| 28 মার্চ 2024
Categories
জীবন যাপন

সরস্বতী পুজো নয়ের দশক আর এক ‘অবাস্তব’ পৃথিবী

আনুমানিক পঠনকাল: < 1 মিনিট

স্মার্টফোন তো দূর, মোবাইল ফোনের ধারণাই তৈরি হয়নি তখন। নয়ের দশকে বাঙালির মনজুড়ে মেট্রো চ্যানেল, সুপারহিট মুকাবলা, শচীন তেন্ডুলকার, জীবনমুখী গান। ভ্যালেন্টাইন্স ডে নিয়ে আজকের সময়ের মাতামাতি ছিল না তখন। বরং সরস্বতী পুজোর দিন হলুদ শাড়িদের সঙ্গে লাজুক প্রেম করত হলুদ পাঞ্জাবিরা। সরস্বতী পুজোর কথা যদি ওঠে তবে কুল খাওয়ার প্রসঙ্গ আসবেই। 

পুজোর আগে কুল খেলে সরস্বতী ঠাকুর পাপ দেন, এমন বিশ্বাস ছিল প্রায় আমাদের সবার। গোঁদের ওপর বিষফোঁড়া, সরস্বতী পুজোর পরেই শুরু হত বার্ষিক পরীক্ষা। পুজোর আগে কুল খাওয়া নিয়ে তাই অতি সতর্ক থাকতে হত। স্কুল থেকে ফেরার পথে লাল লাল টোপা কুল আর বিট নুন নিয়ে বসে থাকা বিক্রেতারা যেন আমাদের সংযমের পরীক্ষা নিত। যারা এসব মানত না, তাদের ‘খারাপ ছেলে’ ভাবতাম। 

কিন্তু কী করে তৈরি হল এই মিথ? পুরাণ এবং শাস্ত্রে কি এ নিয়ে কিছু নির্দেশ রয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর বড় হয়ে পেয়েছি আমরা। 

পুরাণে বলে, দেবী সরস্বতীকে তুষ্ট করতে বদ্রিকাশ্রমে তপস্যা করার সিদ্ধান্ত নেন মহামুনি ব্যাসদেব। কিন্তু তপস্যা শুরুর আগেই দেবী একটি শর্ত দেন। একটি কুল বীজ রেখে তিনি বলেন, এই বীজ থেকে গাছ হয়ে কুল হবে। সেই কুল যেদিন ব্যাসদেবের মাথায় পড়বে সেদিন তিনি সন্তুষ্ট হবেন এবং মহামুনির তপস্যা সম্পূর্ণ হবে। শর্ত মেনে তপস্যা শুরু করেন ব্যাসদেব।

সেই বীজ থেকে গাছ হল, গাছে কুল ধরল এবং কুল পেকে তা ব্যাসদেবের মাথায়ও পড়ল। সেই দিনটা ছিল পঞ্চমী। সরস্বতীর অর্চনায় মহামুনি কুল ফল নিবেদন করেন মহামুনি। লোকায়ত বিশ্বাস, সেই থেকেই বিদ্যার দেবীর প্রসাদ হিসেবেই মরসুমের প্রথম কুল খাই আমরা। স্মার্টফোনের যুগে অবশ্য পড়ুয়াদের কুল খাওয়া, ঠাকুরের পাপ দেওয়া, কোনওটা নিয়েই মাথাব্যথা নেই। এই সময়ে দাঁড়িয়ে নয়ের দশকের সময়টা যেন অবাস্তবই লাগে। সরস্বতী পুজোর দিনটা এগিয়ে আসলেই মনে হয়, বিজ্ঞান আর একটা আবিষ্কার করুক— টাইম মেশিন। 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত