| 2 সেপ্টেম্বর 2024
Categories
গল্প সাহিত্য

সুখ দুঃখের গল্প

আনুমানিক পঠনকাল: 6 মিনিট
মন ভালো নেই তপনের। ভালো থাকবে কী করে ভরা শ্রাবণেও বৃষ্টি নেই একফোঁটা। মাঠ সব ফুটিফাটা হয়ে পড়ে আছে বন্ধ্যা নারীর মতো।গতবার তবু শেষ সময়ে বর্ষা  এসে পুষিয়ে দিয়েছিল। ফসল না ফললে খাবে কী? সকাল হলেই ছ ছটা পাত পড়ে। ঐ সব পাত গুলো তাকিয়ে থাকে তপনের দিকে। আর তপন তাকিয়ে থাকে মাঠ গুলোর দিকে। পড়াশোনা করেও চাকরি না পেয়ে বাবার পেশাকেই আপাতত  বেছে নিয়েছে ও। ব্যবসা  করার পরামর্শ দিয়েছিল অনেকেই কিন্তু তেমন আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় পরামর্শের মর্যাদা রাখতে পারে নি । তবে আশা ছাড়ে নি। চেষ্টা বজায় রেখেছে, বলা তো যায় না বেড়ালের ভাগ্যে শিকা ছিড়লেও ছিড়তে পারে। ও আর প্রতিমা একসাথে প্রস্তুতি নিচ্ছিল চাকরির। প্রতিমা একটা চাকরি পেয়ে যেতে একা হয়ে পড়েছে তপন। প্রতিমার সঙ্গে সেদিন দেখা হয়েছিল তপনের। শহর গিয়েছিল রাসায়নিক সার কিনতে। বেশিক্ষণ কথা বলার মতো সময় ছিল না প্রতিমার। অনেক কিছু জানার ছিল তপনের কিন্তু প্রতিমা ‘নারে আমার অফিসের দেরী হয়ে যাবে। পরে কথা বলবো।এখন আসি ‘বলে চলে যায়। মন খারাপ হয়ে যায় তপনের। ভাবে সবাই ধীরে ধীরে কোথাও না কোথাও প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে শুধু ওই কিছু করতে পারছে না। নিজেকে খুব অবহেলিত মনে হয়।চাষের বাইরে কিছু টিউশন পড়ায় তপন।বাড়িতে পড়াতে যায় পার্থ বলে নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে। ছেলেটা পড়াশোনা ভালো করে।নিজে কিছু করতে পারে নি তপন, কিন্তু  ইচ্ছে পার্থ ভালো কিছু করে ওর মুখ উজ্জ্বল করে। ওর দিদি দেবশ্রীও পড়াশোনায় ভালো।হেতমপুর কলেজে গ্রাজুয়েশন করছে। ওকে ভালো লাগে তপনের। তবে ভাবে বেল পাকলে কাকের কী? ঐ ভালোলাগা টুকু মনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে।জানে প্রকাশ করে লাভ নেই। পুরুষদের ভালো মন্দ নির্ধারন করে দেয় তার কর্মজীবন।তপনের কর্ম জীবন খুব একটা উজ্জ্বল নয়।তবে মেয়েটা তপনকে খুব উৎসাহ দেয়, ‘তুমি এতো ভালো পড়াশোনা করেছো নিশ্চয় কিছু একটা পাবে।আর না পেলেই বা? জগতে কতরকমের কাজ আছে। সেগুলোর কোন একটা করবে। সম্মানের সাথে কিছু একটা করে রোজগার করলেই হলো। ‘এই সত্যটা তপনও জানে কিন্তু কী করবে খুঁজে পায় না। চাষে মন বসে না। তবে এটাও সত্য মনের চেয়ে পেট বড়ো। পেট ভরানোর জন্য মানুষ তো কত কিছু করে। ও না হয় চাষই করলো। সেদিন সন্তোষের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। সন্তোষ ওর সঙ্গে হেতমপুর কলেজে ইতিহাস নিয়ে পড়তো।  যশপুরে সন্তোষ কে
 দেখে একটু অবাকই হয়েছিল,’তুই এখানে?’
-এখন তো আমার গ্রামে গ্রামে ঘোরাই কাজ
-কেন? কিছু চাকরী পেয়েছিস বুঝি
-ধুর, চাকরী কোথায় পাবি?দেশে চাকরী আছে না কী?
-তবে?
-ব্যাবসা শুরু করেছি। ঘরে ঘরে গোবর গ্যাস তৈরীর ব্যাবসা। বিকল্প শক্তির সন্ধান দিচ্ছি মানুষকে। সরকার সাবসিডি দিচ্ছে তাই রোজকার মন্দ হচ্ছে না। আর না হলেই বা কি করবো? কিছু করে খেতে তো হবে। ওর কাছে খবর পেলো পুরানো বন্ধুদের। জগদীশ তো একটা জীবনবিমা কোম্পানির এজেন্ট হয়েছে।সুতপা, নিবেদিতা এদের বিয়ে হয়ে গেছে। সব খবর দেবার পর বললো , ‘আমরা সবাই আশা ছেড়ে দিলেও তুই আর প্রতিভা এখনো চাকরির আশা ছাড়িস নি দেখে ভালো লাগছে। ‘শুনে একটা শুকনো হাসি হাসে তপন। 
পার্থ কে পড়িয়ে সেদিন ফিরছিল তপন। আকাশে মেঘ জমার লক্ষণ দেখে ভালো লাগে তপনের। ভাবে এখনও সময় আছে যদি বৃষ্টি হয় কিছু কিছু জমিতে ধান লাগাতে পারবে। সাইকেল নিয়ে ফিরছিল তপন। এসে দাঁড়ায় যোগী বাঁধের পাড়ে। রোজ সন্ধ্যে বেলায়  এর পাড়ে বসে কিছুক্ষন সময় কাটায়। বসে থাকতে থাকতে পুরানো কথা ভাবে, এই সময়ের কষ্টকর দিনলিপির কথা ভেবে উঠে আসা দুঃখ মিশিয়ে দেয় রাতের অন্ধকারে। বসে বসে ভবিষতের পরিকল্পনা করে। আশার আলো দেখতে পেলে মন খুশি হয়ে ওঠে। ওর জীবনে আলো কম, অন্ধকার বেশি।কদিন ধরে ওর বাবা বুকে ব্যাথা বলছেন। তাড়াতাড়ি একবার ডাক্তার দেখানো দরকার। ডাক্তার দেখানো মানে হাজার দুয়েক খরচা।ওর গ্রাম থেকে যাতায়াতের কোন সুবন্দবস্তো নেই।ডাক্তার দেখাতে সিউড়ি নিয়ে যেতে হবে । বাবার যা বয়স তাতে অতদূর বাসের ধকল সহ্য করানো ঠিক হবে না। বাবার কথা ভাবলে মনটা গুমরে ওঠে তপনের। সারাজীবন দিয়েই গেলেন সংসারে। প্রতিদানে দুঃখ ছাড়া কিছুই পেলেন না। শেষ সময়ে দুঃখ দিলো মানসী।তপনের দিদি। দেখেশুনেই ওর বিয়ে দিয়েছিলেন  বাবা। তবুও সংসার করতে পারলো না । বিয়ের পর জানা গেল ছেলেটা বদ্ধ মাতাল।গায়ে হাত তুলতো মানসীর। পুলিশের চাকরি করতো বলে ভয়ডরও ছিল না। শেষে তপন রুখে দাঁড়িয়েছিল,’ এখানে পড়ে থেকে মার খাবি কেন? বাপের ঘরে থাকবি চল। আমরা খেতে পেলে তোরাও খেতে পাবি। ‘তপনের কথায় বুকে বল পায় মানসী। ছেলেকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে ফিরে আসে বাপের বাড়িতে। মানসী আসার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওর বাবা।তবে মানসীর ভার তেমন ভাবে বইতে হয় না তপনকে।উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়েছিল বলে কয়েকটা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হিসাব রক্ষকের কাজ করে দেয়। সেখান থেকে কিছু রোজগার হয় ওর। আই সি ডি এস প্রকল্পে ঢোকার চেষ্টা করছে। কিছু একটা স্থায়ী চাকরি করার ইচ্ছা প্রবল। বলা তো যায় না আজ তপন অবিবাহিত  আছে, বিয়ের পর  বোন ভাগ্নার এতটা নাও করতে পারতে পারে। তাই স্বনির্ভর হতে চায় মানসী। এখন যদিও ওর ছেলে প্রতাপের পুরো দায়িত্ব পালন করে তপন। ওদের নিয়ে দুর্ভাবনা হয় তপনের। ভাবে ওদের ভবিষ্যতের জন্য স্থায়ী একটা কিছু করে দিতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু কি করবে নিজের ভবিষ্যতেরই তো কোন স্থায়ীত্ব নেই। এই সব ভাবনা মাথায় এসে গেলে মনটা অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়ে। একটা ঠাণ্ডা বাতাস বয়ে আসছে।আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে জমাট বাঁধতে থাকা মেঘ ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। ওর মনে বৃষ্টির জন্য যে আশার সঞ্চার হয়েছিল তা নিরাশায় পরিণত হয়। ওখানে বসে থাকতে ভালো লাগে না আর। উঠে পড়ে।সাইকেলে চাপতে গিয়ে মনে পড়ে যায় দেবশ্রীর কথা। দেবশ্রী প্রায়ই বলে ‘এবার  একটা বাইক কেনো তপন দা’।
-সে তো অনেক টাকার ব্যাপার। অত টাকা পাবো কোথায়?
-ইনস্টলমেন্টে কেনো। এখন সবাই ইনস্টলমেন্টেই তো কেনো
-সে তো শোধ করতে হবে 
-শোধ হয়ে যাবে ধীরে ধীরে 
– এখন অত টাকা নেই। কদিন পরে ভাববো ওসব
-তুমি না একটা যা তা। নিজের শখ আহ্লাদ বলে কিছু নেই। বলে চলে যায় দেবশ্রী।দেবশ্রী চলে যেতে তপনের মনটা যেন কেমন করে ওঠে।মেয়েটাকে ঠিক বুঝতে পারে না তপন।কখনো কখনো তপনের সঙ্গে ওর কথা ফুরাতে চায় না, আর কখনো কখনো নিজেকে এমন গুটিয়ে নেয় যেন তপনকে চিনতেই পারেনা। ওর সঙ্গে কথা বললে তপন উৎসাহ পায়। উৎসাহ দেয়ও মেয়েটা, ‘চাকরি করতে হবে  এমন কি কথা আছে তপনদা। পেটের ভাত যদি জুটে যায় আমার মনে হয় আরও পাঁচটা ভালো কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা উচিত। ‘এই সহজ সত্যটা তপন বোঝে না এমনটা নয়, কিন্তু সংসারে এমন আষ্ঠেপৃষ্ট জড়িয়ে পড়েছে যে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না । দেবশ্রী বলে , ‘তুমি না বড্ড সংসারী।পুরুষ মানুষের  অত সংসারী হওয়া মানায় না । তোমার তো বিয়েও হয়নি এখনও, তুমি কেন অতো সংসার সংসার করো? ‘সূর্যের তেজ কমে গিয়ে মিঠে আলোয় ভরে উঠেছে চারদিক। এর মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে অদ্ভুত  অনুভূতি হয় তপনের। ভালো লেগে যায় ওকে। তবে পরক্ষণেই ভয় পেয়ে যায় ওর এই অবস্থায় কতদিন ধরে রাখতে পারবে ওকে। জানে দেবশ্রীর খুব উচ্চাশা। জীবনে অনেক বড় হবার লক্ষ্য রয়েছে ওর।