| 20 এপ্রিল 2024
Categories
খবরিয়া

স্বাধীনতা দিবসে অভিযাত্রী – মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পদযাত্রা

আনুমানিক পঠনকাল: 3 মিনিট

স্বাধীনতা দিবসে অভিযাত্রী – মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পদযাত্রা

প্রতিবছরের মতো এ বছরও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে পর্বতারোহীদের সংগঠন ‘অভিযাত্রী’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’ মিলে আয়োজন করতে যাচ্ছে ‘শোক থেকে শক্তি: অদম্য পদযাত্রা-২০১৯’।

 

স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রত্যুষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পদযাত্রা শুরু করে ইতিহাসের পথরেখা ধরে এগিয়ে যাবো জাতীয় স্মৃতিসৌধের দিকে।

 

২০১৩ সাল থেকে পর্বতারোহীদের সংগঠন ‘অভিযাত্রী’ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য করে আসছে এই পদযাত্রা। ২০১৬ সাল থেকে এই পদযাত্রার গৌরবময় অংশীদার হয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।

 

৫২’র ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিলো বাঙালির অধিকার আদায়ের লড়াই যা পরবর্তীতে ধাপে ধাপে স্বাধীকার আন্দোলনে রূপ নিয়ে ‘৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পায় চূড়ান্ত পরিণতি। এই দীর্ঘ সময়ের পথটিতে অনেক আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাঙালি পায় স্বাধীন, সার্বভৌম ‘বাংলাদেশ’। সেই ১৯৭১ সালেই একদল অভিযাত্রী দেশমাতার মুক্তির অভিপ্রায়ে ‘বিশ্ব বিবেক জাগরণ’ পদযাত্রা’য় হেঁটে অসামান্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।

 

২৬ শে মার্চ, স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের লক্ষ্যে বর্তমান প্রজন্মের আরেক দল ‘অভিযাত্রী’ গত পাঁচ বছর ধরে ‘বিশ্ব বিবেক জাগরণ’ পদযাত্রা’র সেই অসামান্য দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে ‘৫২ থেকে ‘৭১-এর সেই অগ্নিঝরা সময়টাকে স্মরণ করার জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত পদযাত্রা করে আসছে। তাই, পায়ে হেঁটে এই পথটুকু অতিক্রমের বিষয়টি প্রতিযোগিতার নয়- বরং অনুভবের, শ্রদ্ধার, ভালবাসার। বায়ান্ন, ঊনসত্তর পেরিয়ে একাত্তরে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি তা অনুভবের মাধ্যমে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানিয়ে অভিযাত্রীরা গ্রহণ করতে চায় সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণের শপথ।

২০১৬ সাল হতে এই পায়ে হাঁটা কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছে এক নবতর মাত্রা। গত তিনবারে পদযাত্রাটি নিবেদিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণ তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে।

এ বছর ‘শোক থেকে শক্তি: অদম্য পদযাত্রা’ ঢাকার পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হচ্ছে মেহেরপুর ও জামালপুরে।

ঢাকার পদযাত্রা

২৬ মার্চ ২০১৯ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পদযাত্রীদল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়ে ভোর ছয়টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে পদযাত্রার শুরু করবেন। এরপর ২৫ মার্চ কাল রাতের ভয়াল স্মৃতি বিজড়িত জগন্নাথ হল বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ভিসি চত্বরের স্মৃতি চিরন্তনের পাশ দিয়ে সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সামনে দিয়ে সায়েন্স ল্যাব হয়ে আসাদ গেটের দিকে। সেখান থেকে মুক্তিযুদ্ধ টাওয়ারের সামনে গিয়ে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে অভিযাত্রীদল চলে যাবে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের দিকে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর থেকে পদযাত্রা চলে যাবে জল্লাদখানা বধ্যভূমিতে। সেখান থেকে দিয়াবাড়ি ঘাট। ঘাট থেকে নৌকায় তুরাগ নদী অতিক্রম । সেদিন শরণার্থীরা এভাবেই নৌকায় চেপে পাড়ি দিয়েছেন নিরুদ্দেশ গৃহহীন পথ। শত্রুসেনা নিধনে গেরিলা যোদ্ধারা রাতের অন্ধকারে রাইফেল কাঁধে পাড়ি দিয়েছেন এমনই অ-নাগরিক পথ। দুপুর না গড়াতেই পদযাত্রীদল পৌঁছে যাবে সাদুল্ল্যাপুরের শতবর্ষী বটমূলে, দেশমাতার স্নেহ-ছায়াময় আঁচলতলে। সেখানে সহস্র লাল গোলাপের সারি আর বেগুনবাড়ি স্কুলের ছাত্র-শিক্ষকের মিলিত ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে দল আকরাইনে পৌঁছবে দুপুর দুইটা নাগাদ। এখানে যুক্ত হবে আকরাইন উচ্চ বিদ্যালয়। দুপুরে কিছুটা সময় বিরতির পর দল ছুটে যাবে কলমা গ্রামের দিকে। পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালির সম্মুখযুদ্ধের স্মৃতি ঘেরা কলমা গ্রামের মেঠোপথ ধরে হাঁটার সময় পদযাত্রীদলের মানসপটে ভেসে উঠবে স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষ পর্বের এক অসম যুদ্ধের স্মৃতি। পাকিস্তানি বাহিনীকে নাজেহাল করে এখানেই শহীদ হন অমিত-তেজ তরুণ টিটো। টিটোর তেজোদ্দীপ্ত বীরত্বগাথায় উজ্জীবিত হয়ে পদযাত্রীদল চলতে থাকবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার আগে ডেইরি ফার্ম গেটে শহীদ টিটোর সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে পদযাত্রীদল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাবে। সেখান থেকে গোকুলনগর গ্রামের মেঠো পথ ধরে চলতে চলতে দৃষ্টিপথে জেগে উঠবে শক্তির সেই উজ্জ্বল শিখর: জাতীয় স্মৃতিসৌধ।

জামালপুরের পদযাত্রা

জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে একাত্তরে একই দিনে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল পাকবাহিনী। সেই শহীদদের স্মরণে ঢাকার আদলে জামালপুরেও হচ্ছে এই পদযাত্রা। স্বাধীনতা দিবসের সকালে জামালপুরের কবরস্থান বধ্যভূমিতে অভিযাত্রীরা একত্রিত হয়ে সেখানে শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ দিয়ে চৈতণ্য নার্সারির পথ ধরে শ্মশানঘাট হয়ে বাংলাদেশ হাইস্কুলে যাবে। সেখান থেকে কয়েক কিলোমিটার হেঁটে পদযাত্রা শেষ হবে মুক্তি সংগ্রাম জাদুঘরে।

পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে চাইলেঃ  ঢাকার পদযাত্রায় অংশ নিতে চাইলে আগ্রহীদের নিমোক্ত মুঠো ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

সোহাগ বিশ্বাস – ০১৫১৫৬২৪৮০৩

মোঃ ইউছুফ- ০১৮১৪৭৯২৬২৫

ইমাম হোসাইন- ০১৭৬৬৫১৫৪৮৪

জামালপুরের পদযাত্রায় অংশ নিতে চাইলে নিম্নে উল্লেখিত মুঠো ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

০১৭২০৫২১৪৩২

০১৭১২২৯৪০৭৮

ইভেন্ট লিংকঃ https://www.facebook.com/events/1045392928980480/

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত