অনিশ্চয়তা নিয়ে দুটি দল আজ মুখোমুখি

Reading Time: 2 minutes

পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুটি দলই খুব অনিশ্চয়তায় ভরা। কবে তারা দারুণ খেলবে, কবে চরম ব্যর্থ হবে, অনুমান করা কঠিন। অনেকটা লাগলে তুক, না লাগলে তাক!

টানা দশটি ওয়ান ডে ম্যাচ হেরে আজ নটিংহ্যামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করছে পাকিস্তান।

দু’বছর আগে ইংল্যান্ডের মাটিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল পাকিস্তান। তবে গত দু’বছরে সরফরাজ আহমদদের চলার পথ মোটেও মসৃণ ছিল না।
বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের মাটিতে খুব ভালো ফল করবে পাকিস্তান। এমনই দাবি করছেন সরফরাজ আহমেদ। কেনো এই দাবি, তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন অধিনায়ক।
ম্যাচের আগে সরফরাজ বলেছেন, ‘ইংল্যান্ডের মাটিতে পাকিস্তানের অতীত রেকর্ড খুব ভালো। আমাদের এখানে খেলতে খুব ভালো লাগে। কারণ, এখানে উইকেট দারুণ হয়। এই ধরণের উইকেটে আমরা খেলতে পছন্দ করি। বোলার এবং ব্যাটসম্যান, দু’জনের ক্ষেত্রেই বাড়তি সুবিধে রয়েছে।’

পাশাপাশি, ইংল্যান্ডে সমর্থনকেও একটা ইতিবাচক দিক হিসেবে ধরছেন সরফরাজ। বলেন, ‘এখানে আমাদের প্রচুর সমর্থক। দেশের মতোই মনে হয়। যেটা মাঠে বাড়তি প্রেরণা দেয়।’

প্রথম ম্যাচেই অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে পাকিস্তানকে। কারণ, প্রতিপক্ষের নামটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যারা গত মঙ্গলবার অনুশীলন ম্যাচে চমক দিয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪২১ রান তুলেছিলেন গেইলরা। যা দেখে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে, বিশ্বকাপে কোনো দল যদি ৫০০ রান করে ফেলতে পারে, সেটা হবে উইন্ডিজই।

কিউইদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা শাই হোপ সেটা অস্বীকারও করেননি, ‘আমরা ৫০০ রানের লক্ষ্য পূরণে চেষ্টা করব। প্রথম পাঁচশো রানের কৃতিত্ব যদি আমরা করে ফেলতে পারি, তাহলে সেটা দারুণ গর্বের ব্যাপার হবে।’

হোপের সতীর্থ কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের গলাতেও একই সুর, ‘যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন যে, আমরা পারব কি না, তাহলে বলব, হ্যাঁ আমরাই পারব। কারণ, আমাদের দলে ১০নম্বর পর্যন্ত ব্যাটসম্যান রয়েছে।’

পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি অবশ্য নিজের দেশকে নিয়েই বাজি ধরছেন। তার সাফ কথা, ‘ওয়ানডেতে যেকোনো সময়, যেকোনো দল, যে কাউকে হারিয়ে দিতে পারে। আমাদের দলও সেভাবেই অনেক অঙ্ক বদলে দিতে পারে। নিজেদের দিনে আমরা যেকোনো দলকে হারিয়ে দিতে পারি।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুবিধে হল, তাদের দলে অলরাউন্ডার ভরপুর। ফলে বল বা ব্যাট হাতে, যেকেউ ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারেন। ক্যারিবিয়ানদের দাপট সদ্য দেখেছে আইপিএল। কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আন্দ্রে রাসেল অবিশ্বাস্য সব ম্যাচ জিতিয়ে দিয়েছিলেন।

মঙ্গলবার রাতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও মাত্র ২৫ বলে ৫৪ রান করে নটআউট ছিলেন রাসেল। যেন কেকেআরের হয়ে আইপিএলে যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই শুরু করেছেন বিশ্বকাপে। সঙ্গে আবার রয়েছেন ক্রিস গেইল। এই দু’জন যদি সেরা ফর্মে থাকেন, তাহলে পাকিস্তান বোলারদের কপালে দুঃখ থাকতেই পারে! আর এখানেই চ্যালেঞ্জ মোহাম্মদ আমির-ওয়াহাব রিয়াজ-হাসান আলিদের।

বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে পাকিস্তান। তাদের ব্যাটসম্যানরা সাড়ে তিনশো রান করেছিলেন, এটাও মাথায় রাখতে হবে। তবে পাকিস্তানিদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা দুই বছর আগের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। যেখানে নাটকীয়ভাবে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা।

সেই স্মৃতির কথা উল্লেখ করে পাকিস্তান অধিনায়ক বলছেন, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয় থেকে অনুপ্রেরণা নেবো। কারণ, সেখানেও আমরা হার দিয়ে শুরুর পর শেষ পর্যন্ত ট্রফি জিতেছিলাম।’

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর আগে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছিল পাকিস্তান। গ্রুপপর্বে ভারতের কাছে উড়ে গিয়েছিল ১২৪ রানে। তবে সাউথ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও সেমিতে ইংল্যান্ডকে হারানোর পর ফাইনালে ভারতে ১৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারায় সরফরাজ আহমেদের দল।

সরফরাজ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে অনুপ্রেরণা নেয়ার পাশাপাশি প্রথম ম্যাচে পাচ্ছেন সেই টুর্নামেন্টের ফাইনালে তার তুরুপের তাস মোহাম্মদ আমিরকে। ফিটনেস সমস্যার কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে বাঁহাতি এ পেসারের খেলা ঘিরে শঙ্কা জেগেছিল। সেটি কেটে গেছে। আমিরের ফিট থাকার সুসংবাদটা সরফরাজই জানিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমকে।

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে বিশ্বকাপ ময়দানের মুখোমুখি লড়াইতে এগিয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১০বারের সাক্ষাতে ক্যাবিরীয়দের বিপক্ষে মাত্র তিনটি ম্যাচ জিততে পেরেছে পাকিস্তান। ২০১৫ বিশ্বকাপেও ক্রাইস্টচার্চে হোল্ডার বাহিনীর কাছে ১৫০ রানে হারে তারা।

শুধু এই পরিসংখ্যানই নয়, সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সেও এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাকিস্তান যেখানে সবশেষ টানা ১১টি ম্যাচ হেরেছে, সেখানে ক্যারিবীয়দের সংখ্যা অনেক কম। ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের কাছে টানা দুই ম্যাচ হারের আগে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের হট-ফেভারিট ইংল্যান্ডের সঙ্গে ২-২তে ওয়ানডে সিরিজ ড্র করেছে তারা। তাছাড়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাণ্ডব চালানো দুদিন আগের স্মৃতি তো টাটকাই।

 

 

 

.

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>