অনুবাদ: এ্যালকেমিস্ট । পাওলো কোয়েলহো (পর্ব-২)। সায়মা মনি
পৃষ্ঠা ১১
তার বাবা বললো, বাছা, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লোকজন এই গ্রামের ভেতর দিয়ে গিয়েছে। তারা নতুন কিছুর সন্ধানে আসে, কিন্তু যখন তারা চলে যায় তারা মূলত একই মানুষ থেকে যায়, যখন তারা এ স্থানে পৌঁছেছিল তখন যেমন ছিল। তারা রাজপ্রাসাদ দেখতে পাহাড় চড়ে, আর তারা চিন্তা করা বন্ধ করে দেয় যে তাদের অতীতকালটাই ভালো ছিল এখন যা আছে তার চেয়ে।তাদের স্বর্নকেশ অথবা কালো ত্বক, কিন্তু তারা মূলত সেইসব মানুষের মত যারা ঠিক এখন এখানে বাস করছে।’
ছেলেটি ব্যাখ্যা করল, ‘কিন্তু আমি শহরের একটি রাজপ্রাসাদ দেখতে চাই যেখানে তারা থাকে’।
তার বাবা বলে যেতে থাকলেন, ‘ওইসব মানুষেরা, যখন তারা আমাদের মাটি দেখে, তারা বলে যে তারা এখানে চিরদিনের জন্য বাস করতে চায়’।
তার ছেলে বলল, ‘ভালো, আমি তাদের ভূমি দেখতে চাই, আর তাদের জীবন যাপন দেখতে চাই।’
পৃষ্ঠা ১২
তার বাবা বলল, ‘যেসব মানুষেরা এখানে বাস করে, তাদের খরচ করার জন্য প্রচুর টাকা আছে, তাই তারা ভ্রমনের খরচ যোগান দিতে পারে,’ তার বাবা বলল, ‘আমাদের মধ্যে, শুধুমাত্র তারা ভ্রমন করে যারা মেষপালক’।
‘ঠিক আছে, তাহলে আমি মেষপালক হব!’
তার বাবা আর কিছু বলল না।পরের দিন, সে তার ছেলেকে একটি বটুয়া দিল যাতে তিনটি পুরোনো স্প্যানিশ স্বর্ণ মুদ্রা ছিল।
‘আমি একদিন মাঠে এগুলো খুঁজে পেলাম।আমি ওগুলো তোমাকে উত্তরাধিকার সুত্রে দিলাম।কিন্তু তুমি সেগুলো তোমার মেষপাল কিনতে খরচ কর।মাঠে নিয়ে যাও, আর কোন একদিন তুমি আমাদের গ্রামগুলোই যে সবচেয়ে সেরা, আর আমাদের নারীরা যে সবচেয়ে বেশি সুন্দরী তা বুঝতে পারবে।’
আর তিনি বালকটিকে তার আশীর্বাদ দিলেন। ছেলেটি তার বাবার চাহনিতে তার নিজের বিশ্বভ্রমন করার সামর্থ্যের অভাবে আকুতি দেখতে পেল- একটি ইচ্ছা যা তখন পর্যন্ত জীবন্ত ছিল, তার বাবাকে সমাধিস্থ করা সত্ত্বেও, বার বছর পার হয়ে যাওয়ার পরে পর্যন্ত, পান করার জন্য জলের চাহিদা মেটানোর যুদ্ধ করার এই তাগিদের নিচে থেকেও, খাওয়ার জন্য খাবার, আর একই জায়গায় তার জীবনের প্রতিটি রাত্রি ঘুমাতে পারার জন্য।
পৃষ্ঠা১৩
দিগন্ত তীব্র যাতনায় লাল রঙ ধারণ করেছিল, আর হঠাৎ করে সূর্য উদিত হয়।ছেলেটি তার বাবার সাথে কথোপকথনটি নিয়ে আবার ভাবতে থাকল, আর সুখ বোধ করতে লাগল; সে ইতিমধ্যে অনেক রাজপ্রাসাদ দেখেছে আর অনেক নারীর সাথে তার সাক্ষাৎ হয়েছে (কিন্তু কেউ ওর মত নয় যে তাকে অপেক্ষা করিয়ে রেখেছে বেশ কিছু দিন যাবত এই একই জায়গায়)। সে একটি জ্যাকেটের মালিক হল, একটি বই যা দিয়ে সে অন্যকিছু কিনতে পারতো, আর এক পাল মেষ। কিন্তু তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা, তা হলো সে তার প্রত্যেকটা দিন তার সম্পুর্নভাবে তার স্বপ্নের জন্য বাঁচে। যদি আন্দালুসিয়ান মাঠে তাকে ক্লান্ত হতে হত, সে ভেড়াগুলো বিক্রি করে দিতে পারতো আর সমুদ্রে চলে যেতে পারতো। তবে এর মধ্যে সে যথেষ্ট পরিমাণে সমুদ্র উপভোগ করেছে, সে ইতিমধ্যে অন্যান্য শহর, অন্যান্য নারী, আর সুখভোগের অন্যান্য সুযোগ সম্পর্কে ধারণা নিয়েছে। যখন সে সূর্যোদয়ের দিকে তাকাল, সে ভাবল, ‘আমি কোন শিক্ষালয়ে ঈশ্বরকে খুঁজে পাইনি।’
যখনই সে সুযোগ পেত, সে ভ্রমনের জন্য নতুন কোন রাস্তা খুঁজত।সে আগে কখনো ওই ধ্বংসপ্রাপ্ত গীর্জায় যায়নি, যদিও বহুবার ওই অংশের ভেতর দিয়ে ঘুরে বেরিয়েছে।পৃথিবীটা অনেক বড় আর অফুরান ছিল, তার শুধুমাত্র ভেড়াগুলোকে কিছু সময়ের জন্য পথ ঠিক করে নেয়ার অনুমতি দেয়ার কাজ ছিল, আর সে আরো বিভিন্ন মজার কিছু বিষয় আবিষ্কার করল। সমস্যাটা হল যে তারা বুঝতে পর্যন্ত পারেনা যে তারা প্রতিদিন একটা করে নতুন পথ দিয়ে হাঁটছে।
পৃষ্ঠা ১৪
তারা দেখেনা যে মাঠগুলো নতুন আর ঋতু পরিবর্তিত হয়েছে।তারা যা নিয়ে ভাবে তার সবটুকুতে কেবল খাবার আর জল থাকে।
সম্ভবত আমরা সবাই এরকম, ছেলেটি মনে মনে গভীরভাবে চিন্তা করল। এমনকি আমি- আমি ব্যাবসায়ীটির মেয়ের সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে অন্য কোন নারী সম্পর্কে ভাবিনি। সূর্যের দিকে তাকিয়ে থেকে, সে হিসাব করল যে সে দিনের মধ্যভাগের আগে তারিফায় পৌঁছাবে। সেখানে, সে তার বইটি বদলে একটি মোটা বই নিতে পারতো, তার মদের বোতলটা ভরে নিতে পারতো, দাঁড়ি কামিয়ে নিতে পারতো, আর তার চুলে একটি কাট দিয়ে নিতে পারতো; তার মেয়েটির সাথে দেখা করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে, আর সে এই সম্ভাবনা নিয়ে ভাবতে চাইছিল না যে অন্য কোন মেষপালক, বড় একটি মেষের পাল নিয়ে, তার আগে পৌঁছে গিয়েছে আর তার হাত প্রার্থণা করে ফেলেছে।
এটা একটা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা যা জীবনকে আকর্ষণীয় করে তোলে, যখন সে আবার সূর্যের অবস্থানের দিকে তাকালো, সে তা ভাবলো আর তার পদক্ষেপ দ্রুত গতি সম্পন্ন করলো। তার হঠাত মনে পড়লো যে, তারিফায় একজন বৃদ্ধ নারী ছিলেন যিনি স্বপ্ন ব্যাখ্যা করতে পারতেন।
পৃষ্ঠা ১৫
বৃদ্ধ নারীটি বালকটিকে তার বাড়ির পেছন দিকের একটি ঘরে নিয়ে গেল; এটি একটি রঙিন জপমালার গুটিকা দিয়ে তার লিভিং রুম থেকে পৃথক করা ছিল। ঘরটির আসবাবপত্র বলতে একটি টেবিল, একটি পবিত্র আত্মার জিসাসের ছবি, আর দুইটা চেয়ার ছিল।
নারীটি বসে পড়লেন, আর তাকেও একই সাথে বসতে বললেন।তখন তিনি তার দুইটা হাত নিয়ে নিজের হাতের মধ্যে রাখলেন, আর শান্তভাবে প্রার্থণা করতে শুরু করলেন।
এটা বেদুঈনদের প্রার্থণার মত শোনালো। ছেলেটির ইতিমধ্যে রাস্তায় বেদুঈনদের সাথে সময় কাটানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারাও ভ্রমন করে, তবে তাদের কোন মেষপালক থাকেনা।কথিত আছে যে বেদুঈনরা অন্যদের সাথে কৌশল করে তাদের জীবন নির্বাহ করে।এমন আরো কথিত আছে যে তাদের শয়তানের সাথে চুক্তি থাকে, আর তাই তারা শিশুদের অপহরণ করে থাকে আর, তাদেরকে তাদের রহস্যময় আস্তানায় নিয়ে চলে যায়, শিশুগুলোকে তাদের চাকর বানিয়ে রাখে। যখন শিশু ছিল, এই বালকটি সবসময় বেদুঈনদের হাতে ধরা পড়ে মৃত্যুর ভয় করতো, আর সেই শৈশবকালীন ভীতি আবার ফিরে এসেছিল যখন বৃদ্ধ নারীটি তার হাতে ওর হাত দুটো নিল।
তবে তার কাছে যিশুর পবিত্র আত্মা আছে, সে ভাবল, নিজেকে পুনরায় নিশ্চিন্ত করার চেষ্টা করল। সে তার নিজের হাতটি আবার কেঁপে উঠুক তা চাইছিলোনা, বয়ষ্ক নারীকে দেখাতে চাইছিলো না যে সে ভীত।
আরো পড়ুন: অনুবাদ: এ্যালকেমিস্ট । পাওলো কোয়েলহো (পর্ব-১)। সায়মা মনি
পৃষ্ঠা ১৬
সে শব্দহীনভাবে আমাদের পিতার গুণবর্ণনাকারী কিছু পাঠ করছিলেন।
‘খুব রোমাঞ্চকর তো!’ নারীটি বললেন, আর তার চোখ বালকটির হাতের উপর থেকে একবারও সরালেন না, আর তখন তিনি নি:শব্দ হলেন।
বালকটি ভয়াতুর হয়ে উঠল। তার হাত কাঁপতে শুরু করলো, আর নারীটি তা টের পেলেন।বালকটি তাড়াতাড়ি তার হাত সরিয়ে নিল।
‘আমি এখানে তোমাকে আমার হাত দেখাতে আসিনি,’ সে বলল, ইতিমধ্যে এসেছি বলে অনুশোচনা হচ্ছে। সে এক মুহুর্তের জন্য ভাবল যে তাকে পারিশ্রমিক দিয়ে কিছুই না জেনে চলে যাওয়াটা বেশি ভালো হবে, কারন বালকটি তার বার বার দেখা একই স্বপ্নকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলেছিল।
