তৃতীয় বর্ষপূর্তি সংখ্যা: শ্যামলী সেনগুপ্তর কবিতা
লালন
হৈ-হল্লা করতে করতে খিদে পেলে মায়ের আঁচলে মুখ মুছি
সেখানে একমুঠো ক্ষত
কবে থেকে জমে আছে ,কার আঘাত গড়েছিল সেসব গভীর
গোপনে থেকে যায়
আমাদের চলাচল এমনই নীরব ছিল,ভেদ তত নেই
সেকাল ও একাল
এখনও আঁচল ঘিরে,কাঁচুলি জুড়ে কত ক্ষোভ,পুরনো-নতুন
মায়েরা এমনই হয়
কোঁচড়ে ভরে রাখে কতকিছু ,আড়াল ও আবডাল
ভরে রাখে জন্মদিন
কে কবে সাল ও তারিখ সব খুঁতহীন,যেন এক চলমান পাঁজি
সে আঁচলে একদিন ঢেলেছি যাকিছু ব্যথা ও আগুন
পুণ্যতোয়া নদীর মতো
বয়ে নেয় কারণ ও অকারণে জমে থাকা বিকেল ম্রিয়মান
এমন কতকিছু পাঠের সহজ শেষে
যে আবহ গড়েছিলে কাল
তাকেই লালন করি,যুগ ও যুগান্ত ।।
মারণ
ভালো নয়। এভাবে চলে যাওয়া।
রুমালের গিঁটে বেঁধেছিলে
দুই ফোঁটা শোক
সেখানে অশ্রুগাছে কত ফল ফুলের বাহার
আসলে দু’ফোঁটা জলে সকাল ও সন্ধে স্নানাহ্নিক
কমণ্ডলু থেকে সিঞ্চন করেছি রোজ সকাল বিকেল
বাঁচিয়ে রেখেছি আর্দ্রতা,রসসিক্ত মাটি ও মেটেল
কোশাকুশি,তুলোর আসন,যত যত উপচার
যত্ন করে বুনেছিলে আনাচে কানাচে
পাটের সূর্য দেখে তাকেই রাঙাই। রঙহীন ভালো নয়,
এসব তোমারই কথা,আমি শুধু ধুয়ো ধরি
সন্ধে গাঢ় হলে।
পবিত্র অপবিত্র পাপ ও পুণ্য
কে করে বিচার
কেনই বা বিচারের দায়ভার বৃষস্কন্ধে চাপে!
ছুড়েছি মারণবাণ,বিদ্ধ হবে
হতে হবে,এই ছিল শেষ ও প্রধান
সিঁদ কেটে এসেছিলে
না হয় পুনর্বার সিঁধেল আর চোর-চোর খেলা
অসমাপ্ত রেখে
ফিরে যাওয়া মানায় না ভালো
এখনও হ্যাঙ্গারে শুকনো রুমাল
দু’ফোঁটা আতর ঘিরে ঘর ও বাহিরে গল্প ম-ম করে

কবি, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক