| 8 মে 2024
Categories
প্রবন্ধ সাহিত্য

চেতন ভগতঃ তরুন পাঠকের প্রিয় লেখক

আনুমানিক পঠনকাল: 7 মিনিট

বর্তমান প্রজন্ম না-কি বই পড়া ভুলে গেছে? তবে বিষয়টি কিন্তু পুরোপুরি সত্য নয়। নতুনরাও বইপিপাসু। তারা চাচাচৌধুরী থেকে শুরু করে ফ্যান্টম, হী-ম্যান, তিন গোয়েন্দা, মাসুদরানা, এমিলের গোয়েন্দাবাহিনী, প্রফেসর শঙ্কু, পাণ্ডব গোয়েন্দা থেকে শুরু করে দীপু নাম্বার টু, শার্লক হোমস ইত্যাদি বইসমূহতে এখনো ডুবে রয়েছে।


এমন কি বয়স ও মননশীলতার পরিবর্তনে আমরা হীমুর হাতের ৩টি নীলপদ্ম, শুভ্র বা মিসির আলী অমনিবাস পড়াতেও ব্যস্ত রয়েছি। আবার ড্যান ব্রাউন এর দ্যা ডি ভিঞ্চি কোড কিংবা লস্ট সিম্বল, স্টেফানি মেয়ার এর টোয়ালাইট সাগা বা জে কে রাওলিং এর হ্যারি পটারের বইও কারো অজানা নয়। হার্জের টিনটিন-ই বা বাদ যায় কেন?

মোট কথা বই পড়তে ছোট-বড় সকলেই পছন্দ করে। বরং এই ইন্টারনেটের যুগে এসে বর্তমান প্রজন্ম আরো বেশি বই পড়ছে। এরা গেমার কিংবা সোশ্যাল সাইটস অ্যাডিক্টেড হোক না কেন মুঠোফোনে যেকোনো সময়ে  সহজেই যেকোনো বই পড়ছে।

বিখ্যাত বাংলা কমিকস চাচা চৌধুরী

তবু মাঝে মাঝে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েন কেন যেন আগের মতো বই পড়া হচ্ছে না। ভারত ও বাংলাদেশে কিন্তু কিছু সমস্যার সম্যক মিল রয়েছে। সেই একই সোশ্যাল প্রেশার, পড়াশোনা, ক্যারিয়ার এর তীব্র প্রতিযোগিতা, র‌্যাগিং- সমস্যার কি অন্ত আছে ? তার মধ্যে কারো যদি বই পড়ার আলাদা সময় না থাকে তাকে কি দোষারোপ করা ঠিক হবে?

তবে বিপ্লব কি আসে না। অবশ্যই আসে বই এর রাজ্যে ফিরে আসার সে বিপ্লব নিয়ে আসেন কিছু উদীয়মান প্রতিভা যাদের লেখনীতে গল্পের ছলে থাকে নাটকীয়তা। সেই বই পড়ে মানুষ খুঁজতে থাকে নিজের স্বপ্নকে। সেখানে মেলায় বাস্তবের তুলির আঁচড়। আমাদের আজকের আয়োজন এমনএকজন ভারতীয় লেখক, তার উত্থান, তার সৃষ্ট সাহিত্য ও তার থেকে নির্মিত চলচ্চিত্রকে ঘিরে। তিনি চেতান ভগাত।

আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে কেন চেতন ভগত? আপনারা তো ভার্সেটাইল অনেক লেখকের সঙ্গেই পরিচিত। কিন্তু প্রতি মুহূর্তে আলোচনা সমালোচনার মাধ্যমে চমক সৃষ্টি করে চলেছে এমন লেখক কিন্তু আপনি পাবেন হাতে গোনা কয়েকজন। প্রথম জীবনে ছাত্র অবস্থায় একজন মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, পরবর্তীতে হয়ে যান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার, অত:পর রাইটার, কলামিস্ট, চিত্রনাট্যকার, মটিভেশনাল স্পিকার, মিডিয়া প্রেজেন্টার কি নন তিনি! তাই তাকে নিয়েই আজকের আয়োজন। চলুন তবে জেনে নেন যাক-

চেতন ভগত, এক চিরচেনা অনুপ্রেরনা:

