ছোট মাঠে বড় জয়

Reading Time: 2 minutes

টনটনের মাঠে আবারও ঝলসে উঠল এক বাঙালির ব্যাট। আশ্চর্যজনক ভাবে তিনিও বাঁ-হাতি।

১৯৯৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ক্রিকেটবিশ্বে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিলেন এক বাঙালি। ১৫৮ বলে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ১৮৩ রানের ইনিংসের ভিডিয়ো আজও ক্রিকেটপ্রেমীদের সেলফোনে ঘোরাফেরা করে। সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সাকিব আল হাসানের ৯৯ বলে অপরাজিত ১২৪ রানের ইনিংসও বাঙালিদের মনে গেঁথে যেতে বাধ্য।

অনেক সংগ্রামের পরে সতীর্থদের রাজি করিয়েছিলেন ব্যাটিং অর্ডারের তিন নম্বরে তিনিই নামবেন। সেই জায়গায় খেলতে শুরু করার পর থেকে যেন অন্য রূপে পরিণত হলেন সাকিব। চলতি বিশ্বকাপে এ দিন দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এল সাকিবের ব্যাটে। প্রাক্তন অধিনায়কের এই ইনিংস ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে জেতায় সাত উইকেটে।

৩২২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুরন্ত শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। ২৩ বলে ২৯ রান করে ফেরেন সৌম্য সরকার। ৫৩ বলে ৪৮ রান করেন তামিম ইকবাল। সৌম্য ফিরে যাওয়ার পরে ক্রিজে আসেন সাকিব। তখন দলের স্কোর ৫২-১।

সাকিবের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ার পরে ফিরে যান তামিম। মুশফিকুর রহিমও ফিরে যান মাত্র এক রান করে। ১৩৩-৩ স্কোর থেকে ম্যাচের হাল ধরেন সাকিব ও লিটন দাস। ১৮৯ রানের ম্যাচ জেতানো জুটি গড়ে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় জয় এনে দেন বাংলাদেশকে। মাশরফি মর্তুজাদের জয়ের পিছনে সাকিবের যতটা অবদান রয়েছে, ঠিক ততটাই কার্যকর থাকল লিটনের ব্যাটও। ৬৯ বলে তাঁর অপরাজিত ৯৪ রানের ইনিংসে মুগ্ধ ক্রিকেটবিশ্ব। সব চেয়ে বেশি নজর কাড়ে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে মারা তাঁর তিনটি ছয়। ৩৮তম ওভারের প্রথম তিন বলে তিনটি ছয় মারেন লিটন। প্রথমটি হুক করেন স্কোয়ার লেগ অঞ্চল দিয়ে। দ্বিতীয়টি ল‌ং-অফের মাথার উপর দিয়ে পড়ে গ্যালারিতে। লিটনের তৃতীয় ছয় ফের হুক শটে। এ বার তিনি বল উড়িয়ে দেন ফাইন-লেগ অঞ্চলের উপর দিয়ে। বিস্মিত জেসন হোল্ডারের চোখে তখন শুধুই হতাশা। পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটি জিতেছে তাঁর দল। শেষ চারের দৌড়ে টিকে থাকতে হলে শেষ চার ম্যাচে জিততেই হবে। এ ছাড়া পথ নেই। কিন্তু আন্দ্রে রাসেল, ক্রিস গেলদের সেই স্বপ্ন সত্যি হয় কি না দেখার।

রাসেল যে ফিট নন, তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন আচরণে। বল করতে এসে খোঁড়াচ্ছেন। ব্যাটে রান নেই। এ দিনও ফিরে যান শূন্য রানে। ক্রিস গেলও ফিরে যান ১৩ বলে শূন্য করে। শেই হোপ হাল না ধরলে ৩০০ রানের গণ্ডি পেরোনো তো দূরের কথা, ২৫০ রানও তুলতে পারত কি না সন্দেহ।

৯৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন তরুণ ক্যারিবিয়ান উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। ৬ রানে এক উইকেট পড়ার পর থেকে হাল ধরেন হোপ ও এভিন লিউইস। ১১৮ রান যোগ করে লিউইস-হোপ জুটি। সেটাই ইনিংসের ভীত গড়তে সাহায্য করে। ৭০ রান করে ওপেনার লিউইস ফিরে গেলেও হোপ হাল ছাড়েননি। উইকেট কামড়ে পড়েছিলেন। ২৫ রান করে নিকোলাস পুরান ফিরে যাওয়ার পরে ঝোড়ো ইনিংস উপহার দেন শিমরন হেটমায়ার। ২৫ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। ছুঁলেন অ্যালেক্স স্টুয়ার্টের গড়া বিশ্বকাপে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড।

.

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>