আজ ২৬ জুন কবি শর্মিষ্ঠা ঘোষের জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।
যেভাবে চাই
কি যে দিই ছাই ছাতা পাতি হাত অনন্ত চাওয়ায়
গান নেব সুর নেব আলো নেব জীবনের অসীম ক্ষুধায়
এই ক্ষোভে এই দ্রোহে এই নত ঝঞ্ঝা ও মৃত্যু আঘাতে
কাছে নাও শুশ্রূষা হাত রাখো বেসামাল কান্না দমকে
শান্তি সুধা নামে গনগনে দুপুরের আঁচে , পরিধিতে জল
প্রশমিত রাগে অনুরাগে চোখে মুখে অমলিন আদরে সোহাগে
সফেদ শীতল টলমল, আমাদের ছায়াতরু মিটিমিটি হাসে
তোমার প্রকাশ হলে অন্ধকারে দিনাভাসে প্রিয় বিবস্বান
বহুশ্রুত কথকতা মনি জিঞ্জিরে তুলে রাখা সময়ের বই
টান মারি যখনি মনে করি একলা একালাগা খেয়ে ফেলে ঘর
সচল ছন্দময় ভরে ওঠে আনন্দমঠ নিঃশর্ত উদ্ভাসে
যেভাবেই চাই আমি ঠাকুরের থানে , প্রিয়তম বাঁধা নাগপাশে
তার
তার কেটে গেলে তুলে নেবার অপেক্ষা । তখন দৃশ্য শ্রাব্য চব্য চোষ্য বাহুল্য ওপর ওপর পার হয়ে যায় । পাত্তা না পাবার জন্য বিশেষঅভিমান না রেখেই । আসলে এ তো জানাই , এই বৈরাগ্য অনাদরের নয় , অনাসক্তির । দরজা নিয়ে নতুন কোনও অভিসন্ধি নেই । হাজারদুয়ারী দরদালানের প্রবেশ প্রস্থানে তেমন সতর্কতা তো ছিল না , যা কিছু আগমন , সাদরে গৃহীত , অসময়ের অনভিপ্রেত যাওয়াও খুবআলোবাতাস কাড়ে নি । রি উইন্ড আর ফাস্ট ফরোয়ার্ড করে দেখলে কারও কারও নাম বা মুখ ঝটিতি দেখা দিতে পারে । আজকাল কথায়কথায় স্বপ্ন আসে । গোল্ডেন এজ এর । প্রস্তাবিত , প্রতিশ্রুত । সিলভার লাইনিং বাড়ছে আর ফিরে আসছে নিয়ানডারথ্যাল স্বপ্নযুগ । বিশালকিছু হুজুগে পেরোই বয়েস শত্তুরেও বলে না। বরং মৌনব্রত অনেক দুর্যোগ ডেকে আনে । সবাক চলচিত্রে অবাক জলপান রোগ সেরে আরেকউপসর্গ হয়েছে । শ্মশান বৈরাগ্যের নামাবলী চাপিয়ে ঘুরতে ঘুরতে হাঁপিয়ে উঠলে কয়েক প্রস্থ স্ববিরোধী মিটিং মিছিলে হেঁটে আসি । জনতারমত লাগতে থাকে পদক্ষেপ । আত্মরতির দিনকাল ফিরলেই বুঝি ফুরোয় নি নশ্বর ।
সে রকম নয়
সর্বগ্রাসী কথার কথা , নদী মোটেই এমন নয়
দেবার জিনিস নেবার হিসেব টনটনা
গর্ভফুলের যোগ সুতোটা অস্থি ভস্ম
তোমার আমার আপনজনের শেষ পারানি
অবলীলায় ঢুকিয়ে ন্যায় তার দেরাজে
সেই তালাটার চাবির খবর মাটির কাছে
সর্বসহা কথার কথা , আমার নদী তেমন নয়
হয় কথাতে নয় কথাতে ঠোঁট ফোলায়
ক্লিভেজ এবং সুগন্ধী ধূপ এরীয়লায় মুখ লুকোনো
টিনএজ ক্রাশ আমার নদী ছদ্মবেশী
এই আদরে উদ্দাম সুখ পায়রা বকম
পরক্ষণেই ” ধুত্তোর যা “, নাকাল ডোবায়
ভুল বুঝনা , নদীর মুখোশ পলেস্তারা যেমন যেমন
নদী বড় প্রেমপিপাসু ভেতর ভেতর
বুকের কাছে বসত থেকে কি লাভ যদি
আর্তডাকে আত্মঘাতী ঘুম না ভাঙ্গে
বন্ধুজনে ধর্ষকামী ক্লেদ বাড়ালে
ভাঙ্গনচোখে আমার নদী একলা দোষী ?
প্রক্সি
আমি আমাকে একটা ডাকনাম দিয়েছি
এমন নয় যে , ডাকনাম ছিলোনা আমার
এমন নয় যে , সেসব ডাকনামে ডাকার লোকের অভাব পড়েছে
আমার এই একান্ত অনুভববেদ্য নাম অন্য কারুর পক্ষে দেওয়া সম্ভব ছিলোনা
ভ্যান্তারা ছেড়ে আসল কথায় আসি
আমি আমাকে ডাকি , ‘প্রক্সি ‘ বলে
একটা আস্ত জন্ম খরচা করে ফেললাম এই ড্যাশ এর প্রক্সি দিতে দিতে
‘রণে বনে জলে জঙ্গলে যখনি বিপদে পড়িবে, আমাকে স্মরণ করিও, আমি রক্ষা করিব’
যেন এই অদৃশ্য বোর্ডটা আমার গলায় কবচ কুণ্ডল করে জন্মেছিলাম
সব সময়ই কারুর না কারুর ভুলভাল ইক্যুয়েশান আমি
ফলত আমার ইক্যুয়েশানও সেই ভুলভাল
প্রেমের হাটে ত্রিভুজের সেই অন্যতম ক্লিশে শীর্ষবিন্দু
খেলার মাঠে রিসার্ভ বেঞ্চ রাজদ্বারে বিস্মরণের তালিকায়
শ্মশানে এখনও অপরীক্ষিত
ভয়ে ভয়ে আছি , মৃতদেহের প্রক্সি দিতে হবে কিনা সেখানে
আমি অবশ্য বেশ রোম্যান্টিক ভাবে মরেই থাকি সবসময়
এর তার বা অন্যকারুর জন্য
প্রেমিক স্বভাব আমার এই এক জায়গাতেই প্রক্সির ধার ধারে না ..
ভুষি
ছুঁয়ে আসি চুপি চুপি কমন যাতায়াত
যত বেশি সরু হয় পথ , ততখানি তক্কে তক্কে থাকা
ততবেশি ঘেঁষাঘেঁষি ঘন ঘন ঘটে
আমাদের অনুবাদ মোটামুটি এক
একবেলা খাওয়া জোটে দু’বেলা উপোষ
তবু ভাবা , এরই নাম প্রেম , দেদার তামাশা
কতদূর যাবো বল , অপ্রেমে হেঁটে
প্লেটোনিক মতবাদে খোল ভুষি খোল
আর কেউ খেলে খাক , এ মুখে রোচে না
প্রচ্ছদ ছবি: বরুণ দে

কবি