কি দিতে পেরেছো তুমি, বর্ষা?
ভয়ংকর ভাবে ভিজে চলেছি
বর্ষার মেঘ কেটে কেটে পড়ছে
কাক ভেজার মতো ভিজে চলেছি।
চোখের জল একই তালে ঝড়ছে।
কী আশ্চর্য! বর্ষার প্রভাব এতোই
কাজল দেওয়া চোখের জলও ঢাকা পড়ছে।
ঢাকা পড়েছে শহরের ঘর্মাক্ত গন্ধ
ঢাকা পড়ছে বারুদের গন্ধ
ঢাকা পড়ছে রক্তের দাগ
কতো কিছু ঢাকা পড়ছে!
তবে, দুঃখ ঢাকা পড়ে না
স্বজনহারা আহাজারি ঢাকা পড়ে না
ঢাকা পড়ে না নগ্ন মেয়ের দেহ
ঢাকা পড়ে না মিছিলে ছেলেদের গুলিবিদ্ধ দেহ
বাবা ফিরে আসার প্রত্যাশা ঢাকা পড়ে না
মায়ের বুকে খালি হওয়া স্থান ঢাকা পড়ে না
কতো কিছু ঢাকা পড়ে না।
কি দিতে পেরেছো তুমি, বর্ষা?
কি নিতে এসেছো এখান থেকে?
শুধুই কি ভেজাবে!
একদিন পথে নেমে ভিজে দেখো
ভিজতে আর ভেজাতে কেমন আলাদা স্বাদ।
বর্ষা ভেজা কফিন
হিমাদ্রি, কালো আকাশের দিকে তাকিয়ে
রাতের আকাশ নয়,কালো মেঘ যখন ভেসে বেড়ায় শুভ্র আকাশে
সে আকাশ কে আমি কালো বলি।
টুপ টাপ ঝড়ে পড়ছে, শুনতে পাচ্ছো হিমাদ্রি?
না,না, ফুল নয়,পাতা নয়,
বৃষ্টি।
বর্ষা এসেছে।মেঘ ডাকছে।কথা ছিলো,
উপহার দিবো নতুন কবিতা
এতো মেঘ,এতো বৃষ্টির মাঝে
আমি কবিতা লিখি কেমন করে!
বর্ষা মানুষকে কাঁদায়,মনে করিয়ে দেয়
পুরনো দিন
মনে করিয়ে দেয় হেয়ালী ভালোবাসাময়
দোয়েল চত্বর।
বর্ষা একই ভাবে এসেছে,একই রুপ, একই গন্ধ
দোয়েল চত্বর আগের মতোই ভিজছে
আমিই পড়ে আছি হসপিটালের
ক্যানোলা হাতে বিছানায়।
কথা ছিলো উপহার দিবো নতুন কবিতা।
কথা রাখি নি,কিন্তু আবারও কথা দিচ্ছি,
ফিরিয়ে দিবো একটি কবিতা।
কোনো এক বর্ষায়,যখন আমার কফিন কাঁধে
এতো মেঘ,এতো বৃষ্টি, এতো কালোর মাঝে
তুমি হেঁটে চলবে।
কবিতা লিখে যাবো কফিনের গায়ে
বর্ষায় ভিজবে কবিতা
মেঘের নিচে আমি কবিতা বুকে নিয়ে যাবো
বৃষ্টিতে ভিজে আমি কবিতা বুকে নিয়ে যাবো
কালোর মাঝে আমি কবিতা বুকে নিয়ে যাবো
আমি কথা রেখে যাবো
এক বর্ষায়।