একটি ঘটনা দিয়েই শুরু করা যাক লেখাটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী নীলক্ষেতে গিয়েছে। উদ্দেশ্য বেষ্ট সেলিং কিছু বইয়ের অনুবাদ কিনবেন। দোকানীর সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে উঠে এল চেতন ভগত এর নাম। দোকানী শিক্ষার্থীদের বলে উঠলো অনুবাদ কি পড়বেন? তাতে কি অরিজিনাল বই পড়ার মজা পাওয়া যায়। তার চেয়ে চেতন ভগত এর একটি বই পড়ে দেখুন। একদম সহজবোধ্য ইংরেজীতে লেখা। মজাও পাবেন ইংরেজেতীও সাবলীল হয়ে উঠবেন। একেই বলে ব্র্যান্ডিং।

 চেতান ভাগাতের কিছু বই

আচ্ছা মনে আছে টু স্টেটস এর সেই আকর্ষণীয় গল্প! সেটি ছিল চেতন ভগতের নিজের জীবনের ছায়া গল্প বা অটো বায়োগ্রাফি। যার অসম্ভব রোমান্টিসিজম আমাদের মনকে ছুঁয়ে যায়। প্রজন্ম কিন্তু প্রথম এই সাহিত্যিককে চেনেনি। তবে আলিয়া ভাট ও অর্জুন কাপুর এর অভিনয় ও গল্পের কাহিনী খোঁজ করতে বাধ্য করেছে সবাইকে। কে এই চেতন ভগত?

২০১৪ সালে মুক্তি প্রাপ্ত জনপ্রিয় চলচিত্র টু স্টেটস (2 States: The Story of my Marriage উপন্যাস অবলম্বনে রচিত) এর কথা আগে বললেও এই গল্প নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রটি কিন্তু লেখকের টুপিতে সাজানো চতুর্থ পালক। এর আগেও তার ঝুলিতে আছে আরো তিনটি রঙ্গিন পালক মানে তিনটি অসামান্য চলচ্চিত্র। যা তার রচিত উপন্যাস হতেই নির্মিত। সেগুলো হচ্ছে ২০০৮ সালে নির্মিত হ্যালো (One Night @ the Call Center অবলম্বনে), ২০০৯ সালে নির্মিত অসাধারন চলচ্চিত্র থ্রি ইডিয়টস (Five Point Some One উপন্যাস অবলম্বনে), ২০১৩ সালে নির্মিত চলচিত্র কাই পো চে:- ব্রাদার্স ফর লাইফ (The 3 Mistakes of My Life উপন্যাস অবলম্বনে), এছাড়াও চলতি বছর ২০১৭-তে এলো তার উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত আরেক চলচিত্র হাফ গার্লফ্রেন্ড (Half Girlfriend উপন্যাস অবলম্বনে)। এতক্ষন তো তার উপন্যাস ও চলচ্চিত্র সম্পর্কে জানলেন! এবার তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও সম্পর্কেও কিছু জেনে নিন-

ব্যক্তি জীবনে চেতন ভগত:

 মা ও ছেলেদের সাথে চেতন ভগত

৪০ বছর বয়সী চেতনের জন্ম ১৯৭৪ সালের ২২শে এপ্রিল ভারতের নিউ দিল্লীতে। বাবা ছিলেন আর্মি অফিসার, মা ছিলেন কৃষি অধিদফতরের সরকারী চাকুরে। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড় ও কিছুটা খেয়ালী। তার ছোট ভাই কেতন ভগতও একজন উপন্যাসিক। শুধু সাহিত্যিকই নন, তিনি একাধারে ইংরেজি উপন্যাসিক ও কলামিস্ট, চিত্রনাট্য লেখক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও মটিভেশনাল স্পিকার। হিন্দি, ইংরেজী উভয় ভাষাতেই কলাম লিখে থাকেন ভারতের প্রখ্যাত ইংরেজি দৈনিক টাইমস অফ ইন্ডিয়া ও হিন্দী দৈনিক ভাস্করের জন্য। সমসাময়িক ঘটনা, তরুণ প্রজন্ম ও তাদের ক্যারিয়ার ভাবনা নিয়ে তিনি লিখেন।

