আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
-এ ছিপলী ,ছিপলী…
কড়াটা জোরে জোরে নাড়তে লাগলো রামিয়া
-এ ছোকড়ী তো মরদ লিয়ে চুদদে লেগেছে দিনমানে।দুসরী সাঙ্গা হামরী ইহা ওর কোই তো করে লাই।এক শালী তুহী করিয়েছিস…
এ রেন্ডী ,ঔর গালী বকবি তো দেবো রুলের গুঁতো ..ঘোষ দেখোতো ,কেস টা।
ইনস্পেকটর দস্তিদার গটগটিয়ে গিয়ে জীপে একটা পা তুলে ঠেস দিয়ে দাঁড়ালেন ।ভ্রুটা বিরক্তিতে কুঁচকে ।
আজ শালার জন্মদিন ।ঠিক টাইমে না পৌঁছালে সোমা খচে ব্যোম হবে ।ঐ একটা হাবা ছেলেকে নিয়ে শ্বশুর শাশুড়ির আদিখ্যেতা দেখলে অসহ্য লাগে দস্তিদারের ।সোমাটাও হয়েছে তেমনি !ভাইটু বলতে অজ্ঞান!
স্যার ,এই যে মালটাকে এনেছি।সানগ্লাসটা খুলে কটমট করে ঘোষের দিকে তাকালেন দস্তিদার।
না ,মানে ঐ ছিপলি …
দস্তিদার চাইলেন, দোহারা গড়ন শ্যামলা একটি মেয়ে ।চুলগুলো আঁট করে বাঁধা।মেরুন কালো নাইটির ওপরে একটা সবুজ গামছা ফেলা বুকে।পুলিশ দেখে খুব যে ভয় পেয়েছে মনে হোলো না।
-বলেন ,কি বলবেন?
-তুই বিপুল দাস কে চিনিস?
চুপ করে নখ খুঁটতে থাকে মেয়েটি।
-কি হলো? ধমকে ওঠেন দস্তিদার।
-আমার বর ছিলো।এখন থাকিনা ওর সাতে।
-এখন কোথায় থাকে?
-জানিনা স্যার।
-কার সাথে শুয়েছিলিস এই দুপুর বেলা?
-শুই নাই।হামার আদমী ঘরকে।খানা বানাচ্চিলাম স্যার।ঐ হারামী মাসী যা খুশী বলে, বুড্ডী খুসট।
-বর কে তাড়িয়েছিলিস কেনো?
-ও শালা একটা হাবা ছিলো।কোনো কাম করতে পারে না,মাল খাবে আর পিটবে।
-দ্যাখতো,একে চিনিস কিনা?
ছবি দেখে চমকে উঠলো ছিপলী।মুখে কিছু বললো না।শুধু মাথাটা নাড়লো।
-ঠিক করে দ্যাখ ? চিনিস না তুই ?
-দৃঢ় কন্ঠে ছিপলী জানালো,না। ও আমার কেউ লাগে না।
হতাশ দস্তিদার মোবাইলটা পকেটে পুড়ে লাফ দিয়ে জীপে উঠলো।পাড়ার চায়ের দোকানের সামনে একটা জটলা।পুলিশকে গাড়ি থেকে নামতে দেখে একটু করে ভীড়টা পাতলা হয়ে গেলো। দোকানীকে ছবিটা দেখাল ঘোষ।
ভ্রু কুঁচকে চেয়ে থেকে মাঝবয়সী লোকটা বললো,মনে তো হচ্ছে ওপাড়ার দাসবাড়ির বিপুল! কি কেস স্যার? মাডার? আমি কিছু জানিনা।গরীব আদমী আছি স্যার।
থাম ,হারামজাদা !যা বলছি সাফ জবাব দে।
কাচুমাচু হয়ে চাওয়ালা বলে চললো-
বিপুল ইট্টু হাবলা টাইপের ছিলো। হাবা ছেলেটাকে সৎমা জোর করে ঐ দেহাতী মেয়েটার সাথে বদনাম দিয়ে তাড়ালো বাড়ি থেকে।ওদের বাড়ি বাসন মাজতো কিনা!
ছিপলী কদিন ঘর করলো ,ও নিজেই ঝিগিরি করে সংসার চালাতো। হাবাটা সারাদিন শুয়ে বসে থেকে শেষে খপ্পরে পড়লো মোদো পাটির।ব্যস ,মদ খেয়ে যেই গায়ে হাত তুলেছে দিয়েছে মেয়েছেলেটা ঘর থেকে তাড়িয়ে।তারপর এ পাড়ায় দিনে আর দেকিনি, মানে মাজেসাজে রাতে এসে হল্লা কত্তো।
পুরনো বৌ তো।ঐ মাগী তো আবার একটা দেহাতীর সাতে বে করেছে।
এগুলোর কোনো ক্যারেকটার নাই স্যার।
বাস ,থাম।আর বকিস না,ঘোষ উঠে এসো।পেটি কেস! বডিটা মর্গে বেওয়ারিশ করে দাও।
জীপটা ধুলো উড়িয়ে চলে গেলো।
টিনের খুপড়ির ছোট্ট জানলার ফাঁক দিয়ে ছিপলী তখনো তীক্ষ্ণ চোখে পথের দিকে তাকিয়ে…
পরশু রাতে হাবাটাকে পাউরুটিতে সেঁকোটা ভালোই দিয়েছিলো সে।ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো।
১৯৭৭ সনের ২৪শে অক্টোবর উত্তর ২৪পরগনার কৃষ্টিশহর হালিশহরে জন্ম ।মাধ্যমিক পরীক্ষায় জাতীয় বৃত্তি প্রাপ্ত মেধাবী মেয়েটি বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা শুরু করলেও সাহিত্যের প্রতি নিবিড় আকর্ষনে হুগলী মহসীন কলেজ থেকে ইংরাজী সাহিত্যে স্নাতক ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরাজী ভাষা ও সাহিত্যে প্রথম শ্রেণীতে স্নাতকোত্তর হন ।পেশা হিসাবে শিক্ষকতাকে বেছে নিলেও সাহিত্য চর্চায় ব্রতী নিরন্তর । কলম স্বচ্ছন্দ গদ্য ও কবিতা উভয়েই ।প্রকাশিত গ্রন্থ কবিতার ক্যানভাস , নিঃসঙ্গ অন্তরীপ প্রভৃতি ।কবিতা ও গল্প নিয়মিত প্রকাশিত হয় দিবারাত্রির কাব্য ,শ্রমণা ,রোদ রং ,রা প্রকাশনী, টার্মিনাস কবিতার জন্য ইত্যাদি লিটল ম্যাগাজিন ও বিভিন্ন অনলাইন সাহিত্য পত্রিকায় ।