ফুল, অশ্রু, প্রেম-৩১ নারীর কবিতা (পর্ব-১১) । মুম রহমান
ভিক্টোরিয়ার ওকাম্পোকে আমরা কম-বেশি চিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কল্যাণে। আর্জেন্টিনার ‘স্যুর’ সাহিত্য পত্রিকার প্রকাশক ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর ছোট বোন সিলিভিনা ওকাম্পো (১৯০৩-১৯৯৩) মূলত প্যারিসে চিত্রকলা চর্চা করেছেন। তাঁর লেখালেখির শুরু ছোটগল্প দিয়ে। তারপরই তাঁর তিনটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়। সিলভিনা’র স্বামী এডলফ বিঁয় কাসারেসও আর্জেন্টিনার বিখ্যাত লেখক। বন্ধু বোহের্স, স্বামী কসারেস ও সিলভিনা একত্রে আর্জেন্টিনার ‘ফ্যান্টাসটিক লিটারেচার’ নামে একটি অসাধারণ গ্রন্থ সম্পাদনা করেন, যা আজ যাদুবাস্তব সাহিত্য মতবাদ চর্চার ক্ষেত্রে বিশ্বখ্যাত।
তোমার নাম
কেউই তোমার নাম উচ্চারণ করতে পারে না।
আমি একাই জানি যথার্থ ধ্বণিরূপ।
তাদের অভাব আছে তোমার নামের বহমান লালিত্য
আর ব্যঞ্জন বর্ণের মিষ্টতা ধরতে পারার বোধের।
তারা জানে না কিভাবে আলাদা করতে হয় রঙ
একদম খাঁটির সুরের স্বরলিপিটির।
সে কারণেই প্রতিদিন আমি সাড়া দেই
একটি করে নাম আবিষ্কারের মাধ্যমে:
নীল, পাখি, হাওয়া, আলো।
চেনা শব্দগুলি
খুব সরল করেই বলা যায়
এমনকি তোমাকে না জেনেই, না ভালোবেসেই।
আরো পড়ুন: ফুল, অশ্রু, প্রেম-৩১ নারীর কবিতা (পর্ব-৯)
একটি সৌরভের সমাধিলিপি
গতকাল যখন শিশির নেমে এসেছিলো,
ভবিষ্যতের পাঁপড়ি আর পরাগ কেশরের মাঝে
আমি নিহত হলাম একটা বাগানে যে প্রদর্শন করছিলো
গাছের আকৃতির ছায়া আর জল।
দুটো ফিতা আমাকে আটকে রেখেছিলো, তারা হলো :
আমার পাঁপড়ি যা তাদের সহ্যের চেয়ে বড়,
ম্লান, মৃত্যুর ফিতার মতো।
ফুলেদের মধ্যেও সেই একই নিহীত সখ্য,
তেমনি হাত আর যত্ন,
সেই ঋতু আর সন্ধ্যার শোণিত
সক্ষম হবে না যথাযথ পুনরাবৃত্তি করতে
আমার সৌরভের গভীর গহ্বর:
অমরত্ব রবে আমার স্মৃতিতে
সুগন্ধির জটিল পথ;
অসীম সে, ক‚টিল
পুনরাবির্ভাব প্রতি মুহূর্তের।
আর যদিও দিনেরা হয়তো তাদের ফিরিয়ে আনতে চাইবে,
আর যদিও বহু পরিস্থিতি আবার একত্রিত হবে-
বাক্য আর মানুষের পুনারাবৃত্তি,
সেই একই প্রণতি একটি মস্তকের-
সেই মানুষটিরও আর কোন অস্তিত্ব বিরাজমান নেই
যার জন্য আমি ছিলাম গোপনীয় নির্ধারিত নিয়তি।

জন্ম ২৭ মার্চ, ময়মনসিংহ। এমফিল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। পেশা লেখালেখি।