উৎসব সংখ্যা: যশোধরা রায়চৌধুরী’র কবিতা
আমি
আমি সেই কাকু
স্টেটসম্যানে অভিযোগপত্র লিখি রোজ
বিশুদ্ধ ইংরেজিতে ক্ষোভ জ্ঞাপনের
মধ্যে এক উদারহৃদয়
প্রতিবাদী মন আছে, তাকে চাঙ্গা রাখি
ক্লাবঘরে সন্ধ্যাকালে তাসপার্টি, বিতর্ক সভায়
প্রতিদিন বুদ্ধিটাকে ধার দিয়ে করি সূক্ষ্মতম।
আমি সেই বীর ভ্রাতা হই।
আগুন, তা আমার ততটা নেই,
যত আছে ব্যঙ্গবিদ্রূপ দিয়ে চোবানো হৃদয়।
আমি সেই পাড়ার মাসিও।
আমার এই ক্ষুরধার জিভ
জলের লাইন রাখা দিদিদের মত খরশান
ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে, টুঁটি কামড়ানোর আগে চোখ ধকধক।
কিম্বা আমি পাড়ার বাচ্চাদের বাড়ি থেকে ডেকে ডেকে নিয়ে
“বসে আঁকো” করানোর দাদা।
খুব হেঁকোডেকো। সাদা পাঞ্জাবিতে একটু ঝোল দাগ,
চায়ের দোকান তবু ওঠেবসে আমার বিশিষ্ট মতামতে।
আমি সেই একটু আধটু ভাল চাওয়া মস্তান এখন।
ছুরি চমকানোর মত নিজের সমস্ত শ্লেষ
শেষ ডায়ালগে
পাবলিককে চমকে দিতে চায়।
আমার এই বেঁচে থাকা অশান্তিপ্রবণ।
কত অসহায় ছিল এতদিন , জানো!
আমার এই বেঁচে থাকা আত্মহত্যাকারীর মতন
ঘরভর্তি কেরোসিন জেরিক্যানে জমাচ্ছে এখন।
আমি এক মোমবাতি আজ।
বাকি যত শান্তিকামী গৃহবন্দী যুক্তিবাদী ছাপোষা মানুষ
এই অশান্তির শিখা তোমাদের জন্যেই পুষেছি।
একদিন সবাইকে নাড়াবে
আমার এই অসন্তোষ , আর সেইদিন
এক কোটি মোমবাতি হয়ে উঠবে জোরালো আগুন।
বিস্ফোরণ হবে।
কবি,কথাসাহিত্যিক