে ভাসা সহজের শেষ ও প্রথম
বহুবার চল তোরে দিয়ে আসি সাগরের জলে
এই মাতৃক্রোধ
বালকের ধূলিসাৎ মফসসলভেঁপু
উৎসবরৌদ্রে এই বহুবার আঙিনাটি পর্বতসমান
আজ সন্ধ্যা হয়ে এল
দূরে আলো দ্রুত ভীমগতি
যে বসেছে বহুবার নৈহর ছুটবে বলে
সে জানে যে ছুটি নেই
সহজ আরেকপাশে বহুবার
এনে রাখা ধূমন্ত চায়ের ভাঁড়ে ধীরে খেও ফুৎকার…
সহজ, একান্তে বলা এখনও গরম
কবি ও গল্পকার।