‘তুমি তোমার স্বপ্ন সম্পর্কে জানতে এসেছিলে,’ বৃদ্ধ নারীটি বললেন। ‘আর স্বপ্ন হলো ঈশ্বরের অভিব্যাক্তি। যখন ঈশ্বর আমাদের ভাষায় কথা বলেন, তিনি কি বলেছেন তা আমি ব্যাখ্যা করতে পারি।তবে যদি তিনি আত্মিক ভাষায় কথা বলেন, শুধুমাত্র তুমি তা বুঝতে সক্ষম হবে।কিন্তু, যাই হোক না কেন, আমি তোমাকে পরামর্শটি দেয়ার জন্য দাম ধরবো।’
ছেলেটি বুঝতে পারলো, এটি আরেকটি কৌশল। তবে সে একটি সুযোগ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিল।একটি মেষ সবসময় নেকড়ের সাথে আর খরায় তার সুযোগটুকু নেয়,আর তা মেষপালকের জীবনটাকে রোমাঞ্চকর করে তোলে।
পৃষ্ঠা ১৭
‘আমি একই স্বপ্ন দুই বার দেখেছি।’ সে বলল। ‘আমি দেখলাম আমি আমার ভেড়াসহ একটি মাঠে, তখন একটি শিশু এল আর প্রানীগুলোর সাথে খেলতে শুরু করলো।কেউ এমন করুক আমি তা পছন্দ করিনা, কারণ মেষগুলো নতুন কাউকে ভয় পায়। কিন্তু শিশুরা সবসময় তাদেরকে ভয় না দেখিয়ে তাদের সাথে খেলতে পারে।কেন পারে, আমি তা জানিনা।পশু প্রানীরা কেমন করে মানুষের বয়স সম্পর্কে জানতে পারে, আমি তা জানিনা।
‘আমাকে তোমার স্বপ্ন সম্পর্কে আরো কিছু বলো,’ নারীটি বললেন। ‘আমাকে আমার রান্নার কাজে ফিরে যেতে হবে, আর, তোমার যেহেতু বেশি টাকা নেই, আমি তোমাকে বেশি সময় দিতে পারবো না।’
‘ শিশুটি আমার ভেড়ার সাথে বেশ কিছুক্ষণ খেলা করতে থাকল।’ ছেলেটি বলে যেতে থাকল, একটু মনঃক্ষুণ্ন হয়ে। ‘আর হঠাত করে, শিশুটি আমাকে তার দুই হাত দিয়ে ধরে নিয়ে গেল আর আমাকে মিশরের পিরামিডে নিয়ে গেল।’
বালকটি এক মৃহুর্তের জন্য থামলো নারীটি মিশরের পিরামিড সম্পর্কে কিছু জানে কিনা তা দেখার জন্য। কিন্তু নারীটি কিছুই বললেন না।
‘তখন, মিশরের পিরামিডে,’ _ বালকটি শেষ তিনটি শব্দ ধীরে ধীরে বললো, যেন বৃদ্ধ নারীটি বুঝতে পারেন _ ‘শিশুটি আমাকে বলল, “যদি তুমি এখানে আসো, তুমি একটি গুপ্ত ধন পাবে।”
পৃষ্ঠা ১৮
আর, ঠিক যখনই নারীটি বা মেয়েটি আমাকে ঠিক নির্দিষ্ট ঠিকানা দেখায়, আমি জেগে উঠি, দুই বারেই।
বৃদ্ধ নারীটি কিছু সময়ের জন্য চুপ করে থাকে। তখন তিনি আবার তার হাত তুলে নিলেন আর সতর্কতার সাথে পাঠ করলেন।
‘আমি এখন তোমার কাছ থেকে কোন মুল্য নেবো না, তিনি বললেন।’ ‘তবে আমি সম্পদের দশ ভাগের এক ভাগ চাই,যদি তুমি তা খুঁজে পাও’।
ছেলেটি হেসে উঠল-খুশিতে। সে তার কাছে যা আছে তার থেকে কিছু টাকা সঞ্চয় করে রাখতে পারবে যেহেতু সে গুপ্তধন সম্পর্কিত একটি স্বপ্ন দেখেছে!
‘ঠিক আছে, স্বপ্নটি বিবৃত করো,’ সে বলল।
‘প্রথমে, শপথ করো আমার কাছে। শপথ করো যে আমি এখন যা যা তোমাকে বলবো, তার বিনিময়ে তুমি তোমার সম্পদের দশ ভাগের এক ভাগ দিবে। মেষপালক তা প্রতিজ্ঞা করল যে সে দিবে। বৃদ্ধ নারীটি তাকে আবার প্রতিজ্ঞা করতে বলল যখন সে যিশুর পবিত্র আত্মার ছবির দিকে তাকিয়ে ছিল।
‘এটা ভূ মন্ডলের পরিভাষায় দেখা একটি স্বপ্ন,’ বৃদ্ধা নারীটি বললেন। ‘আমি এটা ব্যাখ্যা করতে পারি, কিন্তু ব্যাখ্যাটা খুব কঠিন।
পৃষ্ঠা ১৯
এই জন্য আমি মনে করি তোমার প্রাপ্ত সম্পদে আমার অংশীদার হওয়ার যোগ্যতা আছে।
‘আর এই হলো আমার ব্যাখ্যা: তোমাকে অবশ্যই মিশরের পিরামিডের দিকে যেতে হবে। আমি তাদের সম্পর্কে কখনো কিছু শুনিনি, তবে এটি যদি একটি শিশু হয়ে থাকে যে তোমাকে এগুলো দেখিয়েছে, তাদের অস্তিত্ব বিদ্যমান। সেখানে তুমি একটি সম্পদ পাবে যা তোমাকে একজন ধনী ব্যাক্তিতে পরিনত করবে।
বালকটি অবাক হয়ে গেল, আর তখন বিরক্ত হল।তার এই কারনে এই বৃদ্ধ নারীকে খুঁজে বের করার দরকার ছিলনা!কিন্তু তখন তার মনে পড়ল যে তার এজন্য কোন দাম দিতে হবে না।
‘কেবলমাত্র এই কারনে আমার সময় নষ্ট করার দরকার ছিল না,’ সে বলল।
‘আমি তোমাকে বলে ছিলাম যে তোমার স্বপ্নটা একটি কঠিন স্বপ্ন।এটা হলো জীবনের সহজ বিষয় যা সবচেয়ে অসাধারণ; শুধুমাত্র জ্ঞানী ব্যাক্তিরাই তা বুঝতে পারে। আর যেহেতু আমি জ্ঞানী মানুষ নই, আমাকে অন্যান্য কলা শিখতে হয়েছে, যেমন হাতের তালু পড়তে পারা।’
‘ঠিক আছে, কিভাবে আমি মিশরে যাবো?’
‘আমি শুধুমাত্র স্বপ্ন ব্যাখ্যা করি। কিভাবে তা বাস্তবে রুপান্তরিত করা যায় তা জানিনা। তাই আমার মেয়েরা আমাকে যা দেয় তা দিয়ে আমাকে চলতে হবে।’
পৃষ্ঠা ২০
‘আর কি হবে যদি আমি মিশরে প্রবেশ করতে না পারি?’
‘তবে আমি আমার কাজের দাম পাবো না।এটা প্রথম বারের মত হবে না।’
আর নারীটি ছেলেটিকে বের হয়ে যেতে বলল, এই বলে যে তিনি ইতিমধ্যে তার সাথে অনেক সময় নষ্ট করে ফেলেছেন।
তাই ছেলেটি হতাশ হয়ে গেল; সে সিদ্ধান্ত নিল যে সে আর কখনও স্বপ্ন বিশ্বাস করবেনা। তার মনে পড়ল যে তার বিপুল সংখ্যক জিনিসপত্র ছিল যার দেখাশুনা তাকে করতে হত: সে বাজারে গেল কিছু খাওয়ার জন্য, সে তার বইটি বিক্রি করলো আরেকটি মোটা বইয়ের বিনিময়ে, আর সে প্লাজায় একটি বেঞ্চ পেল যেখানে সে তার কেনা নতুন মদের নমুনার স্বাদ নিতে পারে। দিনটি উষ্ণ ছিল, আর মদটি অবসাদ দূর করে দিয়েছিল।ভেড়াগুলো শহরের ফটকের সামনে ছিল, একজন বন্ধুর একটি আস্তাকুঁড়ে। বালকটি শহরের অনেককে চেনে।সেটাই ভ্রমনকে তার কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছিল – সে সবসময় নতুন নতুন বন্ধু বানাতো আর তার নিজের সবটা সময় তাদের সাথে ক্ষেপন করার দরকার হয় না। যখন কেউ একই মানুষ প্রতিদিন দেখে, যা তার সাথে তার শিক্ষালয়ে ঘটেছিল, তারা ওই মানুষের জীবনের অংশ হয়ে ওঠা বন্ধ করে দিত।আর তখন তারা সেই মানুষটাকে পরিবর্তিত রূপে দেখতে চায়।যখন কেউ অন্যদের পছন্দমত না হয়ে ওঠে, অন্যরা রাগ হয়ে যায়।
তিনি ইংরেজি সাহিত্যের নিয়ে পড়াশুনা করে এখন এম ফিল করছেন টি.এস. এলিয়েটের কবিতা নিয়ে।বর্তমানে শিক্ষকতার সাথে জড়িত আছেন।