ব্যক্তি জীবনে তুখোড় মেধাবী চেতন ভগত ১৯৯৫ সালে স্নাতক করেছেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং আইআইটি- দিল্লী থেকে এবং এমবিএ করেছেন আই আই এম- আহমেদাবাদ থেকে, যে দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেই বিশ্ব সেরা একাডেমিক ইন্সটিটিউট বলা হয়ে থাকে। প্রথম কর্ম জীবনের শুরু বিশ্বের নামকরা প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান এন্ড স্যাক্স এ ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার হিসেবে। জীবনের ১১টি বছর চাকরী করেছেন উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানের হয়ে হংকং ব্রাঞ্চে। কিন্তু ব্যাংকিং ও লোভনীয় উপার্জন তার মনকে আটকে রাখতে পারেনি।

হংকংয়ে বসেই ২০০৪ সালে লিখে ফেলেন তার প্রথম জনপ্রিয় উপন্যাস Five Point Some One। সেই থেকে শুরু। এরপর আর তাকে পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০০৫ সালে লিখে ফেলেন আরেকটি উপন্যাস One Night @ the Call Center। এই দুইটি উপন্যাসই শীর্ষ বিক্রির মাইল ফলক অতিক্রম করে। ২০০৮ সালে তার উপন্যাস ৭ লাখ কপি বিক্রি হয়। সে সময় অর্থাৎ ২০০৮ সালের মার্চ মাসে নিউইয়র্ক টাইমস চেতন ভগতকে ভারতের ইংরেজি উপন্যাস বিক্রির ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ডের দাবীদার বলে অভিহিত করে।

২০০৮ সালেই চেতন ভগত মুম্বাই চলে আসেন। তিনি আবার কিছুদিন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং-এর সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন এবং ২০০৯ সাল থেকে চাকরী ছেড়ে দিয়ে পুরোদস্তুর লেখক হয়ে যান। বই লেখা ছাড়াও চিত্রনাট্য রচনা ও আধ্যাত্মিক সাধনার প্রতি এই প্রতিভাবান লেখকের দূর্বলতা রয়েছে। ১৯৯৮ সালে লেখক তার ভালোবাসা অনুসা সুরইয়ানারা আনানকে বিয়ে করেন। বর্তমানে তিনি ঈশান ও শ্যাম নামে দুই জমজ সন্তানের জনক।

চেতান ভগাত এর উপন্যাস সমুহ (ক্রমানুসারে)-

(১) Five Point Someone (2004)

(২) One Night @ the Call Center (2005)

(৩) The 3 Mistakes of My Life (2008)

(৪) 2 States (2009)

(৫) Revolution 2020 (2011)

(৬) Half Girlfriend (2014)

(৭) One Indian Girl (2016)

(৮) Soulmates (2018)

চেতন ভগত এর নন-ফিকশন সমুহ (ক্রমানুসারে)-

(১) What Young India Wants (2012)

(২) Making India Awesome (2015)

চেতন ভগত এর জনপ্রিয় চিত্রনাট্য

(১) Kick (2014)

লেখকের অন্যান্য অর্জন:

২০১৩ সালে নির্মিত চলচ্চিত্র কাই পো চে- ব্রাদার্স ফর লাইফ The 3 Mistakes of My Life উপন্যাস অবলম্বনে রচিত চলচ্চিত্রের জন্য ২০১৪ সালে আয়োজিত ৫৯তম ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে তিনি চিত্রনাট্যকার হিসেবে মনোনয়ন পান ও বিজয়ী হন। ২০১৬ সালে ফোরবস ইন্ডিয়া ম্যাগাজিন ভারতের ১০০ জন জনপ্রিয় সেলিব্রিটির তালিকায় চেতন ভগতের নাম প্রকাশ করে যেখানে তার অবস্থান ছিল ৪০তম।

আন্তর্জাতিক টাইমস ম্যাগাজিনে বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের তালিকায় চেতন ভগতের নাম ও উল্লেখে করা হয়েছে।
এই ২০১৭ সালেই চেতন নতুন ভাবে আত্মপ্রকাশ করলেন বলিউড ফিল্ম প্রোডিউসার হিসেবে তার ‘হাফ গার্ল ফ্রেন্ড’ উপন্যাসটির চলচ্চিত্রায়ন ও প্রকাশনার মাধ্যমে।

