| 26 এপ্রিল 2024
Categories
উৎসব সংখ্যা’২০২১

ইরাবতী উৎসব সংখ্যা: তিনটি কবিতা । সেলিম মণ্ডল

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
জ্বর
 
সন্দেহ হলে জ্বর আসে
জ্বরের রং নীল
 
আমাদের শাদায় তৈরী দেওয়াল
ছোট্ট ঘুলঘুলি
কড়ি বরগা
লুপ্তপ্রায় চড়ুই
একে একে ঢুকে যায় থার্মোমিটারে
 
জ্বর বড়ো হয়
জ্বর কপালে টিপ পরে
 
জ্বর তার যোনিতে খুলে রাখে একটা থ্যাঁতলানো চোখ
Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,bangla-kobita-by-krishna-malik/
 
শিশুসন্তান
 
 
ক্ষমতা ফিরে পেলে মানুষ কি হয়ে উঠবে সাদা বালিহাঁস?
সবুজ শ্যাওলার ভিতর না লুকিয়ে জোরে জোরে ডাকবে কি, “ডিক, ডিক, ডিরিক, ডিরিক”?
 
হাওয়ায় রক্তমাখা নাভি ওড়ে…
 
মিছিল থেকে ফিরে আসে দুধমাখা ভাতের শিশুসন্তান!
 
Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,read bengali kobita tanya kamrun nahar
 
গাছকথা
 
ভিতরে গাছ ভেঙে পড়ছে। পাকা ফল, ফোটা ফুল কী হবে? ডালে বসে থাকা পাখিটি কোন ত্রাণশিবিরের গল্প শোনাবে?
বীজের মধ্যে বীজ তার অন্ধকারে। আঁচল থেকে খুলে যাওয়া চাবির গোছা, কাকে বলবে: বাড়ি কই, বাড়ি কই?
 
শিকড় আমাদের মা। গাছের কাছে সন্তান জল। মাটি। কিন্তু যা মা’কে ধরে রাখতে পারে না, তার জন্য কাঠুরিয়া, ভালোবাসায় মিশিয়ে রাখে বিষ। এমন কাঠুরিয়া ঝড়ের আগে ও পরে আসে। ঝড় চলাকালীন করাতে ধার দিয়ে সিঁথিতে রাঙিয়ে দেয় সিঁদুর…
 
স্বপ্নে, আমার সমস্ত গাছ ভেঙে যায়। সকালবেলা সেই গাছের বীজ সংগ্রহ করি। বাড়িময় তক্তা আর তক্তা! কোনটায় ভালো খাট হবে, কোনটায় হবে ভালো আলমারি… ভাবি… তারপর গাছের কাছে মাথা রেখে, স্বপ্নের কারণ জিজ্ঞাসা করি…
 
গাছ ভাঙলে কোটরে থাকা পোকামাকড়গুলো আশ্রয় নেয় পাতায়। তাদের থেঁতলে যাওয়া ডিম ওই পাতা দিয়েই ঢেকে রাখে। পাতাও একসময় শুকিয়ে যায়। পোকাগুলো কিলবিল করে ওঠে তখন মগজে…
 
সব পাতায় সংসার হয় না। গাছ জানে বলেই পাতা ঝরিয়ে নতুন রান্নাঘর প্রস্তুত করে।
 
যে মানুষটি গাছ হতে চায়— তাঁর শরীর থেকে ঝুরি নামবে এমন কোনো কথা নেই! আমরা ঝুরির অস্তিত্ব অনুভব না করলে গাছের প্রতি ভরসা রাখতে পারি না। প্রতিটি গাছ ভিতর ভিতর এতটাই ঝুরি নামিয়ে রাখে আমরা বাহিরের ঝুরিতে দোল খেতে চেয়ে মাটির তুলতুলে শরীরে চালিয়ে দিই কোদাল…
 
গাছের কথা গাছকে বলা বারণ… ফুলের কথা ফুলকে… ফলের কথা ফলকে… বীজের কথা বীজকে… শিকড়ের কথা শিকড়কে… পাতায় চলা মানুষের কণ্ঠস্বরে এই হুমকি…
এ যেন নুনজীবনে ঢেলে দেওয়া রোদসমুদ্রের আশ্বাস… বাতাসের মেঘলা হুঙ্কার…
 
উঠোনে বীজ ফেললে বাড়িতে গাছ হবে… গৃহকর্তা এমন বলেন। ছোটোছেলে বীজ ফেলে। বড়ো ছেলে চারা উপড়ে নেয়। গৃহকর্তা প্রতি বর্ষায় সেই উপড়ে ফেলা গাছ উঠোনের কোনে লাগান।
 
ফুল ফুটলে পাখির ডানায় রামধনু ওঠে। মেঘলা আকাশে তারই বাদ্য বাজায় গাছ। গাছে গাছে এই বিদ্রোহ— মানুষকে শিকড়ের কাছে আনে।
 
১০
যে গাছ অনন্ত যৌনতা দেয়, তারই চেরাইকলে মালি হয়ে আমরা বাগান পরিচর্যা করি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত