গণিত সংখ্যা: রহস্য কাহিনি, না লজিক-পাজল । সুজন দাশগুপ্ত
সকালে একেনবাবু, প্রমথ আর আমি ব্রেকফাস্ট করছি, প্রমথ বলে বসল, “বুঝলেন একেনবাবু, আপনার তদন্তগুলো বড্ড ঝিমেল-মার্কা।”
“সেটা কী স্যার?”
“কোনও মারামারি নেই, গোলাগুলি নেই, ‘ডেয়ারিং ডু’ নেই – রহস্য সমাধানে এক্সাইটমেন্ট না থাকলে কি গোয়েন্দা-কাহিনি হয়? কোথায় দীপক চ্যাটার্জি বা দস্যুমোহন, আর কোথায় আপনি! একবার কল্পনা করুন তো, দীপক চ্যাটার্জীর সেই দুই হাতে দুটো পিস্তল আর এক হাতে টর্চ নিয়ে পাইপ বেয়ে ওঠা, আর বদমাশ পাকড়াতে মোহনের সাবমেরিন নিয়ে পুকুরে নামা? আপনার হাতে তো একটা রিভলভারও দেখিনি! চালাতে পারেন রিভলভার?”
একেনবাবু আমার দিকে তাকিয়ে করুণ মুখে বললেন, “প্রমথবাবু না স্যার, সত্যি!”
“কেন লাগছিস একেনবাবুর পিছনে?” আমি ধমকালাম। “উনি ওসব করতে যাবেন কেন? ওঁর হাতিয়ার হল লজিক, তাতে গোলা-বারুদ লাগে না। আর দস্যুমোহন নিয়ে যে-সব কথা বললি, সেগুলো কতটা সত্যি সে নিয়ে সন্দেহ আছে।”
“তুই চুপ কর, তুই-ই তো লিখিস একেনবাবুর ঝিমাইয়া গল্পগুলো।”
ঝিমাইয়া! প্রমথ যে বাঙাল সেটা ওর কথায় মাঝে মাঝে ধরা পড়ে।
এইসব আগড়ম-বাগড়মের মধ্যেই একেনবাবুর মোবাইলে টিং করে মেসেজ নোটিস। লম্বা মেসেজ। টেবিল থেকে মোবাইলটা তুলে পড়তে পড়তে বললেন, “ক্যাপ্টেন স্টুয়ার্টের মেসেজ স্যার … ইন্টারেস্টিং … ভেরি ভেরি ইন্টারেস্টিং!”
“ইন্টারেস্টিং কিনা পরে বিচার হবে, আগে তো শুনি!” খোঁচা না দিয়ে প্রমথ কিছু বলতে পারে না।
“হ্যাঁ, হ্যাঁ, দেখুন না স্যার”, বলেএকেনবাবুমোবাইলটা আমাদের দিকে এগিয়ে দিলেন।
মেসেজের মোদ্দা কথা, ‘হেল্প’। ‘জ্যাকসন হাইটস মার্ডার’-এ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে তিনটি অতি-সংক্ষিপ্ত বিবৃতি মিলেছে। ক্যাপ্টেন স্টুয়ার্ট জানতে চান সেখান থেকে অপরাধীকে ধরতে পারা যাবে কিনা।
তার আগে একটু ব্যাকগ্রাউন্ড দিই। টিভি-র লোকাল নিউজে জ্যাকসন হাইটস মার্ডার নিয়ে বেশ হৈ চৈ চলছে। জ্যাকসন হাইটস হল কুইন্স এলাকার একটা ঘিঞ্জি অঞ্চল। সেখানে নাইন্টি সেকেন্ড স্ট্রিটে বেশ কয়েকটা পুরোনো অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং রয়েছে। ক-দিন আগে তারই একটাতে – কেয়ারটেকার মামু্দ হোসেনকে চেয়ারে বেঁধে কেউ গুলি চালিয়েছে! ওই বিল্ডিং-এর বাসিন্দারা মূলত বাংলাদেশি, তবে বেশ কিছু ইন্ডিয়ানও থাকে। তদন্তে একেনবাবুর কোনও ভূমিকা নেই, ওটার দায়িত্ব ক্যাপ্টেন স্টুয়ার্টেরই এক গোয়েন্দার। তদন্তে এটুকু বোঝা গেছে খুনি একজন হলেও, তার এক সাহায্যকারী ছিল।
এবার মেসেজ-এ ফিরে যাই। সন্দেহ-ভাজন তিনজনই বঙ্গ-সন্তান, তাদের নাম সুব্রত, তাহসান, আর বিকাশ। পদবিগুলো আর দিচ্ছি না। তবে তিনজনকে গ্রেফতার করা হলেও ক্যাপ্টেন স্টুয়ার্ট প্রায় নিশ্চিত তাদের মধ্যে একজন নির্দোষ।
মেসেজে ক্যাপ্টেন স্টুয়ার্ট তিনটি বিবৃতি পাঠিয়েছেন –
(১) সুব্রত খুনিকে সাহায্য করেনি।
(২) তাহসান খুনি নয়।
(৩) বিকাশ নির্দোষ নয়।
এরপর তিনজনকে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ক্যাপ্টেন স্টুয়ার্ট এই সিদ্ধান্তে এসেছেন –
(ক) বিবৃতিকারীদের কেউই নিজের সম্পর্কে কোনও তথ্য দেয়নি।
(খ) একমাত্র নির্দোষ লোকটিই সত্যি কথা বলছে, আর
(গ) আর বিবৃতিগুলো থেকে পাওয়া অন্তত একটা তথ্য এসেছে নির্দোষ ব্যক্তির কাছ থেকে।
আমি আর প্রমথ যখন মেসেজটা পড়ছি একেনবাবু দেখলাম চোখ বুজে পা নাচাচ্ছেন। প্রমথকে খোঁচা দিলাম, “কিরে একটা রিভলভার এনে দিবি নাকি একেনবাবুকে, এভাবে চেয়ারে বসে তো আর দোষী ধরা যাবে না!”
প্রমথ চটল, কিন্তু উত্তর দিল না। আরেক পট কফি করতে কিচেনে গেল। কফি তৈরি হবার আগেই একেনবাবু পা নাচানো থামিয়ে বলে উঠলেন, “বুঝলেন স্যার, সুব্রতবাবু হচ্ছেন খুনি, আর তাহসান তাঁর সহকারী।”
“কী করে বুঝলেন?”
[নীচে একেনবাবু কী করে সেটা বার করলেন লিখছি। কিন্তু যাঁদের লজিক পাজল-এ মাথা ঝিমঝিম করে, যেমন আমার – তাঁদের বলব এখান থেকে সরাসরি যেখানে * দিয়েছি সেখানে চলে যেতে]
“দেখুন স্যার, প্রথম তিনটে তথ্যে তিনটে নাম রয়েছে, তারমানে সবকটি তথ্য শুধু নির্দোষ ব্যক্তির কাছ থেকে আসেনি।”
“সেটা কী করে বুঝলেন?”
“কারণ স্যার, (ক)টা পড়ে দেখুন – বিবৃতিকারীদের কেউই নিজের সম্পর্কে কোনও তথ্য দেয়নি।”
“বেশ।”
“এবার চিন্তা করি স্যার, একটি মাত্র তথ্য নির্দোষ ব্যক্তির বিবৃতি থেকে পাওয়া গেছে। সেক্ষেত্রে তিনটি তথ্যের মধ্যে দুটি হতে হবে মিথ্যা, কারণ, একমাত্র নির্দোষ লোকটিই সত্যি কথা বলছে (খ)।”
“ঠিক।”
“এবার আপনিই বিচার করুন স্যার, সেটা কি সম্ভব?”
“দাঁড়ান, দাঁড়ান। প্রথমে ধরি (৩) সত্যি। তার মানে বিকাশ দোষী। এখন (৩) সত্যি হলে (১) আর (২)-কে মিথ্যে হতে হবে। (১) আর (২) মিথ্যা হওয়া মানে, মানে সুব্রত খুনিকে সাহায্য করেছে, আর তাহসান খুনি। সেক্ষেত্রে বিকাশ দোষী হয় কী করে?”
“একদম ঠিক স্যার।”
“এখন যদি ধরি (২) সত্যি, অর্থাৎ তাহসান খুনি নয়। সেক্ষেত্রে (১) আর (৩) মিথ্যে। যার মানে, সুব্রত খুনিকে সাহায্য করেছে, কিন্তু বিকাশ নির্দোষ। তাহলে খুনি কে? অর্থাৎ, সেটাও সম্ভব নয়।”
“দারুণ স্যার!”
“এবার ধরি, (১) সত্যি, অর্থাৎ সুব্রত খুনিকে সাহায্য করেনি। এখন (২) আর (৩)-কে মিথ্যে হতে হবে। তাহলে তাহসান খুনি, আর বিকাশ নির্দোষ। তাহলে তাহসানকে সাহায্য করল কে? এখানেও সমস্যা।”
“চমৎকার স্যার। এখন বিচার করুন, যদি দুটো তথ্য নির্দোষ লোকটির কাছ থেকে পাওয়া যেত, তাহলে কী হত? একটু হিন্ট দিই, কিন্তু তার আগে বলুন, যদি (২) আর (৩) সত্যি হয়, তাহলে সেটি পাওয়া গিয়েছিল কার বিবৃতি থেকে?”
“নিশ্চয় সুব্রত-র কাছ থেকে।”
“কেন স্যার?”
“কারণ কেউই নিজের সম্পর্কে কিছু বলেনি, আর ও দুটোতে তাহসান আর বিকাশের নাম রয়েছে।”
“এক্সেলেন্ট। (২) আর (৩) সত্যি হওয়া মানে তাহসান খুনি নয়, বিকাশ দোষী। কিন্তু (১) মিথ্যে হওয়া মানে সুব্রতবাবু খুনিকে সাহায্য করেছিলেন। তারমানে তিনি নির্দোষ হতে পারেন না, সুতরাং তাঁর বিবৃতি কখনোই সত্যি হতে পারে না! বুঝতে পারলেন স্যার কন্ট্রাডিকশনটা?”
“জলবৎ তরলম! এখন আমি অন্য দুটো সম্ভাবনা বিচার করি। প্রথমে ধরি (২) মিথ্যে, (১) আর (৩) সত্যি। (১) আর (৩) নিশ্চয় এসেছে তাহসানের বিবৃতি থেকে। কিন্তু (২) মিথ্যে হলে তাহসানের নির্দোষ হওয়া সম্ভব নয়।”
“ঠিক বলেছেন স্যার।”
“এবার তৃতীয় আর শেষ সম্ভাবনা – (৩) মিথ্যে, (১) আর (২) সত্যি। (৩) মিথ্যে মানে বিকাশ নির্দোষ, (১) আর (২) এসেছে বিকাশের কাছ থেকে। অর্থাৎ, সুব্রত খুনি, আর তাকে সাহায্য করেছে তাহসান। কোথাও কোনও খটকা নেই।”
*
যাইহোক, একেনবাবুর কৃতিত্বে দোষী দুজন ধরা পড়ল, এবং তারা অপরাধও স্বীকার করল। মামলায় সবকিছু বিচার করে জজসাহেবও ওদের দোষী সাব্যস্ত করলেন। অপরাধীদের সাজা দেবার দিন একেনবাবুর সঙ্গে আদালতে গিয়েছিলাম। বিচারক বেশ কড়া। খুনে সাহায্য করার অপরাধে তাহসানকে দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিলেন। তারপর সুব্রতকে বললেন, “তোমার অপরাধের জন্য ফাঁসির হুকুম দিচ্ছি। আমার নির্দেশ অনুযায়ী আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যে কোনও একদিন দুপুর বারোটার সময় এই দণ্ড পালন করা হবে। কিন্তু ঠিক কোনদিন, সেটা তুমি আগের থেকে জানতে পারবে না।”
সুব্রততো রায় শুনে ভেঙ্গে পড়ল! ওর দুঁদে উকিল প্রশ্ন তুললেন, “কিন্তু হুজুর, আমার মক্কেল যদি আগে থেকে ফাঁসির দিনটা জেনে যান?”
“কী করে জানবে? আমি দিনটা তো বলছি না!” বিরক্ত হয়ে বিচারক বললেন।
“তবু হুজুর, যদি জেনে যান তাহলেও কি ফাঁসি হবে?”
“বললাম তো জানবে না!” বিচারক এবার বেশ চটেই বললেন।
উকিল কিন্তু নাছোড়, “উত্তরটা তো দিলেন না হুজুর?”
“বেশ, আগে থেকে দিনটা জানতে পারলে ফাঁসি হবে না। এবার শান্তি?” বলে জজসাহেব যখন চেয়ার ছেড়ে উঠতে যাচ্ছেন, উকিল বলে উঠলেন, “ধর্মাবতার, আমি আপনার এই রায়ে খুব খুশি। আপনার এই আদেশ অক্ষরে অক্ষরে মানলে আমার মক্কেলের ফাঁসি হওয়া অসম্ভব!”
“তার মানে?” জজসাহেব তো হতভম্ব!
“বুঝিয়ে বলছি, হুজুর। আপনি বলেছেন আগামী সপ্তাহে, মানে সোম থেকে রবিবারের মধ্যে যে-কোনও একদিন দুপুর বারোটার সময় আমার মক্কেলের ফাঁসি হবে – তাই তো ধর্মাবতার?”
“হ্যাঁ, বলেছি।”
“আপনি আরও বলেছেন, ফাঁসি ঠিক কোনদিন হবে, আমার মক্কেল সেটা আগে থেকে জানতে পারবেন না, ঠিক কিনা?”
“তাও বলেছি।”
“একদম শেষে বলেছেন, যদি দিনটা আমার মক্কেল আগে থেকে জানতে পারেন, তাহলে ফাঁসি হবে না – ঠিক বললাম?”
“ঠিক।
“ব্যাস, তাহলে রবিবার কখনোই ফাঁসি হতে পারে না।”
“কেন?”
“কারণ সেক্ষেত্রে শনিবার দুপুরের পরেই আমার মক্কেল বুঝতে পেরে যাবেন, সপ্তাহে বাকি রয়েছে শুধু রবিবার, সুতরাং ওইদিন দুপুরে ওঁর ফাঁসি হবে। আপনার হুকুম অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হলে, রবিবারটা বাদ দিতে হবে।”
“আচ্ছা, আচ্ছা ঠিক আছে, রবিবারটা না হয় বাদই দেওয়া যাক।”
“বেশ, তাহলে সোম থেকে শনি, এর মধ্যেই ফাঁসি হবে, তাই তো? কিন্তু তাহলেও তো একটা সমস্যা।”
“কিরকম?”
“শনিবারে কি ফাঁসি হওয়া সম্ভব? কারণ শুক্রবার রাত্রেই আমার মক্কেল জেনে যাবেন যেহেতু রবিবারে ফাঁসি হলে আপনার রায় অমান্য করা হচ্ছে – তাই ওই দিনটা বাদ, সুতরাং শনিবারেই ফাঁসি হবে। এর অর্থ দাঁড়াল, শনিবারে ফাঁসি হলেও আপনার রায় পালন করা হবে না। শনিবারকেও তাই বাদ দিতে হয়।”
“তাই তো!” জজসাহেব চিন্তিত হয়ে মাথা চুলকোতে শুরু করলেন।
এইভাবে একটার পর একটা দিন বাদ দিয়ে উকিল প্রমাণ করে দিল, জজসাহেবের রায় মানলে সুব্রতকে কোনোদিনই ফাঁসি দেওয়া যাবে না!
সঙ্গে সঙ্গে কোর্টে দারুণ হৈ-হট্টগোল শুরু হল। তাহসানের উকিল বলল, “খুনি ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে, তাহলে আমার মক্কেল খুনিকে সাহায্য করার জন্য কেন সাজা পাবে?”
আমিও একেনবাবুকে বললাম, “এটা কী হল একেনবাবু, জজসাহবের ভুল রায়ে একটা লোক খুন করে পার পেয়ে গেল!”
একেনবাবু বললেন, “কী যে বলেন স্যার, সেটা কখনো হতে পারে? উকিলবাবুর লজিকে তো অনেক গোলমাল আছে! জজ সাহেবকে একটু ভাবতে দিন, আর আপনার পাঠকদেরও এ নিয়ে একটু ভাবতে বলুন।”
সংযোজনঃ
শেষের সমস্যাটা ‘আনএক্সপেক্টেড হ্যাঙ্গিং” হিসেবে রিক্রিয়েশানাল ম্যাথম্যাটিক্স জগতের একটি সুপরিচিত প্যারাডক্স। মার্টিন গার্ডনার তেষট্টি সালে ‘সায়েন্টিফিক আমেরিকান’ ম্যাগাজিন-এ এটির উল্লেখ করেন। তারপর বেশ কয়েকটি বইয়ে এ নিয়ে আলোচনা আছে। আমি নিজেও চুরাশি সালে আমার একটি বই, ‘ভীমের বিভ্রান্তি ও অন্যান্য জটিল সমস্যা’-তে এ-নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছিলাম। একেনবাবুর কাহিনি লেখা শুরু করার আগে লজিক পাজল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতাম, তাই একেনবাবুর গল্পে মাঝে মাঝে লজিক পাজল এসে পড়ে। সত্যিকথা বলতে কী, এই লেখাটা রহস্য গল্প না লজিক পাজল, সে নিয়েই আমি ধন্দে আছি।
গোয়েন্দা একেনবাবুর মানসপিতা সুজন দাশগুপ্ত মার্কিন মুলুকে পিএইচ ডি করতে গিয়েছিলেন পাঁচ দশকেরও আগে। সেই থেকে আমেরিকা প্রবাসী। কর্মজীবনের অনেকটা সময় কেটেছে বেল ল্যাবোটরিজ-এ। কর্মজীবনের ফাঁকে ফাঁকে লেখার শুরু। গোয়েন্দাকাহিনি ছাড়াও গল্প, ছড়া, রম্যরচনা ও লজিক পাজল নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লিখেছেন। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা গোটা পঁচিশেক। বইগুলির প্রকাশক আনন্দ পাবলিশার্স, এ মুখার্জী, দাশগুপ্ত এন্ড কোং, সৃষ্টিসুখ ও দ্য কাফে টেবল।