ওর লক্ষ্যের সঙ্গে তপনের লক্ষ্য মেলে না।তাই সরে আসে ওর কাছ থেকে। ভাবে জীবনে যদি কোনদিন সে ভাবে দাঁড়াতে পারে তবেই দেবশ্রীর প্রতি দুর্বলতা দেখাবে। নয়তো নয়।
আজ পড়াতে যায়নি পার্থকে। বাবাকে সিউড়ি নিয়ে গিয়েছিল ডাক্তার দেখাতে। বাবার হার্টের অবস্থা ভালো নয়।চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার। অত টাকা কোথা থেকে জোগাড় করবে সেটাই ভাবার চেষ্টা করছিল যোগী বাঁধের পাড়ে বসে। হঠাৎ ফোনটা বেজে ওঠে । দেবশ্রীর নাম্বার দেখে অবাক হয়। ভাবে ও যে আজ পার্থকে পড়াতে যাবে না তা তো বলেই এসেছে তবে কেন ও ফোন করছে? তবে কি অন্য কোন দরকার? মাঝেমধ্যে বিভিন্ন ফর্ম পূরণ করে ও,পূরণের জন্য সাহায্য নেয় তপনের। বলেছিল নার্সিং পড়ার জন্য ফর্ম পূরণ করবে। তবে কী ওই জন্য ফোন করেছে? ‘ভাবতে ভাবতেই ফোনটা কানে নেয় তপন। কোন ভূমিকা না করেই দেবশ্রী বলে, ‘আজ পার্থর জন্মদিন, তাই মা এখানে খেয়ে যাবার জন্য বলছিল।’
-আজ রাত হয়ে গেলো, আবার যাবো? কিন্তু কিন্তু ভাবে বলে তপন ।
-মা তো বলছে আসতে। উপরের দিকে তাকিয়ে তপন বুঝতে পারে মেঘ উঠেছে। বুঝতে পেরে বলে, ‘মেঘ উঠেছে, বৃষ্টি  আসে নাকি আবার?’
-তবুও এসো। আমি অপেক্ষা করে থাকবো। শেষ কথাটা বলে গলাটা খাদে নামিয়ে। কথাটার মধ্যে কি আছে তপন জানে না, শুনে মনটা আবেগে ভেসে যায়। কেউ ওর জন্য কোথাও অপেক্ষা করে থাকবে ভেবেও ভালো লাগে। ভাবতে ভাবতে ঘন হয়ে আসে মেঘ। বড়ো বড়ো ফোটায় বৃষ্টি নেমে আসে। সেই সঙ্গে বজ্র বিদ্যুত। তপন বুঝতে পারে বাঁধ পাড়ের এই ফাঁকা জায়গায় থাকাটা উচিত হবে না। উঠে দাঁড়ায়, সাইকেলে চেপে জোরে চালিয়ে হাজির হয় মাঠের মাঝখানে একা দাঁড়িয়ে থাকা পোড়ো বাড়িটায়।ছোটো বেলা থেকে শুনেছে হেতমপুর রাজাদের কাছারিবাড়ি ছিল এটা। মাটির দেয়াল, খড়ের ছাউনি দরজা জানলা বিহিন ঘরটাতে ঢুকতেই একটা বোঁটকা গন্ধ নাকে এসে লাগে। শব্দ করে কিছু একটা দূরে সরে যায়। রাম ছাগল। কেউ ভৈরবের থানে মানসিক করে ছেড়ে দিয়েছে।বিদ্যুত চমকায়, পুরো মাঠ হঠাৎ আলোকিত হয়ে ওঠে। পরক্ষণেই অন্ধকার দ্বিগুণ হয়ে ফিরে আসে। বিদ্যুতের আলোয় দেখতে পেয়েছিল ফাঁকা মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা ভৈরবের মূর্তি টাকে।কালো ক্লোরাইট পাথরে তৈরি। বহু প্রাচীন এই মূর্তিটা দেখে খারাপ লাগে। মাঠের মাঝে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। অতীত সংরক্ষণ না করে তা হারিয়ে যায়। অতীতের মধ্যে যে  ঐতিহ্য থাকে তাও নষ্ট হয়ে যায়। ভবিষ্যতের ভাবনা কে পরিপুষ্ট করার জন্যই  অতীত চর্চা করা জরুরি।নষ্ট হতে বসা মূর্তিটার জন্য হঠাৎ দরদ উথলে ওঠে তপনের । কিন্তু কি করবে বুঝে উঠতে পারে না। ততক্ষণে বৃষ্টি থেকে গেছে। পার্থর বাড়ি যেতে মাথায় আসে কলেজের ইতিহাসের স্যারকে বললে কেমন হয়? ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করেছিল দেবশ্রীর সঙ্গেও।দেবশ্রীও খুব উৎসাহ দেখায়। ঐ মূর্তিটা নিয়ে নতুন কিছু একটা করার ভাবনায় উদ্দীপনায় ফুটতে থাকে তপন। ওর উদ্দীপনায় ভাটা পড়ে, ওর বাবা মারা যান হঠাৎ করে। হার্টের সমস্যা ছিল, তা বলে এইভাবে হঠাৎ মারা যাবেন বুঝতে পারেনি। বাবা মারা যেতে ভেঙ্গে পড়েছিল খুব।
ঐ সময়ে অনেকদিন বাইরে বেরোয়নি তপন। আশা করেছিল দেবশ্রী  একদিন আসবে, আসনি। পার্থ এসেছিল কিন্তু  ওকে দেবশ্রীর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতে কেমন বাধো বাধো ঠেকেছিল। অনেক দিন পর  পার্থকে পড়াতে গিয়ে কারণটা শুনেছিল,  ওর মায়ের মুখে, ‘দেবশ্রীর বিয়ে ঠিক করে দিলাম ।’
-কিন্তু ও তো পড়ছিল, এখনই অবাক হয়ে বলে তপন।
-হ্যাঁ একটু তাড়াতাড়িই হয়ে গেল সবকিছু। পাত্র আমাদের চেনাজানার মধ্যেই। প্রাইমারি স্কুলের টিচার। তবে এম এ পাশ। হাইস্কুলে পেয়েও যেতে পারে । সবাই বললো ভালো ছেলে তাই ঠিক করে দিলাম ।
-ও আর পড়বে না 
-ওরা বলছে তো পড়াবে তারপর কি হয়? শুনে মনটা খারাপ হয়ে যায় তপনের। আর পড়াতে ইচ্ছে করে না পার্থকে। ছুটি দিয়ে বেরিয়ে আসে। উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাঘুরি করে কিছুক্ষণ।কোন কিছুই ভালো লাগে না। এসে বসে যোগী বাঁধের পাড়ে। ভাবে ওর জীবনে পাওনা বলে কিছু নেই।নিরাশায় ভরে যায় মনটা। চোখ যায় ফাঁকা মাঠে যুগযুগ ধরে দাঁড়িয়ে থাকা ভৈরব মূর্তিটার দিকে।ভাবে বছরের পর বছর ঝড়ঝাপটা সামলে আজও তো টিকে আছে ওটা। ওর নিজেকে ভৈরব মনে হয়। না হারতে ও পারবে না।ভাবনাগুলো মনে অদ্ভুত শক্তি যোগায় ওর।নিরাশা ভরা মনটা  ফুরফুরে হতে থাকে। আজ আবার মেঘ করেছে। পরপর কদিন বৃষ্টিতে জল দাঁড়িয়েছে মাঠ। মাঠে জল দেখে মনটা সতেজ হয়ে ওঠে তপনের।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত