সৈয়দ রুম্মানের কবিতা

Reading Time: 2 minutes
পরাভূত সময়ের গুপ্তঘাতক
……………………………………………….
ধড় থেকে মাথা, হাত থেকে আঙুল, পা থেকে গোঁড়ালি—খুলে খুলে পড়ছে আগুন, ধ্বসে পড়ে আকাশের ইট-সুঁড়কি, বালি…নদী ও সাগরে পাখিদের ঘর-গেরস্থালি, ভিনগ্রহ থেকে উড়ে এলো এক ঝাঁক সারস—তাদের ঠোঁটে বসানো বাঘের দাঁত, বিড়ালের কিম্ভুতকিমাকার চোখ…
রাস্তার প্রতিটি ল্যাম্পপোস্ট তাক করে রেখেছে ধনুকের ছিলা…দলে দলে মানুষ ও মানুষের বাচ্চারা সদম্ভে মুখোমুখি হচ্ছে রকেট লঞ্চারের। পুরুষদের জরায়ুতে নিষিদ্ধ পরাগায়নের স্রোত, নারীরা অনির্বাণ শিশ্নে আছে ধর্ষকের ভূমিকায়।
রীতিহীন রীতির দৌড়ে নিওলিথিক অতিক্রান্ত রেনেসাঁস অর্জন করেছে শ্রেষ্ঠত্বের বীভৎস-মুকুট। সামনে এগিয়ে আসে একদল শামুক চিবিয়ে খাওয়া মানুষ। ভোজনের শেষে সবার বিষ্টা মাখা হাত।
জলবায়ু বন্দি নিজস্ব অ্যাকুরিয়ামে। ভোরগুলো উঁকি দেয় আনত সন্ধ্যায়। ঘর্মাক্ত রাতের শেষে লব্ধ নিদ্রায় দুপুরগুলোতে ডেকে ওঠে ঝাঁকে ঝাঁকে ঝিঁ ঝিঁ পোকা। সময় হয়ে যায় ঝুলে থাকা বাদুর।
রুদ্ধ হয়ে আসা নিঃশ্বাস বারবার বিষম খায়। কণ্ঠনালী চেপে ধরে একবন কাশফুল। হাঁচির আওয়াজে পাড়ি দিই ভিন্ন গোলার্ধ্ব। স্পর্শেই যত্রতত্র প্রোথিত হয় নিজ নিজ নিবাস। জড় ও জীবের পার্থক্যে থাকে অনুশোচনা। তরুণাশ্রমে বৃদ্ধরা শাসন করেন সর্পের ফণায়।
এরই মাঝে দমকলবাহিনী বিসস্ত্র অশান্ত সাগরে। পেছন থেকে হেঁটে আসে ভার্জিন ট্রেইন; আকাশপথে সোজা ঢুকে পড়ে দাবানলের মলদ্বারে। পাখিদের পালকগুলোতে চিকচিক করে হিরার নোলক। কোরাস সঙ্গীতের নামে শুরু হয় ভাদ্রের শীৎকার। আর থুথু ঢেলে লিখা হয় সঞ্চীতার সঞ্চয়িতা। স্বপ্ন-ব্যাখ্যা হয়ে ওঠে নপুংসক ধারাপাত।
ধীরে ধীরে লরেল সমর্পণ করে জিউস এসে কুর্নিশ করেন আর হেলেন প্রার্থনা করে রমণ-সজ্জা। আলোর আধারে অন্ধকার চলে যায় দীর্ঘ কারাভোগে। কোহিনূরে নিজের নবাবীকে খামচে ধরতে ধরতে দেখি সীতার সলাজ উপস্থিতি। আবাবিলের ভিড় ঠেলে শুরু হয় ত্রিকাল ঘূর্ণন।
হঠাৎ পুনরুত্থানে বন্দি হই সহজিয়া আপন দৈর্ঘ্যে। চোখের পাপড়ি ভেদ করে শুরু হয় রশ্মি বিকিরণ। হাত কচলানো দৃশ্যপটে অনুসন্ধিৎসু চেতনায় তড়িৎ সূঁচের উৎসমুখ…নগ্ন রেটিনায় বিম্বিত হয়ে ওঠে পলায়নপর একটি পুরুষ্ঠ ছারপোকা—পরাভূত সময়ের গুপ্তঘাতক!
আর উদগত ঘামে চুবিয়ে থাকে অতৃপ্ত রতি-সম্ভোগের দেহ…পেরিয়ে যাওয়া ব্রম্মাণ্ড চেপে বসে টাইমমেশিনে। বিলোড়িত ইন্দ্রিয়ের হোঁচটে কাঁপে হাত; আবারও মানুষের যুদ্ধে তবু খুঁজে ফেরা ডিস্টোপিয়ার রাত—পরবর্তী ধ্যানগৃহে পড়ে থাকে উপক্রমণিকাহীন শূন্য তৃষিত গেলাস!

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>