যে ১০টি কারণে চেতন ভগত অনেকের পছন্দের-অপছন্দের লেখক:

চেতন ভগত এর লেখা নিয়ে আলোচনা- সমালোচনার কিন্তু অন্ত নেই। তবু পাঠকের দৃষ্টি কোণের ভিত্তিতে তাকে নিয়ে ও তার সৃষ্ট সাহিত্য নিয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু ধারণা তুলে ধরার চেষ্টা করছি-

(১) তার বেশিরভাগ গল্পই গতানুগতিক:

গতানুগতিক গল্পের জনক চেতান ভগত

তার সব গল্পই একই ঘরানার। ছোট মফ:স্বল শহর থেকে উঠে আসা সাধাসিধে একটি ছেলে। উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করতে এসে দেখা পায় কোনো অনন্যার যে বিশেষ কোনো গুণে গুণান্বিতা। অত:পর তারা কোনো এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এই একই ধরনের ঘটনা দেখে ও পড়ে পাঠক একঘেয়েমি বোধ করে।

(২) যেই পাঠকেরা আকর্ষণের ভক্ত তারা তার লেখা তেমন পছন্দ করে না:

প্রথম কোনো পাঠক যদি তার বই পড়ে তবে সে কৌতূহলবশত পড়তেই পারে। কিন্তু যারা জাত পাঠক এবং বিভিন্ন ধরণের দেশি ও বিদেশি লেখকের বই পড়ে থাকে তাদের কাছে চেতন ভগতের লেখা একেবারেই সাদামাটা মনে হতে পারে।

(৩) তিনি একজন আইআইটি’য়ান:

প্রতিটি বইয়েই নিজের আইআইটিয়ান পরিচয় ফুটিয়ে তোলেন চেতন

কিছু ভারতীয় কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে চেতন ভগতকে রীতিমতো অপছন্দ করেন। বিশ্বের কিছু সেরা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন যেমন:- আইআইটি এবং আইআইএম কিন্তু তারপর তিনি আবার লেখক হলেন যিনি লেখার অ আ ক খ জানেন না, এমন কি ভালো লিখেনও না। যেখানে অনেক ইঞ্জিনিয়ার ভালো চাকরীর অভাবে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছেন না, তারা লাভলী প্রফেশনাল ইউনিভার্সিটির মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার এ পরিণত হন। চেতন কিছুটা তো এই অসহায়দের কথা ভাববেন!

(৪) তিনি ১০০ জন নতুন লেখকের জন্য অণুপ্রেরণা:

যদিও এটি গুরুত্বপূর্ণ কিছু না, এই লাইনটি পড়ার পর আপনি আবেগে কেঁদেও ফেলতে পারেন! হাসবেন না কিন্তু। আপনি কি চাইছেন আরো ১০০ জন চেতন ভগত গড়ে উঠুক! একজন চেতন ভগত কি যথেষ্ট নয়? ভারতের অর্ধেক আইআইটি’য়ান চেতন ভগতকে অনুসরণ করতে গিয়ে যদি লেখক হয়ে উঠেন! তবে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার কি হবে? যদি সবাই আইআইটি থেকে চেতন ভগত হয়ে বের হয় তবে যে এই প্রখ্যাত প্রতিষ্ঠানটির নাম হয়ে উঠবে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ দি স্টুপিড স্টুডেন্ট বিকামিং রাইটারস!

(৫) তিনি একজন নার্সিসিস্ট:

তিনি নিজেকে মহাজ্ঞানী ও বাকিদের নির্বোধ ভাবেন যা তাকে একজন নার্সিসিস্ট বা আত্মঅহংকারী হিসেবে প্রমাণ করে। নিজেকে সাধারণ বানিয়ে তিনি যদি অন্যদের অসাধারণ ভাবতে পারতেন তাহলে সত্যিই তিনি একজন অসামান্য মানুষ হতে পারতেন!

(৬) তিনি বিজ্ঞাপনে দেখা দেন, মিডিয়াতেও জ্ঞান ফলান:

নিজের প্রচারণায় মেতে থাকা চেতন

আচ্ছা দেশে যখন প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও হাজার হাজার স্ট্রাগলার অভিনয়ের সুযোগ পাচ্ছেন না সেখানে তিনি সস্তা প্রচারনায় অংশ না শুধু সমালোচনারই জন্ম দিচ্ছেন। এছাড়াও বিজ্ঞাপনে অভিনয় ও নাচ বালিয়ে রিয়্যেলিটি শো’তে বিচারকের ভূমিকা পালন করে শুধু সমালোচিতই হন না বরং পরিহাসের পাত্রও হন। পাঠক ও দর্শকের মতামতের ভিত্তিতে জানা যায় তিনি যেমনই লিখুন না কেন, তার লেখা না-কি অভিনয়ের তুলনায় হাজারগুণ ভালো।

(৭) তিনি বলেন তিনি সাধারনের জন্য সাধারণ হয়ে লিখেন:

আচ্ছা সব লেখকেই তো সাধারণের জন্যই লিখেন। তবে লিখলেই কি সাধারণ হওয়া যায়? জ্ঞানপাপীরা তো বলেন আমি বোকা তাই সবাই বোকা? ঘটনা তো এমনও হতে পারে যে এটি একটি গন্ডিতে আবদ্ধ যার বাইরে তিনি বের হতে বা লিখতে পারছেন না।

(৮) তিনি নিজেকে বিকিয়ে দিয়েছেন:

সত্যি বলতে আমরা সবাই কমবেশি সেলফ ব্রান্ডিং করেই থাকি। তবে সবকিছুর সীমা রয়েছে। তিনি সালমান খানের ‘কিক’ ছবির চিত্রনাট্য লিখে তা মৌলিক বলে চালিয়ে দিলেন যেখানে দর্শক একটি সাউথ ছবির সাথে সিনেমাটির হুবুহু মিল ধরে ফেললো! এটা কি অসচেতনতা না রসিকতা? তিনি বোধহয় ভেবেছিলেন দর্শক সাউথের সিনেমা দেখে না, আর তিনিও একটি মোটা অঙ্কের অর্থ কোনো সমালোচনা ছাড়াই আয় করবেন।

(৯) চলচ্চিত্রায়ন বইয়ের চেয়েও ভালো হয়:

থ্রি ইডিয়টস চলচ্চিত্রটি চেতনের বইটিকেও ছাপিয়ে গেছে

কোনো এক জ্ঞানী ব্যক্তি বলেছিলেন, ‘বই সবসময়েই চলচ্চিত্রের চেয়ে আকর্ষণীয়।’ অনেক বই ও সিনেমার ক্ষেত্রে এই মতামত একেবারেই সঠিক। যেমন: অ্যানে ফ্রাঙ্কের ডায়েরী। তবে চেতন ভগতের দিক দিয়ে এটি পুরো উল্টো। তার লেখা বইয়ের চেয়ে সেই বই হতে নির্মিত চলচ্চিত্র বেশি উপভোগ্য। যদিও এ বিষয়ে নানা মতবাদ ও তর্ক রয়েছে।

কন্ট্রোভারসি:

জনপ্রিয়তার হাত ধরেই যখন পথ চলা তখন কিছু কন্ট্রোভারসি তো থাকবেই। সম্প্রতি টুইটারে পোস্ট করা একটি টুইটের কারণে চেতন ভগত প্রচুর সমালোচনা ও ট্রলের শিকার হন। টুইটে তিনি বলেছেন যে, তিনি লেখা ছেড়ে দিয়ে ইলেক্ট্রিক কার বানাতে চান। এর জবাবে সাহিত্যবোদ্ধারা মন্তব্য করেন যে, সিদ্ধান্ত ঠিকই আছে বই বেঁচে তার অনেক টাকা হতে পারে তবে তার কোনো লেখাই কালজয়ী সাহিত্য হবার ক্ষমতা রাখে না।

যার যা অভিরুচি! তরুন প্রজন্ম হয়তো চলচ্চিত্রের মোহেই তার লেখার প্রেমে পড়ে থাকবে। আজ্ঞে দাদা বলছিলাম যে হাইপ বলে একটা ব্যাপার আছে না!

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত