| 19 মার্চ 2024
Categories
জীবন যাপন দেহ স্বাস্থ্য

কোভিড ১৯ এর সাথে ডায়াবেটিস এর সম্পর্ক

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট

 

ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে করোনাঃ

                 সারা বিশ্বে কোভিড ১৯ এর মত মহামারী এখন জনজীবন বিপন্ন করছে। ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এসব দীর্ঘমেয়াদী রোগে যারা ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে কোভিড ১৯ যুক্ত করছে অতিরিক্ত ঝুঁকি। এই অনুচ্ছেদে আমরা ডায়বেটিস এর ক্ষেত্রে কোভিড ১৯ সম্পর্কে আলোকোপাত করব।

কিভাবে ডায়াবেটিক রোগীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি?

.করোনা ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে কোষের যেই নির্দিষ্ট জায়গায় বন্ধনে আবদ্ধ হয় তাকে রিসেপ্টর বলে। ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস এই রিসেপ্টর এর সাথে আবদ্ধ হয়ে কোষের ভিতরে ঢোকার প্রবনতা বেড়ে যায়।

২. শরীরের ইমিউন সিস্টেম ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে দুর্বল থাকায় সহজে ভাইরাস কে মারতে পারেনা।

৩. অনিয়ন্ত্রিত বা ত্রুটিযুক্ত ইমিউন সিস্টেম  ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্রদাহের মাধ্যমে এবং প্রচুর পরিমাণ কেমিকেল রক্তে বের করার মাধ্যমে করোনা আক্রান্ত রোগীকে সহজেই খারাপের দিকে নিয়ে যায়।

★তবে আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা অধিকাংশ করোনা রোগী হাসপাতাল ছাড়া বাসায় ই সুস্থ হয়ে যায়।

যে বিষয় গুলো একজন ডায়াবেটিক রোগীকে এই করোনা পরিস্থিতি তে মাথায় রাখতে হবেঃ

    

★ডায়াবেটিক রোগীদের যেকোনো ধরনের ইনফেকশন এ রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা বেড়ে যায়। কোনো ডায়াবেটিক রোগীর যদি অনিয়ন্ত্রিত গ্লুকোজ আগে থেকেই থাকে তাহলে করোনা আক্রান্ত হলে বা সাথে অন্য কোনো ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন থাকলে তার ক্ষেত্রে গ্লুকোজ এর মাত্রা আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

★ রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজ এর ফলে ডায়াবেটিক ইমারজেন্সি যেমন ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস বা হাইপারগ্লাইসেমিক হাইপার অসমোলার স্টেট এর মত কন্ডিশন এর চান্স বেড়ে যায়। এইসব পরিস্থিতিতে প্রচুর পানিশুন্যতা হয়। যেহেতু কোভিড এও ডায়রিয়া, বমি এই ধরনের লক্ষন অনেকের ই দেখা যাচ্ছে, কাজেই রক্তে গ্লুকোজ এর পরিমাণ বেশি থাকলে স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত পানিশূন্য হওয়ার প্রবনতা ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে বেশি।

★ অনেকের ক্ষেত্রে যাদের ডায়াবেটিস নেই করোনা ভাইরাস এ আক্রান্ত হওয়ার পর অগ্নাশয় ইঞ্জুরি হয়ে নতুন করে ডায়াবেটিস হতে পারে।

ভয় নয়, এই পরিস্থিতিতে ডায়াবেটিক রোগীদের চাই সচেতনতাঃ

১. সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখুন।

২. অপ্রয়োজনীয় কাজে বাইরে যাওয়া বন্ধ করুন।

৩. বাইরে থেকে ফিরে আ্যালকোহল যুক্ত সাবান পানি দিয়ে গা হাত পা পরিষ্কার করুন।

৪. করোনার মত লক্ষন দেখা দিলে নিজেকে ৭ দিনের জন্য পরিবারের অন্নান্য সদস্য  থেকে আলাদা করে ফেলুন। এই অবস্থায় বাইরে যাওয়া পরিহার করুন।

৫. বাসায় গ্লুকোজ মাপার মেশিন রাখুন। বাচ্চাদের যে ধরনের ডায়াবেটিস হয় তাতে বাসায় কিটোন মাপার যন্ত্র ও রাখা উচিত।

৬. প্রতিদিন সকালে খালিপেটে একবার গ্লুকোজ মাপুন। দুপুরে খাওয়ার আগে মাপুন, খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে মাপুন।

৭. করোনার লক্ষন দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ নিন।

৮. রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা উঠানামা করলে আপনার ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ নিন, ডায়াবেটিস এর ঔষধের ডোজ এ কোনো পরিবর্তন লাগবে কি লাগবে না।

৯. রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা বেশি থাকলে প্রচুর পানি খান। তবে কারো যদি হৃদরোগ বা কিডনির সমস্যা থেকে থাকে সেক্ষেত্রে পানি খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান হতে হবে।

১০. একবার করোনায় আক্রান্ত হলে আগে কখনো আপনার ডায়াবেটিস না থাকলেও নতুন করে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করিয়ে নিলে ভাল।যেহেতু করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর অগ্নাশয় ইঞ্জুরি হয়ে ডায়াবেটিস হওয়ার চান্স থাকে।

ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তে গ্লুকোজ এর কাংখিত মাত্রা:

সকালে খালি পেটেঃ ৫-৭ মিলিমোল/লিটার।

দুপুরে খাওয়ার আগেঃ ৪-৭ মিলিমোল/লিটার।

খাওয়ার দুই ঘণ্টা পরেঃ ৪-৮ মিলিমোল/লিটার।

 

 

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত